১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
বিশ্বকবির মৃত্যুবার্ষিকী আজ

রবির কিরণের মতো আজও উজ্জ্বল রবীন্দ্রনাথ

রবির কিরণের মতো আজও উজ্জ্বল রবীন্দ্রনাথ - ছবি : সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। মৃত্যু সম্পর্কে ১৩৪৩ সালে প্রবাসী পত্রিকায় নিজের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবি লিখেছিলেন,‘খ্যাতির কলরবমুখর প্রাঙ্গণে আমার জন্মদিনের যে আসন পাতা রয়েছে সেখানে স্থান নিতে আমার মন যায় না। আজ আমার প্রয়োজন স্তব্ধতায় শান্তিতে।’ তারপর একদিন কবি মৃত্যুপথযাত্রী হলেন, স্তব্ধতায় শান্তিতে। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ঘড়িতে তখন ২২ শ্রাবণের দুপুর ১২টা বেজে ১০ মিনিট। সেই থেকে বাইশে শ্রাবণ বাংলা ক্যালেন্ডারের মুখস্থ করা দিন, কবির প্রয়াণতিথি। ক্যালেন্ডারের হিসাবে দিনটি ছিল ২২ শ্রাবণ, ৭ আগস্ট।

মৃত্যুর মাত্র সাত দিন আগে পর্যন্তও কবি সৃষ্টিশীল ছিলেন। জোড়াসাঁকোয় রোগশয্যায় শুয়ে রানী চন্দকে লিখে নিতে বলেছিলেন। কবি বলে গেছেন, ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলেন কবিতাটি বলতে বলতে। দিনটা ছিল কবির শেষ বিদায়ের দিন কয়েক আগে ১৪ শ্রাবণ। রানী চন্দ সেদিন সূত্রধরের মতো লিখেও নেন ‘তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি...।’ এরপর কবি তার পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীকেও চিঠি লিখতে বলেছিলেন।

আধুনিক বাঙালির রুচির নির্মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবির কিরণের মতোই আপন প্রতিভার আলোয় বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে উদ্ভাসিত করেছিলেন। নিজ প্রতিভায় তিনি বাংলা সাহিত্যকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ আসনে। কাব্য, সংগীত, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, শিশুতোষ রচনাসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখা তার প্রতিভার স্পর্শে দীপ্তিমান হয়ে উঠেছিল। বাঙালির হৃদয়ানুভূতি ও অভিব্যক্তির সার্থক প্রকাশ ঘটেছে তার বিপুল রচনায়। তার বৈচিত্র্যময় রচনাসম্ভার মহৎ মানবিক আবেদনের মহিমায় হয়ে উঠেছে কালজয়ী। ১৯১৩ সালে প্রথম বাঙালি হিসেবে তিনি লাভ করেন নোবেল পুরস্কার।

জীবনের শেষ পর্যায়ে কবি গভীর আগ্রহে চিত্রকলা চর্চা শুরু করেন। তার এসব কাজ ভারতীয় উপমহাদেশের শিল্পকলায় ভিন্ন মাত্রা সংযোজন করেছে। সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি সমাজসংস্কার, শিক্ষাবিস্তার, কৃষি উন্নয়নসহ বিভিন্ন কর্মে নিজেকে জীবনব্যাপী সক্রিয় রেখে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তিনি। তার কর্ম, চিন্তা বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রাম ও অগ্রযাত্রায় অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে। তার গান আমাদের জাতীয় সংগীত।

মঙ্গলবার কবির মৃত্যুদিবসে জাতি গভীর শ্রদ্ধায় তাকে স্মরণ করছে। বাংলা একাডেমি আজ বিকেল চারটায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে একক বক্তৃতা দেবেন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক।


আরো সংবাদ



premium cement