২৩ আগস্ট ২০২৪, ৮ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ সফর ১৪৪৬
`

দুর্লভ শতবর্ষী বনচালতা

- ছবি - বাসস

আষাঢ়ের বিকেল। রাঙামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন মাইনী বন বিশ্রামাগারের সীমানায় অচেনা এক বৃক্ষ! দেখতে পুরোপুরি চালতার মতো। তবে চেনা চালতা ফলের বদলে এখানে ঝুলছে থোকায় থোকায় কমলা রঙের ছোট ফল। দেখতে অনেকটা ডুমুরের মতো। কিন্তু ডুমুর নয়। বেশ বয়সী বৃক্ষ। উচ্চতাও কম নয়। গোটা গাছ জুড়ে বড় বড় সবুজ পাতা। অচেনা এই ফলের নাম কী?

পাবলাখালীর চিরসবুজ বন ঘুরেও যে ফল দেখা যায় না। লোকালয়ের এই পুরনো বাংলোর সীমানা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এই বৃক্ষে তা দেখা গেল। পরিচয় জানতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবিগুলো পোস্ট করা হলো। স্থানীয় অনেকেই তাতে সাড়া দিয়ে জানালো- এর নাম অগোয্য। তবে বৃক্ষটির আসল পরিচয় নিশ্চিত করে নির্সগবিদ মোকারম হোসেন জানালেন, এটির নাম বনচালতা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বন বিভাগের আওতাধীন মাইনী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সজীব মজুমদার জানান, বনচালতা গাছটির বয়স প্রায় শত বছর। ১৯২৭ সালে মাইনীতে রেঞ্জ কর্মকর্তার এ বিশ্রামাগারটি নির্মাণ করা হয়। এর ১০ বছর আগে থেকেই বনচালতার গাছটি সেখানে ছিল। এটি কেউ রোপণ করেনি। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়েছে। সেই হিসেবে এই গাছের বয়স হবে প্রায় এক শ’ বছর। বনচালতা খুব ধীরে বড় হয়। তাই এটির আকার দেখে বয়স বুঝা যায় না।’

স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষ চাকমারা এটিকে অগোয্যা বলে ডাকে। বনচালতার ফুল মাঝেমধ্যে পাহাড়ের হাটগুলোতে বিক্রি করতে দেখা যায়। এটিকে সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। স্থানীয়রা এটিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করে বলে জানা যায়।

প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া বৃক্ষটির কাঠ বেশ মূল্যবান। স্থানীয়ভাবে এই গাছের কদর রয়েছে। বনচালতার ইংরেজি নাম ‘ডগ টিক’ বা নেপালি এলিফ্যান্ট আপেল। বন চাতলা চালতারই সমশ্রেণি। এটি মূলত মাঝারি আকারের বৃক্ষ হলেও শতবর্ষী এই বন চালতা বেশ বড়সড়। পাতা দেখতে একেবারেই চালতা গাছের মতো, খাঁজকাটা।

বন বিভাগের কর্মীরা জানান,‘ শুষ্ক মৌসুমে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। আর বর্ষার শুরু থেকেই পুরো বৃক্ষটি ফুল আর পাতায় ভরে যায়। বর্ষা জুড়ে পুরো গাছে ফল থাকে। আকার মার্বেল সাইজের। কমলা হলুদ রঙে মোড়ানো। ফলের ওপর হালকা ঢেউ থাকে। তবে বনচালতা খাওয়া যায় না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও সিলেট ও টাঙ্গাইলে দেখা যায় ফলটি।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement