২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কিশোর অপরাধীকে ব্যতিক্রমী সাজা

-

মাগুরায় একটি হামলা মামলায় ব্যতিক্রমধর্মী সাজার রায় দিয়েছেন আদালত। কিশোর আসামি ইব্রাহিম হোসেনকে দণ্ড হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের উপর সুনির্দিষ্ট দুটি পড়তে দেয়া হয়েছে। সাথে ইসলাম ও নৈতিকতার উপর আরো দুটি বই। দেখতে দেয়া হয় একটি সিনেমা। আর লাগাতে বলা হয় পাঁচটি বৃক্ষ। একই সাথে প্রতি তিন মাস অন্তর আদালতে হাজিরা দেয়ার নির্দেশ। এই শর্ত ভঙ্গ করলে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

মঙ্গলবার বিকেলে মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান চাঞ্চল্যকর এই রায়টি দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে প্রবেশন অফিসার মেহেতাজ আরা সালমার হাতে তুলে দেন।

মামলাসূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ইব্রাহিমের মা চায়না বেগমের সাথে চাচি সায়লা খাতুনের ঝগড়া হয়। এ সময় ইব্রাহিম মায়ের পক্ষ নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে চাচির উপর হামলা করে। চাচী সায়লা খাতুন মহম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ইব্রাহিম এবং তার মা চায়না বেগমকে আটক করে। ওই সময় তারা সাত দিন হাজতবাস করে জামিনে মুক্তি পায়। পারিবারিকভাবে মীমাংসা না হওয়ায় মামলাটি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়ায় এবং ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত হান্নান মোল্যার ছেলে। সে মহম্মদপুর আদর্শ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার রায়ে উল্লেখ করেছেন যে, দণ্ডকালীন তাকে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুটি বই যথাক্রমে জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি এবং রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা একাত্তরে চিঠি পড়তে হবে। একটি সিনেমা দেখতে পারবে। আর সেই সিনেমাটি অবশ্যই কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের আগুনের পরশমণি হতে হবে।
এ ছাড়াও ইসলাম ও নৈতিকতার ওপর দুটি বই পড়বে। পাশাপাশি দুটি বনজ এবং তিনটি ফলজ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে তাকে। এ ছাড়াও দণ্ডকালীন তার কোনো অসৎ সঙ্গী থাকতে পারবে না। সেবন করতে পারবে না কোনো নেশাদ্রব্য।

এ সময়টি সে মাগুরার প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকবে। নিয়মিত তিন মাস অন্তর আদালতে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করলে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement