লাল ক্যাঙ্গারু ও সাদা বাঘ আসছে চিড়িয়াখানায়

শিগগিরই ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় আসছে বেশ কিছু নতুন প্রাণী। দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাণীগুলো আনার চিন্তা করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে প্রথমবারের মতো আফ্রিকা থেকে আনা হচ্ছে দুই জোড়া লাল ক্যাঙ্গারু। সেই সাথে ভারত থেকে আনা হবে এক জোড়া সাদা বাঘ। 

চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, দর্শনার্থীদের চাহিদার ও শিশু-কিশোরদের আগ্রহের কথা বিবেচনায় রেখে সুদূর আফ্রিকা থেকে এবার সংগ্রহ করা হচ্ছে দুই জোড়া লাল ক্যাঙ্গারু। বাড়ানো হচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যাও। চলতি মাসেই আরো চারটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার শোভা বাড়াবে চিড়িয়াখানার। আসছে এক জোড়া চিতা বাঘও। এ ছাড়া আনা হচ্ছে দুই জোড়া ইম্পালা। আর দিল্লির চিড়িয়াখানার সাথে প্রাণী বিনিময়ের মাধ্যমে সাদা বাঘ ছাড়াও আনা হবে এক জোড়া গন্ডার, শিম্পাঞ্জি, এক জোড়া চিতা বাঘ আর দুই জোড়া লামা। 
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বৃহৎ প্রাণী বা তৃণভোজী শাখায় রয়েছে ১৮ প্রজাতির প্রাণী। এর মধ্যে আছে হাতি, উট, গন্ডার, জলহস্তি, জিরাফ, জেব্রা, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, ঘোড়া, ওয়াইল্ড বিস্ট, কমন ইল্যান্ড, গ্রেটার কুন্ডু, গাবা, ওয়াটার ব্যাক, গয়াল, ইম্পালা ও ক্যাঙ্গারু। 
অন্য দিকে মাংসাশী শাখায় রয়েছে ১১ প্রজাতির প্রাণী। এগুলোর মধ্যে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, আফ্রিকান সিংহ, এশিয়াটিক সিংহ, এশিয়াটিক কালো ভল্লুক, ডোরাকাটা হায়েনা, চিত্রা হায়েনা, শিয়াল, মেছো বিড়াল, বনবিড়াল প্রভৃতি। 

ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ শাখায় আছে ২৫ প্রজাতির প্রাণী। এর মধ্যে ব্রেসাস বানর, ভারভেট বানর, কুলু বানর, অলিভ বেবুন, হামাদ্রিয়াস বেবুন, সাদা হনুমান, হনুমান লেঙ্গুর, উল্লুক, সজারু, কুমির, ঘড়িয়াল, অজগর, গোখরা সাপ, দাঁড়াশ সাপ প্রভৃতি। 
পাখি শাখায় রয়েছে ৫৮ প্রজাতির পাখি। এগুলোর মধ্যে উটপাখি, ইমু পাখি, কেশোয়ারি, সারস, গ্রেটার ফ্লোমিংগো, হাড়গিলা, মদনটাক, কালো গলা বক, কালেম, পানকৌড়ি, বক, পেলিক্যান, ময়ূর, ঘুঘু, গিরিবাজ, সবুজ টিয়া, চন্দনা, হিরামন, কাকাতুয়া, শকুন, তিলাবাজ, শঙ্খচিল, ভুবন চিল, কুড়াবাজ, ময়না, বাজারিগার, ককাটিল, লাভ বার্ড, ক্যাকাউ, রোডরলি, কবুতর, ওয়াক প্রভৃতি। 
প্রাণী জাদুঘর শাখায় অর্থাৎ অ্যাকুরিয়াম ফিসের মধ্যে রয়েছে ২৬ প্রজাতির প্রাণী। এগুলোর মধ্যে আছে গাপ্পি, টাইগার শার্ক, এলবিনো শার্ক, রেইনবো শার্ক, সিলভার শার্ক, সিলভার ডলার, কৈ কার্প, টাইগার কৈ কার্প, সিলকি কৈ কার্প, টাইগার বার্ব, সাকিং ক্যাট ফিশ, সাদা সাকিং, ক্যাট ফিস, গোল্ড ফিস, এনজেল ফিস, কমেট ফিস, ব্ল্যাক মুর, ওরেন্ডা, কিসিং গৌরামি, টেলিচো, অস্কার, পিরানহা, ব্ল গৌরামি প্রভৃতি। 

জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. এস এম নজরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, ভারতের দিল্লি চিড়িয়াখানার একটি প্রতিনিধিদল কিছু দিন আগে ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে গেছেন। তারা আমাদের সাথে কিছু প্রাণী বিনিময় করতে আগ্রহী। বিশেষ করে তারা ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে দু’টি জিরাফ নিয়ে আমাদেরকে দু’টি সাদা টাইগার দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। প্রস্তাবটি আমরা গ্রহণ করেছি। কারণ সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের দর্শনার্থীরা নতুন একটি প্রাণীর সাথে পরিচিত হতে পারবে। তবে বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই দিল্লি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাদের মতামত জানাবে। 

জাতীয় চিড়িয়াখানার তথ্য কর্মকর্তা ডা: মো: ওয়ালিউর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, দর্শনার্থীদের আগ্রহের কথা চিন্তা করেই নতুন কিছু প্রাণী চিড়িয়াখানায় আনা হচ্ছে। চলতি মাসেই বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাণীগুলো আনা হবে। বিশেষ করে লাল ক্যাঙ্গারু ও ইম্পালা শিশু-কিশোরদের জন্য আলাদা আনন্দের খোরাক হবে। কেননা লাল ক্যাঙ্গারু এ প্রথমবারের মতো দেশে আসছে। চিড়িয়াখানায় প্রাণীটি যুক্ত হলে আশা করা যায় এখানে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বাড়বে।