২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জাবিতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য না করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

- ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি চলমান ভর্তিবৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জাবির কলা ও মানবিক অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হিসেবে গণ্য না করে আলাদা মেধাক্রম করা হতো।

সোমবার এক রায়ে হাইকোর্ট এ প্রক্রিয়াকে বৈষম্যমূলক বলে আখ্যায়িত করেছে এবং মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের (মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য যেটাই হোক) সাথে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ প্রদান করতে বলেছেন। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (আইন) মাহতাব-উজ-জাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘সোমবার (১১ মার্চ) বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ ও মো: ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রায় দেয়ার সময় আমি জাবির পক্ষ থেকে হাইকোর্টে উপস্থিত ছিলাম। তবে লিখিত কপি এখনো আসেনি। যেহেতু এই সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে তাই পরবর্তী সেশন থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।’

বাদিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী বলেন, ‘‘রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। মৌখিক আদেশে বলা হয়েছে, ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের পরিপন্থী, যা বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং ধারা ‘আইনের দৃষ্টিতে সমতা’র পরিপন্থী। এ বিভাজনের ফলে মেধার অবমূল্যায়ন ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। সবাইকে তার নিজ অবস্থান থেকে প্রতিযোগিতা করতে দিতে হবে।’’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রকম একটি আদেশের কথা শুনেছি। লিখিত কপি হাতে এলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

গত বছরের ২০ অক্টোবর কলা ও মানবিক অনুষদে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে দাবি করে উকিল নোটিশ প্রদান করেন তিন ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী (সাজ্জাদুল ইসলাম, মো: নওসাজ্জামান ও রাকিব হোসেন)। উকিল নোটিশের জবাব না দেয়ায় ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। পরে ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

আরো পড়ুন : যবিপ্রবিতে র‌্যাগিং ও অন্যান্য অভিযোগে নয় ছাত্র বহিষ্কার
যশোর অফিস, ১৩ মার্চ ২০১৯, ১০:৪০

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের র‌্যাগিং ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দুইজনকে আজীবন ও সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সকলেই যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীবের সই করা এক অফিসে আদেশে তাদের বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


এর আগে র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে এসব ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের সঙ্গেও তদন্ত কমিটি কথা বলে। অভিযুক্ত ছাত্ররা তদন্ত কমিটির সাথেও অসংলগ্ন, ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেন। একইসাথে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র‌্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়।

র‌্যাগিংয়ের শিকার হওয়া একজন ছাত্র ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং তারা স্বাভাবিক হতে পারছেন না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র‌্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আচরণবিধির ৩ এর (এ ও বি) অনুযায়ী বহিষ্কারের এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আজীবন বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্ররা হলেন- যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ অলি উল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান। দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রজিবুল হক রজব, এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন- চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মোঃ আবদুল কাদের, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আল মুজাহিদ আফ্রিদি, মোঃ শহিদুল ইসলাম, মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন, অনুপ মালাকার এবং মোঃ শামীম বিশ্বাস।

একইসঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শতদল পাল ও ইমরান হোসেনকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে র‌্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে না মর্মে পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের আইনানুগ অভিভাবক ও নিজে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার না করলে ওই তিনজন ছাত্রকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।

এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী একটি মেসে ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন করে রাতভর র‌্যাগিং করায় ১৯ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিয়েছিল প্রশাসন। এর মধ্যে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement