২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

এবার ৪২ হাজার কোটি ডিম দেবে ইলিশ

এবার ৪২ হাজার কোটি ডিম দেবে ইলিশ - ছবি : সংগৃহীত

আজ থেকে টানা ২২ দিন ইলিশ মাস ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় ইলিশ মাছ শিকার, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত ও কেনাবেচা নিষিদ্ধ থাকবে। যদি কেউ এ আইন অমান্য করেন তবে তার বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: আনিসুর রহমান জানিয়েছে, ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখার কারণে চলতি বছরে ৪২ হাজার কোটি ডিম দেবার সম্ভাবনা আছে।

অর্থাৎ ৪২ হাজার কোটি জাটকা ইলিশ হবে বলে তারা আশা করছেন। "এর মধ্যে যদি অল্পও টিকে যায় তাহলে সংখ্যাটি অনেক," বলছিলেন আনিসুর রহমান।

বাংলাদেশে প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে আট সপ্তাহ এবং অক্টোবর মাসে তিন সপ্তাহ ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। মার্চ-এপ্রিল মাসে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে জাটকা (ছোট ইলিশ) যাতে বড় হতে পারে।

অক্টোবর মাসে তিন সপ্তাহ ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখার কারণ হচ্ছে প্রজনন-ক্ষম ইলিশ যাতে ডিম পাড়তে পারে।

এ সময়ের মধ্যে প্রজনন-ক্ষম ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে এসে যাতে ডিম ছেড়ে নিরাপদে সমুদ্রে ফিরে যেতে পারে সেজন্য মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ প্রায় পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়েছিল। এবারও একই পরিমাণ ইলিশ মাছ উৎপাদনের আশা করছে করছে মৎস্য গবেষণা ইনন্সিটিউট।

আনিসুর রহমান বলেন, উৎপাদিত পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টনের মধ্যে প্রতিটি ইলিশ মাছের গড় ওজন প্রায় ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম।সে হিসেবে প্রায় ২০০ কোটি ইলিশ মাছ বাজারে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

কর্মকর্তারা বলছেন, যত ডিম ছাড়া হয় তার মধ্যে দুই থেকে তিন শতাংশের বেশি টিকে না।

মৎস্য গবেষণা ইনন্সিটিউট বলছে বছরের দুই সময়ে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার কারণে গত কয়েক বছরে উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে।

ইলিশ ধরা বন্ধ

বাসস

জাতীয় মৎস সম্পদ ইলিশ প্রজনন রক্ষায় চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আজ রোববার ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন অভয়ারশ্রম এলাকায় মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, পরিবহন ও সরবরাহ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২০১৭ সালে ১ অক্টেবর থেকে ২২ দিন এসব এলাকায় ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। চলতি বছর প্রজনন মৌসুম আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর করা হয়েছে।
এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত চাঁদপুর জেলা ট্রাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। অভয়াশ্রম চলাকালে এসব নদীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘন্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়া ও অভিযানে এসব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় ৫১ হাজার ১৯০ জন নিবন্ধিত ইলিশ জেলে রয়েছে। এসব জেলেরা এ ২২ দিন যাতে করে নদীতে মাছ না ধরেন, সেই জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে ও লিফলেট বিতরণ করে সচেতন করা হয়েছে। মৎস্য আড়ৎ এলাকায় জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement