গণহত্যা, ব্লক রেইড, গণগ্রেফতার ও রিমান্ডে নির্যাতনে সিনিয়র সাংবাদিকদের উদ্বেগ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ জুলাই ২০২৪, ২০:২৯
সাধারণ ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘গণহত্যা, ব্লক রেইড, গণগ্রেফতার, রিমান্ডে অমানুসিক নির্যাতনে’র ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের সিনিয়র সাংবাদিকরা।
তারা বলেছেন, ‘সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর যেভাবে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।’
সোমবার (২৯ জুলাই) এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘ওপরের নির্দেশ পেয়ে সরকার দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে শত শত ছাত্রজনতা নিহত হয়। যার একটি অংশ দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেয়ায় বড় অংশই এখনো অপ্রকাশিত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ পর্যন্ত ২৬৬ জন শহীদের নাম-তালিকা প্রকাশ করা হলেও এ সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩৬ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। হতাহতের উল্লেখিত সংখ্যা উল্লেখ করে গণমাধ্যমগুলো বলছে এ সংখ্যা মাত্র কয়েকটি হাসপাতাল থেকে পাওয়া। এর বাইরে আরো অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, যেখানে হতাহতের অনেক ঘটনা আছে। আবার অনেকে পরিস্থিতির কারণে লাশ হাসপাতালে না এনে নিজেরাই বাড়িতে নিয়ে দাফন করে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চিকিৎসাধীন আছেন ছয় হাজার ৭০১ জন। যাদের অনেকেই চিরতরে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং অনেকে হয়েছেন পঙ্গু। এমতাবস্থায় আন্দোলন দমনের জন্য শাসকদের নির্দেশে সাধারণ ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে গণগ্রেফতার চালানো হচ্ছে, সেটা রীতিমতো দেশের সংবিধান বিরোধী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
তারা বলেন, ‘এটা দিবালোকের মতো সত্য যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরাও জড়িত ছিলেন। কিন্তু বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের। আবার যারা ঘটনার সাথে জড়িত নন, তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের ব্লক রেইড দিয়ে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রেহাই পাচ্ছে না সাংবাদিক-পেশাজীবীরাও। থানাগুলোতে মামলায় কে কত কত বেশি আসামি দেখাবেন তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা করে। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের ধরা হয়, তাদের নাম আসামি হিসেবে দেখানো হচ্ছে।’
তারা আরো বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে সরকারকে এ ধরনের অমানবিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি। সংবিধান নাগরিকদের যে মৌলিক অধিকার দিয়েছে তা লঙ্ঘন না করারও অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, চলমান সমস্যার যৌক্তিক সমাধান না হলে দেশের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে। যা আমাদের কারো কাম্য নয়।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন আলমগীর মহিউদ্দিন, আবুল আসাদ, এরশাদ মজুমদার, কবি আল-মুজাহিদী, মোকাররম হোসেন, মোস্তফা কামাল মজুমদার, সালাহউদ্দিন বাবর, রুহুল আমিন গাজী, কবি আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ, এলাহী নেওয়াজ খান, মুন্সি আবদুল মান্নান, কামাল উদ্দিন সবুজ, মোবায়দুর রহমান, ড. মাহবুব হাসান, কাদের গনি চৌধুরী, মো: শহিদুল ইসলাম, খুরশীদ আলম, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বদিউল আলম, বাকের হোসাইন, ইলিয়াস খান, আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, আবুল কালাম মানিক, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সরদার ফরিদ আহমেদ, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, বখতিয়ার রানা, মাসুমুর রহমান খলিলি, মমতাজ বিলকিস বানু, সৈয়দ মেজবাহ, কবি মাহমুদ শফিক, রোজী ফেরদৌস, কাজী রওনাক হোসেন, ওবায়দুর রহমান শাহীন, খায়রুল বাশার, এ কে এম মহসিন, ইলিয়াস হোসেন, শফিউল আলম দোলন, রাশেদুল হক, গোলাম মোস্তফা, জাহেদ চৌধুরী, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, শাহ আহমদ রেজা, আজম মীর, রেজাউর রহমান সোহাগ, নুরুদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান ভূইয়া, কবি আনোয়ারুল কবির বুলু, আতাহার খান, শামসুদ্দিন হারুন, আনোয়ার আলদীন, কায়কোবাদ মিলন, মাহফুজুর রহমান, শাহাদাত হোসেন খান, এস এস জাহাঙ্গীর, সৈয়দ আলী আসফার, মো: শহীদুজ্জামান, এরফানুল হক নাহিদ, খন্দকার হাসনাত করিম, নির্মল চক্রবর্তী, কামার ফরিদ, শামসুদ্দিন আহমেদ, আবু সাঈদ জুবেরী, আবু রূশদ, শিরিন সুলতানা, লিসা ইসলাম, রফিক মোহাম্মদ, শামসুল হক দুররানি, কবি হাসান হাফিজ, কবি মুস্তাহিদ ফারুকী, মোদাব্বের হোসেন, সদরুল হাসান, জিয়া উদ্দিন সাইমুম, জাহিদুল করিম কচি, শামসুল হক হায়দরী, মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সালেহ নোমান, মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, এহতেশামুল হক শাওন, মো: আনিসুজ্জামান, আবুল হাসান হিমালয়, আকরামুজ্জামান, এস এম ফরহাদ, মীর্জা সেলিম রেজা, গনেশ দাশ, এস এম আবু সাঈদ, জি এম আশিক উল্লাহ, মস্তোফা সরওয়ার, মো: আবদুল জলিল ভূঁইয়া, জি এম মঈনুদ্দিন হিরু, মাহফিজুল ইসলাম রিপন, আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু, শামিম উল হাসান অপু, এম আইয়ুব আলী, সাইফুল ইসলাম, এইচ এম দেলোয়ার, মো: হেদায়েত উল্লাহ, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, খালেদ আহমদ, সিদ্দিক আল মামুন, মিজানুর রহমান, আজাদ আলাউদ্দিন, মো: হাফিজুর রহমান হিরা, সালেকুজ্জামান সালেক, সরকার মাজহারুল মান্নান, আবু সাউদ মাসুদ, এ কে এম মাহফুজুর রহমান, কাজী বিপ্লব হাসান ও মো: রুবেল প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা