সাংবাদিকরা নির্যাতনের স্বীকার হলে আমরা বসে থাকবো না : শহিদুল ইসলাম
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০১ জুলাই ২০২৪, ২০:০৯
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সাংবাদিকরা নির্যাতনের স্বীকার হলে আমরা বসে থাকবো না। নির্যাতনকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তিনি সকল সাংবাদিকের ওপর থেকে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার ফয়েজ কর্তৃক নির্যাতন এবং হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মানবন্ধন করে লুৎফর জামান ফকির।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি একেএম মহসিন, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক নির্বাহী সদস্য আল আমীন প্রমুখ।
শহিদুল ইসলাম বলেন, নেত্রকোনার এসপির নির্দেশে সাংবাদিক লুৎফর জামান ফকিরকে বিনা ওয়ারেন্টে ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বিবেকের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এসে রাস্তায় দাড়িয়েছি। তার ওপর নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্র এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের আওতায় না আনা হয় তাহলে সাংবাদিক সমাজ আরো বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। বলতে চাই পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের যে নিরাপত্তা দেয়ার কথা তা দিতে নেত্রকোনা পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সাগর-রুনি হত্যার বিচার থেকে সরে আসিনি। একইভাবে দেশের যেকোনো প্রান্তে সাংবাদিকরা নির্যাতনের স্বীকার হলে আমরা বসে থাকবো না।
তিনি উল্লেখ করেন, এই সরকারের আমলে বিগত ১৫ বছরে মোট ৫৯ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অসংখ্য সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা ঝুলছে। সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার চাই এবং সাংবাদিক নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের কিংবা দলীয় ক্যাডার তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কয়েকদিন আগে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে যেন পুলিশের বিরুদ্ধে নিউজ করা হয়। সাংবাদিক লুৎফর যথাযথ তথ্য এবং ভিডিও নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছেন। কিন্তু এরপরও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
সাংবাদিক লুৎফর জামান ফকির অভিযোগ করেন, সীমান্ত চোরাচালান এবং অর্থের বিনিময়ে এসপি ফয়েজ আহাম্মদ কাজ করেন। এর বিরুদ্ধে নিউজ প্রচার করায় তার বিরুদ্ধে দু’টি মিথ্যা মামলা দিয়ে দুই মাস কারাগারে আটক রেখেছেন। সেইসাথে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে অমানুসিক নির্যাতন করেন।
লিখিত অভিযোগে লুৎফর জামান ফকির বলেন, এক নম্বর মামলা বাদি অলি আহম্মদকে পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ ব্যবহার করে মামলা করিয়েছেন। অলি আহম্মদ ৭ বছরের শিশু হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত। দ্বিতীয় মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। দ্বিতীয় মামলাটিও একজন ভাসমান পতিতাকে দিয়ে করিয়েছেন এসপি নেত্রকোনা।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ,‘সীমান্তের চোরাকারবারিদের অবৈধ ব্যবসার প্রমাণসহ নিউজ করায় ফয়েজ আহাম্মদ (এসপি নেত্রকোনা) ক্ষিপ্ত হয়ে সীমান্ত অবৈধ ব্যাবসার লাইনম্যান অলিকে (এসপির অবৈধ চাঁদা গ্রহণকারী) দিয়ে বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে গত ২১/০৩/২৪ তারিখে রাত ১২টা ১৫ মিনিটে। মামলা দায়েরের ৯ ঘণ্টার মধ্যেই ময়মনসিংহ ভাড়া বাসা থেকে নেত্রকোনা ডিবি টিমের এসআই মাজহারুলের নেতৃত্বে ধরে নিয়ে যায় নেত্রকোনার এসপি অফিসে। তখন বাসা হতে তিনটি মোবাইলফোন, ১১টি পেনড্রাইভ, ১৮টি মেমোরিকার্ড নিয়ে আসে যা মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আমাকে সারাদিন নির্যাতন করে এবং কারেন্টে শক দেয়। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পরি, সন্ধ্যায় জ্ঞান ফিরলে আদালতে না তুলে কারা হেফাজতে পাঠায়। আইন ও বিচার ব্যবস্থার তোয়াক্কা না করেই এই নির্যাতন করে। ৩১/০৩/২৪ তারিখে মিথ্যা কোর্ট হাজিরা থাকার কথা বলে কারাগারের বাইরে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।’