গাজীপুর বারের ফলাফল প্রত্যাখ্যান বিএনপি-জাপার আইনজীবীদের
- গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি
- ০৩ মার্চ ২০২৩, ২১:১৬
গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যালট পেপার লুটে নেয়ার অভিযোগে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীরা। এ সময় তারা পুনঃনির্বাচন দাবি করেছেন।
শুক্রবার (৩ মার্চ) বিকেলে আইনজীবী সমিতির হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
এ সময় নীল প্যানেল সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো: সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের দ্বারা ব্যালট পেপার লুটে নেয়ার বর্ণনা তুলে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা মজলুম। এই জালিম সরকারের কাছে বিচার চেয়ে লাভ নেই। আল্লাহর কাছে বিচার চাই। আপনাদের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কাছে বিচার চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে নীল প্যালেনের আইনজীবীদের সান্ত্বনা দিতে আসা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘হতাশ হবেন না, নিরাশ হবেন না, ফয়সালা আল্লাহর তরফ থেকে হবে। একটি পঙ্গু মশার মাধ্যমে মহান আল্লাহ নমরুদের পতন ঘটাতে পারলে এই জালিম সরকারের পতনও যেকোনো তুচ্ছ জিনিস দিয়ে ঘটাতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তৈরি হচ্ছি। জবাব তাদের দিব ইনশাআল্লাহ।’
এ সময় আরো বক্তব্য দেন নীল প্যানেল সমর্থিত সভাপতি পদপ্রার্থী ড. মো: সহিদউজ্জামান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মো: নাছির উদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের নয়ন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম রণি ও মহিদুল ইসলাম নয়নসহ সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবীরা বলেন, গাজীপুর বারের প্রতিষ্ঠার পর এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। গাজীপুরের বারের ঐক্যবদ্ধ যে ঐতিহ্য ছিল, তা আওয়ামী লীগ ম্লান করে দিয়েছে এই কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দলের বহিরাগত লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় বহিরাগতরা নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় ১১ ও ১২ নম্বর ব্যালট বই (প্রতি বইয়ে ১০০ পাতা) লুট করে নেয়। পরে বাহির থেকে এসব ব্যালট পেপারে সিল মেরে পুনরায় এসব ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় যথাসময়ে ভোট গণনায় কালক্ষেপন শুরু করে নির্বাচন কমিশন। অবশেষে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী। তাদের সমর্থকদের চাপে রাত ১১টার পর ভোট গণনা শুরু হয়। গণনায় মোট এক হাজার ৮৮২ ভোটের মধ্যে এক হাজার ৮১৩ ভোট কাস্ট দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরিষদের মোট ২২টি পদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ পদে সাদা প্যানেলের ও নীল প্যানেল সমর্থিত সহ-সভাপতি বিজয়ী দেখানো হয়।’
এদিকে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিনই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমর্থিত নীল প্যালেন ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন এ নির্বাচন বর্জন করে ফলাফল প্রত্যাখান করে। এদিকে ব্যালট পেপার লুট ও অনিয়মে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান কামাল পদত্যাগ করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে শুধু কারচুপি নয়, মহা কারচুপি হয়েছে। ব্যালট পেপারের বইগুলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাছির উদ্দিন ফারুক (শিপন) ও আব্দুল আজিজের তত্ত্বাবধানে ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ব্যালট বইয়ের মুড়ি দেখানোর দাবি জানালে তারা ১১ ও ১২ নম্বর বইয়ের মুড়ি দেখাতে পারেননি।