ভাষাসৈনিককে ‘প্রজন্ম ২৬ মার্চ’-এর সম্মাননা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৬
ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধে চাঁদপুর অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম কলিমউল্লাহর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সংগঠন ‘প্রজন্ম ২৬ মার্চ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক আবরার আলম নাবিল। এ সময় ভাষাসৈনিক বি এম কলিমউল্লাহর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন তারা।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায় শতবর্ষী এ প্রবীণ ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে দেখতে গিয়েছিলে ‘প্রজন্ম ২৬ মার্চ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক।
ছাত্রজীবন থেকে বি এম কলিমউল্লাহ কমিউনিস্ট রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন। একসময় কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন তিনি। এ জন্য তিনি ‘কমরেড কলিমউল্লাহ ভুঁইয়া’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয়ভাবে তিনি কলিমউল্লাহ ভুঁইয়া নামে পরিচিত।
ভাষাসৈনিক কলিমউল্লাহর জন্ম চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। ১৯৫২ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই সময় ভাষা আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের প্রধান সহচর ছিলেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তিনি চাঁদপুর অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে একজন ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি হাজীগঞ্জ থানায় প্রবেশ করে সুকৌশলে পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে নিজ অনুসারীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন একটি সশস্ত্র দল। এই দলটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে ‘কমরেড বাহিনী’ নামে পরিচিত ছিল।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘চাঁদপুর মহকুমা সংগ্রাম’ কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটির উদ্যোগে তৎকালীন সুবেদার জহিরুল হক পাঠানের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। বেসামরিক নেতাদের সাথে সমঝোতা করে কমরেড কলিমউল্লাহর দলটি সুবেদার জহিরুল হক পাঠানের নেতৃত্বে গঠিত রেগুলার ফোর্সের (মুক্তি ফৌজ) সাথে যুক্ত হয়। এতে রেগুলার ফোর্সের সাংগঠনিক কাঠামো ও শক্তি আরো মজবুত হয়। বেসামরিক নেতৃত্বের পৃষ্ঠপোষকতায় এ রেগুলার ফোর্স মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
এই বাহিনীর কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব সামরিক অফিসারের হাতে থাকলেও যুদ্ধ পরিচালনা ও রণকৌশল নির্ধারনে বি এম কলিমউল্লাহর সাথে পরামর্শ করা হতো। বি এম কলিমউল্লাহ অনেক সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার সাংগঠনিক বুদ্ধিমত্তা ও অসীম সাহসিকতার গল্প আজও প্রবীণদের মুখে উচ্চারিত হয়। চাঁদপুর অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার নিজ বাড়ি পাক বাহিনী পুড়িয়ে দেয়।
’প্রজন্ম ২৬ মার্চ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক শতবর্ষী ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি