‘শ্রমিকদের পাশে থাকতে শ্রমিক দরদি নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে’
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:১৬
নয়া দিগন্ত অনলাইন
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রমিক বান্ধব নেতৃত্বের বিকল্প নেই। শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট দেশের অধিকাংশ শ্রমিক নেতারা বুঝে না এবং বুঝতেও চায় না। তাদের শ্রমিকদের প্রতি কোনো দরদ নেই। শ্রমিকদের পাশে থাকার জন্য সারাদেশে একদল শ্রমিক দরদি নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর এক মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভার্চুয়ালি আয়োজিত কার্যকরী পরিষদের প্রথম সাধারণ অধিবেশন-২০২৩ এর সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অধিবেশনের মূলমঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মো: তসলিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, কোষাধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক নুরুল আমিন, প্রকাশনা ও পাঠাগার সম্পাদক জামিল মাহমুদ প্রমুখ।
এ টি এম অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকরা পদে পদে জুলুম, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার। সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও ন্যায্য মজুরি থেকে তারা বঞ্চিত। মজুরি চাইতে গেলে মালিকের মুখ কালো হয়ে যায়। মালিকের মলিন মুখ দেখে অনেক সময় শ্রমিকরা পাওনা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। খালি হাতে বাড়ি ফিরে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে রাত কাটায়। শ্রমিকদের এই দুঃখ-কষ্ট তথাকথিত শ্রমিক নেতারা না দেখার ভান করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্টকে পুঁজি করে মালিকের কাছ থেকে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করে শ্রমিক নেতারা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নারী শ্রমিকদের দুর্দশা আরো বেশি। কর্মক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন রকম হয়রানির শিকার হচ্ছে। নারীরা মান-সম্মানের ভয়ে তাদের কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারে না। দেশে এখনো কাঙ্ক্ষিত নারী শ্রমিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। যারা আমাদের মা-বোনদের ওপর কোনো ধরনের অন্যায় আসলে তার প্রতিবাদ করতে পারে। নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের বৈষম্য দূর করতে একদল কার্যকর নারী শ্রমিক নেতৃত্ব তৈরি করা প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজ সারাদেশের শ্রমজীবী মানুষ চরম কষ্টে দিন পার করছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। পবিত্র রমজানকে কেন্দ্রকে একদল অসাধু ব্যবসায়ী সকল পণ্যের দাম কয়েক দফা বাড়িয়ে দিয়েছে। চাল, ডাল, তেলসহ সকল পণ্য শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ ও সকল পণ্যের দাম শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে স্পষ্ট ভাষায় দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে যে সকল শ্রমিকরা কর্মহীন অবস্থায় আছে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ও যতদিন না কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত তাদের ভরণপোষণের ব্যয়ভার সরকারকে গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। রানা প্লাজা, তাজরিন গার্মেন্টসসহ কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের পরিবার-পরিজন যারা এখনো ক্ষতিপূরণ পায়নি, তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখার দাবি
জানাচ্ছি।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)