পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটিতে আলেম প্রতিনিধি রাখার দাবি হেফাজতের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:২২
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটিতে আলেমদের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিংয়ের সময় আমাদেরকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিলো পাঠ্য বইয়ে ইসলামবিরোধী কিছু থাকবে না। কিন্তু সেই কথা রাখা হয়নি। সর্বোচ্চ মহলের কাছে দাবি জানানোর পরও ইসলামবিরোধী মতবাদগুলো কেন পাঠ্যবইয়ে থাকলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, শিক্ষা সিলেবাসে থাকা ইসলামবিরোধী বিষয়গুলোসহ অসঙ্গতিপূর্ণ সব বিষয় বাতিল করে নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে।
বুধবার রাজধানীর মানিকনগরে ওয়াসা রোডের জামিয়া ইসলামিয়া জহিরুদ্দিন মাদরাসার ১০ম বার্ষিক ইসলাহী মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। খতমে কুরআনুল কারিম, খতমে বুখারি ও দস্তারবন্দী উপলক্ষে দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ মাহফিল রাত পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।
মাদরাসার সদরুল মুদাররিসিন ও শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুল গণির সভাপতিত্বে ও মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা জুবায়ের আহমাদের পরিচালনায় মাহফিলে আলোচনা করেন, ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, চাঁদপুর ফুল ছোয়ার পীর মুফতি আবু সাঈদ, মুফতি নজরুল ইসলাম, মুফতি ইমাদুদ্দিন, মাওলানা মেরাজুল হক মাজহারী, মাওলানা মহিউদ্দিন আশ্রাফি, মুফতি আব্দুস সালাম, মুফতি মনিরুজ্জামান, মুফতি জিকরুল্লাহ খান, মুফতি তৈয়্যব আশরাফ, মুফতি এহসানুল হক জিলানী, মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ। এছাড়া মাদরাসার সভাপতি আলহাজ আতিক উল্লাহ ভুইয়া ও সেক্রেটারি আলহাজ মুজিবুর রহমান আকন্দ বক্তৃতা করেন।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানের সন্তানদের ঈমান-আকিদা ও দেশপ্রেম ধ্বংসের জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব ইসলামবিরোধী শক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা মুসলমানের সন্তানদের নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা তৈরি করার জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। হিজাব থেকে শুরু করে দাড়ি ইসলামের এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার বিষয়ে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে।
আলেমদের মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে দেয়া মামলায় কারাবন্দী আলেম-ওলামাদের আদালতে হাজির করার সময় সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে। এ ঘটনা শুধু অমানবিক নয়, বেআইনিও। এভাবে আলেমদের লাঞ্ছিত করা কারো জন্য শুভ হবে না।
কাদিয়ানিদের ইসলামের শত্রু আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, কাদিয়ানিরা অমুসলিম। কিন্তু তারা প্রতারণা করে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার জন্য আমরা সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানোর পরও সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
তিনি সবাইকে ইসলামের বিধিবিধান মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি সমাজকে ধ্বংস করে ফেলছে। অনৈসলামিক সমাজ ব্যবস্থা থাকার কারণেই এটি হচ্ছে। তিনি মুসলমানদের সব ধরনের অন্যায়-অপকর্ম থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামী বিধিবিধান পালন করা হলে মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।