সুইডেনে কুরআন অবমাননা চরম মানবতাবিরোধী অপরাধ : বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:২৩
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে পবিত্র কুরআনে আগুন দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ।
বুধবার মোহাম্মদপুরের জামিয়া ওয়াহিদিয়ায় বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদের নির্বাহী কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মাওলানা যুবায়ের আহমাদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মাওলানা এনামুল হক মুসা।
বৈঠক থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলাম বিদ্বেষীরা সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে পবিত্র কুরআনে আগুন নিয়ে সারা বিশ্বের সকল মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত করেছে।
পবিত্র কুরআন বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমানের সবচেয়ে প্রিয় আসমানি কিতাব। এই গ্রন্থের সাথে বিশ্বের সমস্ত মুসলিমদের আবেগ-অনুভূতি জড়িত। অসভ্য ও বিকৃত রুচির সুইডিশ রাজনীতিবিদ রাসমাস পালুদান বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমানের ওপর জুলুম করেছে। তাদের অনুভূতি ও বিশ্বাসের ওপর আঘাত করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
এই ঘটনায় জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের নীরবতার কঠোর সমালোচনা করে বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, এমন ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তারা কিভাবে নিশ্চুপ রয়েছে। তাদের এই নীরবতা প্রমাণ করে, এসব ঘটনায় তারা মৌন সমর্থন দিচ্ছে। এই নীরবতার পরিণাম শুভ হবে না। মুসলিম বিশ্ব জেগে উঠলে বিশ্ব মোড়লদের অস্তিত্ব থাকবে না।
আইম্মাহ পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে বিকৃত রুচির সুইডিশ রাজনীতিবিদ রাসমাস পালুদানকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একইসাথে সুইডিশ সরকারকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিরোধী সিলেবাস প্রণয়নের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানের সন্তানদের ঈমান-আকিদা ও দেশপ্রেম ধ্বংসের জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব ইসলামবিরোধী শক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা মুসলমানের সন্তানদের নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা তৈরি করার জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। শিক্ষা সিলেবাসের পরতে পরতে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ডারউইনের কুখ্যাত বিবর্তনবাদ ও আরএসএস-এর হিন্দুত্ববাদ দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস। বানর থেকে মানুষ সৃষ্টির কুরআন-হাদিসবিরোধী মতবাদ পাঠ্যবইয়ে সংযোজন করা হয়েছে। হিজাব থেকে শুরু করে দাড়ি- ইসলামের এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার বিষয়ে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে।
সংগঠনের নেতারা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পেয়েছি, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বিতর্কিত বিষয়গুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ উদ্যোগের জন্য দায়িত্বশীলদেরকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে আমরা জানতে চাই, কারা এহেন গুরুতর অপকর্ম করেছে? তাদের সামনে আনা হোক। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। একইসাথে এই শিক্ষা সিলেবাসে থাকা ইসলামবিরোধী বিষয়গুলোসহ অসঙ্গতিপূর্ণ সকল বিষয় অনতিবিলম্বে বাতিল করে নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করা হোক।
উক্ত বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন মুফতী উমর ফারুক, মাওলানা আশরাফ রাব্বানী, মুফতী মোস্তফা কামাল, মুফতী মাহমুদুর রহমান, মুফতী ইসহাক মাহমুদ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী আদনান মাসউদ প্রমুখ।