শ্রমিকেরা দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:১২
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমিক। অতীতে কোনো সরকার শ্রমিকদের সমর্থন ছাড়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে পারেনি। আগামী দিনেও শ্রমিকেরা যাদের পক্ষে অবস্থান নেবে তারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। তারাই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিবে।
শনিবার রাজধানীর একটি মিলানায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহানগরী সভাপতি মোঃ মহিব্বুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের মহানগরীর উপদেষ্টা ড. রেজাউল করিম, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মো: তসলিম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, ইতিহাসের পাতা খুললে দেখা যায় শ্রমিকরাই যুগে যুগে বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার ছিল। কুরআন হাদিসে অসংখ্য জায়গায় বলা আছে- পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ নবী-রাসূলগণ শ্রমিক ছিলেন। শুধু তাই নয় তাদের আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিল শ্রমিকরা। মুসা আ: শ্রমিকদের সাথে স্বৈরাচারী ফেরাউনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং সে লড়াইয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। আল্লাহর রাসূল সা: নিজে শ্রমিক ছিলেন। তিনি শ্রমিকদের ভালোবাসতেন। তাদের জখম হওয়া হাতে চুমু খেতেন। আল্লাহর রাসূল শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে ছিলেন সোচ্চার। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছেন ইতিহাসে এর চেয়ে ভালো কোনো নির্দেশনা আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি এবং কোনো দিন পারবে না।
তিনি বলেন, আজকে শ্রমিকরা যে পদে পদে অবহেলিত। নির্যাতিত-নিপীড়িত। তাদের পাশে কাউকে পাওয়া যায় না। এর একমাত্র কারণ আল্লাহর রাসূল সা: অনুসৃত শ্রমনীতি সমাজে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফল। আজকে যদি আল্লাহর রাসূল সা: দেখানো শ্রমনীতি বাস্তবায়িত থাকতো, থাকলে কোনো মালিক কিংবা সরকার শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালাতে পারতো না। বরং তারা শ্রমিকদের জীবন সুষ্ঠুভাবে চলছে কিনা এই চিন্তায় বিভোর থাকতো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যেকোনো মূল্যে আল্লাহর রাসূল সা: দেখানো অনুপম শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর জন্য শ্রমজীবী মানুষের কাছে সর্বপ্রথম ইসলামী শ্রমনীতির দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, শ্রম অঙ্গনের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য সৎ নেতৃত্বে বিকল্প নেই। আজকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা যদি নিরলসভাবে কাজ করে যেতে পারেন, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে এই অঙ্গনের পরিবর্তন সাধিত হবে। নতুন নেতৃত্বকে শ্রমিকদের ঘরে ঘরে ইসলামী শ্রমনীতির দাওয়াত পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নেতৃবৃন্দ যদি এই কাজটি যত সহজে করতে পারবেন তত দ্রুত ইসলামী শ্রমনীতির প্রসার ঘটবে।
সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে মোঃ মুহিব্বুল্লাহ ও এইচ এম আতিকুর রহমান পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।