ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ অক্টোবর ২০২২, ২০:৪৭
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, আধুনিক যুগে যারা শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা সমাধানে তত্ত্ব ও নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের সকল তত্ত্ব একপর্যায়ে গিয়ে ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে। একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতি শ্রমিকের সমস্যার কাঙ্ক্ষিত সমাধান দিতে পেরেছে। ইসলামী শ্রমনীতি ব্যতীত শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত দোকান কর্মচারী ও হকার্স সেক্টরের নেতাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, দোকান কর্মচারী ও হকার্স সেক্টরের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা খিজার আহমেদ, শ্রমিক নেতা আবু কাউসার, ফারুক মিয়াজী, নুরুল হুদা মিলন, মো: আলমগীর, কামরুজ্জামান খান ফয়সাল, দেলোয়ার হোসেন লস্কর, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, আধুনিক তত্ত্ব শ্রমিক সমস্যার সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারবে না। শ্রমিকের সমস্যা সমাধান করতে আল্লাহ তায়ালার আইনের আলোকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীর ভারসাম্য করতে কাউকে শ্রমিক, কাউকে মালিক বানিয়েছেন। কিন্তু তাই বলে কারো প্রতি তিনি জুলুম করেননি। মালিককে সম্পদের মালিকানা দেয়ার পাশাপাশি শ্রমিকের প্রতি তার দায়িত্ব কী হবে বলে দিয়েছেন। আবার শ্রমিক হিসেবে একজন শ্রমিকের কী দায়িত্ব তাও তিনি বলে দিয়েছেন। আজকের দুনিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের প্রধান কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মালিকদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন মালিকরা সেই দায়িত্ব পালন না করার ফল। আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে পৃথিবীর সকল নবী ও রাসূল শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দেখিয়েছেন- ইসলাম ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি অসম্ভব।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে অন্য সেক্টরের মতো দোকান কর্মচারী ও হকার্সরা নানাভাবে নির্যাতিত। দেশে প্রায় ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী রয়েছে। এই সকল শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা নেই। তাদের কোনো নিয়োগপত্র দেয়া হয় না। কোনো ইস্যু ছাড়া যখন তখন তাদের চাকরি থেকে ছাটাই করা হয়। উৎসবভাতা দেয়ার কথা থাকলেও বিক্রি কম হয়েছে এই অজুহাতে উৎসব ভাতা দেয়া হয় না। ৮ ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করতে বাধ্য করা হয়। অন্যদিকে হকার্সদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতারা প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চাঁদা হকার্সদের থেকে জোর করে আদায় করে। চাঁদা দিতে না পারলে তাদের ব্যবসা করতে দেয়া হয় না। এর ফলে তাদেরকে মারাত্মক দুঃখ-কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ইসলাম কোনো অন্যায় ও অনধিকার চর্চা সমর্থন করে না। ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের এই সকল সমস্যা আর থাকবে না। তাই শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের এই আন্দোলনকে আমাদের আরো বেগবান করতে হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি