রাজধানীর গণপরিবহনে থাকছে না ওয়েবিল-চেকার, মালিক সমিতির ৩ সিদ্ধান্ত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ আগস্ট ২০২২, ২১:৫৮
ঢাকার বিভিন্ন রুটে বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর করাসহ গণপরিবহণে শৃঙ্খলা ফেরাতে তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি। আজ (১০ আগস্ট) থেকেই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা।
বুধবার সমিতির দফতর সম্পাদক সোমদানী খন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এর আগে গত ৮ আগস্ট বিকালে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো- ১. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় করতে হবে। চার্টের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। প্রতিটি গাড়িতে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার চার্ট অবশ্যই টাঙিয়ে রাখতে হবে।
২. কোনো পরিবহণের গাড়িতে বিআরটিএ’র পুনঃনির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় না করা হয়, সে বিষয়ে সভায় মালিকদের সমন্বয়ে ৯টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়। এসব টিম বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে থেকে সব অনিয়ম তদারকিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
৩. ঢাকা শহর ও শহরতলী রুটে চলাচলকারী গাড়ির ওয়েবিলে কোনো স্ল্যাব থাকবে না। রাস্তায় কোনো চেকার থাকবে না। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত গাড়ির দরজা বন্ধ থাকবে, খোলা রাখা যাবে না। রুট পারমিটের স্টপেজ অনুযায়ী গাড়ি থামাতে হবে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ভিজিল্যান্স টিমের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানায় সমিতি।
উল্লেখ্য, আট মাসের মধ্যে গত শনিবার ডিজেলসহ চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৫২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ডিজেলের দাম সাড়ে ৪২ শতাংশ বাড়ানোর কারণে ওই দিন রাতেই নতুন হারে বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসে। নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও রোববার থেকে রাজধানীর বাসগুলোতে অনেক বেশি হারে ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ আসে। এ নিয়ে বিভিন্ন রুটে গত কয়েকদিনে যাত্রী অসন্তোষ ঘটনা সামনে আসে।
সর্বনিম্ন দূরত্বের সরকার নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ নেয়ারও অভিযোগ আসে। বিশেষ করে ‘ওয়েবিল’ ও ‘চেকার’ প্রথার নামে স্বল্প দূরত্বেও অনেক বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সাথে বাস কর্মীদের বচসার ঘট্না ঘটে।
এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন থেকে রাজধানীর গণপরিবহনে আলোচিত ওয়েবিল প্রথা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল বাস মালিক সমিতি।
দীর্ঘদিন থেকে বাসগুলো সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মালিকদের নির্ধারণ করা নির্দিষ্ট স্থান পরপর ‘চেক পয়েন্ট’ অনুসারে ভাড়া আদায় করছে।
নগরীর প্রতিটি রুটেই কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস পরিবহনগুলো অনেকদিন থেকে ‘চেক পয়েন্ট’ বসিয়ে যাত্রীর হিসাব রাখে। প্রতিটি পয়েন্টে রাখা হয়েছে কর্মী। বাস ওইসব ‘চেক পয়েন্ট’ অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ করে নির্ধারিত একটি শিটে সই করে দেন। এটাকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাষায় বলা হয়, ‘ওয়েবিল’।
বুধবারের সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। এতে ঢাকার ১২০টি পরিবহন কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।