১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবন নিরাপত্তা নিয়ে মালিকরা এখনো উদাসীন’

‘কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবন নিরাপত্তা নিয়ে মালিকরা এখনো উদাসীন’ - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, ’দেশের শ্রম আইনে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবন নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হলেও মালিকরা এ আইন বাস্তবায়নে অনাগ্রহী। তারা শুধু ব্যবসা বোঝে। শ্রম আইন ফাঁকি দিয়ে কিভাবে শ্রমিক ঠকিয়ে নিজেদের আখের গোছানো যায় তাই নিয়ে তারা ব্যস্ত। কল-কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে তারা মোটেও চিন্তিত নয়। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবন নিরাপত্তা নিয়ে মালিকরা এখনো উদাসীন।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে ‘সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় আয়োজিত দোয়ার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, কোষাধ্যক্ষ আযহারুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ড বাংলাদেশে প্রথম কোনো অগ্নিকাণ্ড নয়। এর আগে অনেকবার বিভিন্ন কল-কারখানায় অগুনে বহু শ্রমিককে অকালে জীবন দিতে হয়। সীতাকুণ্ডের আগুনে ইতোমধ্যে ৪১ জনকে জীবন দিতে হয়। হতাহতের সংখ্যা সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে সরকার কিংবা মালিকরা দুর্ঘটনার পর নামকাওয়াস্তে সাহায্য করে তাদের দায়িত্ব শেষ করে। তারা এক বারের জন্যও ভাবে না এ দেশকে যারা সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ওই শ্রমিকদের জীবন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব। এ দেশে দুর্ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। তা সত্ত্বেও সরকার ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিকায়ন করছে না।

তিনি আরো বলেন, ডিপোর মালিকপক্ষ দুর্ঘটনার শুরু থেকে অবহেলা ও চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তারা ফায়ার সার্ভিসকে দুর্ঘটনার সংবাদটুকু পৌঁছানোর প্রয়োজনবোধ করেনি। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৯ জন কর্মীকে জীবন দিতে হয়। তারা জানতো না ডিপোর কনটেইনারে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। এ দায় মালিকরা কোনোভাবে এড়াতে পারে না। তারা ঘটনার ১৬ ঘণ্টার পরও জানায়নি ডিপোতে কি ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। রাসায়নিক দুর্ঘটনা কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা নয়। এর সুদূর প্রসারী প্রভাব রয়েছে।

অধ্যাপক হারুন বলেন, এত বড় একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে শত শত শ্রমিকরা কাজ করে। সেখানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ হওয়া দরকার ছিল। গণমাধ্যমে ওঠে এসেছে এ প্রতিষ্ঠানের অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থায় মারাত্মক গলদ ছিল। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান ইতঃপূর্বে এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় মারাত্মক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও পুনরায় খুলে দেয়া হয়। এ ন্যাক্কারজনক কর্মের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

পরিশেষে অগুনের নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। নিহতদের পরিবার-পরিজনকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান ও আহতদের পূর্ণ সুস্থতা কামনা করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement