‘জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ ঘৃণ্য তৎপরতাকে সহযোগিতা করেছে’
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫০, আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫৭
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান’ বন্ধ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণ্য তৎপরতাকে সহযোগিতা করেছে’ বলে অভিযোগ করেছে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য।
বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমান এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির গতকালের সিদ্ধান্তে গোটা দেশবাসীর সাথে আমরাও গভীরভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা মনে করি, জাতীয় প্রেস ক্লাব অতীতে জাতির নানা সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অবারিত সুযোগ জাতীয় প্রেস ক্লাব কখনোই হরণ করেনি। কিন্তু বর্তমান ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রেস ক্লাবের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে যেমন ভূলুণ্ঠিত করলো তেমনি একইভাবে বর্তমান সরকারের রাজনীতি, গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণ্য তৎপরতাকেই সহযোগিতা করলো। দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত ১০ অক্টোবর জেহাদ দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য প্রদান নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীনের ‘কটাক্ষপূর্ণ বিবৃতির’ নিন্দা জানিয়ে আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া কিংবা মামলার রায় হলেই তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবে আসতে পারবেন না কিংবা জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিডিও কনফারেন্সেও কথা বলতে পারবেন না, এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং দোষী, নির্দোষী, পক্ষ কিংবা বিপক্ষ যেকোনো ব্যক্তি প্রেস ক্লাবে আসবেন, তাদের মতামত ব্যক্ত করবেন, বক্তব্য তুলে ধরবেন- এটাই রীতি। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাব এই নীতি অনুসরণ করে আসছে। তার এহেন বিবৃতি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সুমহান গণতান্ত্রিক ঐহিত্য ও ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সচেতন দেশবাসী আশা করে প্রেস ক্লাবের সভাপতি দুঃখ প্রকাশ করে ওই বিবৃতি প্রত্যাহার করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মর্যাদা রক্ষা করবেন।’
১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক জাতীয় প্রেস ক্লাবের জায়গা স্থায়ী বরাদ্দ প্রদান, ১৯৭৯ সালে ক্লাবের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের একটি বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব হবে বহু মত ও বহু পথের মানুষের মিলনকেন্দ্র, মুক্ত চিন্তা ও স্বাধীন মত প্রকাশেল নির্ভরযোগ্য অঙ্গন। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলনে জাতীয় প্রেস ক্লাব ছিল আন্দোলনকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য স্থান।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, একটি মহল এই প্রতিষ্ঠানটিকে ক্ষমতাসীনদের একটি তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশের আপামর বিবেকবান মানুষকে চরমভাবে হতাশ করেছে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য।
আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনের নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, জহিরউদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুতফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, কামরুজ্জামান রতন, আবদুল মালেক, শিরিন সুলতানা, ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান মিন্টু, যুবদলের সাবেক নেতা কাইয়ুম চৌধুরী ও ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।