১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিদেশগামীদের বিমানভাড়া কমানোসহ জনশক্তি ব্যবসায়ীদের ৪ দফা

- ছবি নয়া দিগন্ত

বিদেশগামীদের বিমানভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্য পরিষদ।

শনিবার সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়াজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের সভাপতি এম টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আরিফুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে সহসভাপতি কাজী আব্দুর রহিম, নাসির উদ্দিন, ইনাম আব্দুল্লাহ মহসিন সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন সাইফুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক আহমাদুল্লাহ বাচ্চু, দফতর সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন, সাস্কৃতিক সম্পাদক মকবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে চার দফা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বক্তারা।

সেগুলো হলো, রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের জন্য এয়ার টিকেটে লেবার ফেয়ার প্রদান করা ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা; জনশক্তি প্রেরণ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদেরকে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা; স্মার্টকার্ড গ্রহণ করে বৈধভাবে কর্মী প্রেরণ করার সত্ত্বেও মানবপাচার আইনে এজেন্সির মালিকদের হয়রানি বন্ধ করা এবং রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে বাংলাদেশ ও ফরেন দূতাবাস সমূহে তালিকাভুক্ত করা।

জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার নির্ধারিত খরচে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান করছে। বর্তমানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের এয়ার টিকেটের মুল্য বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স অযৌক্তিকভাবে তিনি থেকে চারগুণ বৃদ্ধি করেছে। দেশের হাজার হাজার কোটি ডলার কষ্টার্জিত বৈদেশিক মূদ্রা বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো নিয়ে যাচ্ছে। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা হতে ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকায় আরবদেশ সমূহের এয়ার টিকেটের মূল্য হলেও বাংলাদেশ হতে একই গন্তব্যে এয়ার টিকেট এর মূল্য ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। অবিলম্বে বাংলাদেশ বিমানের মাধ্যমে হলেও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য লেবার ফেয়ার নির্ধারণ ও সেটির দৃশ্যমান বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

বিদেশে কোটি প্রবাসীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অবদান অসামান্য উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে জনশক্তি প্রেরণ খাত তথা রিক্রুটিং এজেন্সি সমূহ শত শত কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিতে পতিত হয়েছেন। যে সেক্টর থেকে বছরে ২২ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হয়; সেই সেক্টর যুগ যুগ ধরেই অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। এই সেক্টর শিল্প হিসেবে ঘোষণা না থাকায়, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সরকার ঘোষিত আর্থিক প্রনোদনা পাচ্ছে না। অবিলম্বে জনশক্তি প্রেরণ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করার জোর দাবি জানান তারা।

জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সরকারের যথাযথ বিধিবিধান প্রতিপালসহ বিএমইটি প্রদত্ত স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কর্মসংস্থান করে থাকে। পাসপোর্ট, ট্রেনিং সেন্টার, ভিসা সত্যায়নে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস, মন্ত্রণালয়/বিএমইটির যাচাই-বাছাই অনুমোদনসহ একজন কর্মীকে প্রেরণে বিভিন্ন কতৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও শুধুমাত্র রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শত শত মালিক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে মানবপাচার আইনের জামিন অযোগ্য ধারায় জেল জুলুম হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা এই হয়রানি চিরতরে বন্ধ চাই। স্মার্টকার্ড গ্রহণ করে কর্মী প্রেরণ করলে সেটি মানবপাচার আইনের আওতামুক্ত ঘোষণাসহ জাতীয় সংসদের মাধ্যমে মানবপাচার আইন-২০১২ সংশোধন চাই।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ২০০০ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস সমূহে তালিকাভুক্ত হতে তাদেরকে নানা ধরণের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসসহ বিভিন্ন দূতাবাসে দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ রিক্রুটিং এজেন্সি শত চেষ্টা করেও অদৃশ্য কারণে তালিকায় যুক্ত হতে পারছে না। সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি, বিএমইটি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও বহিঃবিশ্বের সকল দূতাবাসে অবিলম্বে তালিকাভুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement