১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মানবকণ্ঠ কর্তৃপক্ষকে ১০ দিনের আল্টিমেটাম ডিইউজের

-

করোনাকালে চাকরিচ্যুত দৈনিক মানবকণ্ঠের সাংবাদিক-কর্মচারীদের বকেয়াসহ বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে আগামী ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মানবকণ্ঠ সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে এক মানববন্ধনে এ আল্টিমেটাম দেন ডিইউজে সভাপতি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ দ্বীপ আজাদসহ অন্যান্য নেতারা।

মানবকণ্ঠের মালিক ও আশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়াকে উদ্দেশ্য করে ডিইউজে সভাপতি বলেন, ‘আপনার আরো অনেক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান আছে, আপনার সুনাম যেমন আছে দুর্নামও আছে। আমরা সেসব বলতে চাই না। একটি পত্রিকার প্রকাশক হিসেবে আপনাকে আমরা সম্মান করতে চাই। এখন আপনি আপনার সম্মান বজায় রাখবেন কি না তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে স্পষ্ট করবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি যদি চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের সমস্ত বকেয়া পরিশোধ না করেন, তাহলে আপনার জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। সাংবাদিকদের পথে নামিয়ে আপনি ঘরে বসে মজা দেখবেন তা আমরা হতে দেব না।’

বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, ‘পরিকল্পনা করে সাংবাদিকদের মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কি না ক্ষতিয়ে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, অতীতে যারা দালালী করেছে, তাদের করুণ পরিণতি আমরা দেখেছি। মানবকণ্ঠেও যারা দালালি করছেন, আপনাদের পরিণতিও দেখার অপেক্ষায় রইলাম।’

অবিলম্বে বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তা না হলে জায়গামতো ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী ১০ দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে আপনাদের ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে আমরা অবস্থা নেব। আপনাদের মিডিয়ার সনদ বাতিলের জন্য তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবো, আপনাদের মুখোশ উন্মোচন করেই ছাড়বো।’

ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘মালিকপক্ষের ন্যাক্কারজনক প্রবণতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। মিয়মিত বেতন-ভাতাদি পরিশোধ না করা প্রতারণার শামিল এবং আইনেরও লংঘন। আমরা আইন অমান্যকারির কঠোর সাজা যেমন চাই, তেমনি সব গণমাধ্যমে নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানাই।’

মানবকণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক মহিউদ্দিন পলাশ বলেন, গত ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষ না হতেই তারা তালিকা করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিক ছাঁটাই করেছে। ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় কোনোরকম নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করা হয়নি। দেয়া হয়নি কোনো অব্যাহতিপত্র। পরবর্তীতে বঞ্চিত সাংবাদিকরা আন্দোলনের ঘোষণা দিলে তাদের ডেকে মালিকপক্ষ দুই মাসের বেতন দিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর সমস্ত বাকি-বকেয়া পরিশোধ করা অথবা চাকরিতে পুনর্বহাল করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। পরবর্তীতে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সময়ক্ষেপণ করছে কর্তৃপক্ষ।’

মানবকণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক সাবিরা ইসলাম বলেন, ‘যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের ছয় মাস থেকে ২০ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে। এছাড়া অব্যাহতিপত্র এখনো না দেয়ায় টার্মিনেশন বেনিফিট পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা, চাকরিচ্যুতির পর বকেয়া পরিশোধ না করার ঘটনা মানবকণ্ঠে এটিই প্রথম নয়। পত্রিকাটি ২০১২ সালে যাত্রা শুরুর সময় সপ্তম ওয়েজবোর্ডে সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয়ার পর অষ্টম ওয়েজবোর্ড ঘোষণার পরপরই তা সরকারি সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর করা হলে সাংবাদিকদের সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে আজ অবধি কার্যকর না করে সরকারের সাথে প্রতারণা করে আসছে।’

ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল, নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ, ডিইউজের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান, দফতর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য রাজু হামিদ, সলিমুল্লাহ সলিম, ইব্রাহীম খলিল খোকন, ডিআরইউ’র সাবেক প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান খান, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি সনৎ বাবলা, সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দীন শাহাব প্রমুখ।

আরো উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জুবায়ের চৌধুরী, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজল হাজরা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমান আরা শিল্পী প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement