১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সুন্দরবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যে’র অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব উদ্বেগজনক : টিআইবি

-

আজারবাইজানের বাকুতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য’-এর তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার আগেই অনতিবিলম্বে সুন্দরবন ও এর আশপাশের সংরক্ষিত অঞ্চলে রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্রসহ চলমান সব প্রকল্প স্থগিত করে ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও সময়াবদ্ধ অন্যন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আজ এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব প্রমাণ করে, ‘রামপালসহ অন্যান্য প্রকল্পের কারণে সুন্দরবন ঝুঁকিতে আছে’- আমাদের দীর্ঘদিনের এমন আশংকা ও উদ্বেগ অমূলক ছিল না। আমরা মনে করি, কোনো ধরণের কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ছাড়াই সুন্দরবনের সন্নিকটে এধরণের ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সরকারি উদ্যোগে বৈশ্বিক ও স্থানীয় উদ্বেগ ও পরামর্শ উপেক্ষা করায় আজ এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আসন্ন বাকু মিটিংয়ের আগেই অনতিবিলম্বে রামপাল, তালতলি ও কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে এবং ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পন গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।”

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১১ স্মরণ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষা ও সুরক্ষায় সরকারী প্রচেষ্টা শক্তিশালী করার কথা ছিল। কিন্তু কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা ও যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই সুন্দরবনের মত বিশ্ব ঐতিহ্য ঝুঁকিতে রেখে রামপালসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সরকারের অঙ্গীকারের পরিপন্থী। ইউনেস্কোর এ প্রস্তাবের পর আর নির্বিকার থাকার সুযোগ নেই। অবিলম্বে সুন্দরবন সুরক্ষায় সম্ভাব্য সব ধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ইউনেস্কোর সুপারিশ আমলে নিয়ে অবিলম্বে তেল ছড়িয়ে পড়া ও রাসায়নিক দুর্ঘটনা নিরসনে জাতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ দিয়ে তা কার্যকর করার দাবি জানিয়ে ড. জামান বলেন, ‘সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব বাতিলে স্বল্পমেয়াদী আশু পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি ২০২০ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য সংস্থার ৪৪তম অধিবেশনের আগেই তাদের প্রস্তাবিত প্রয়োজনীয় সমস্ত কার্যক্রম গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় সুন্দরবনের মতো বৈশ্বিক সম্পদ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।’


আরো সংবাদ



premium cement