‘ভুয়া কৃষক সেজে ধান কিনছে সরকারের লোকজন’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:১৮
কৃষি-কৃষক-ক্ষেতমজুর বাঁচাও, দেশ বাঁচাও শ্লোগান তুলে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এ সরকারের আমলে প্রকৃত কৃষকরা ঠকছে। কারণ কৃষি খাতের দেয়া ভর্তুকি প্রকৃত চাষিদের হাতে পৌঁছায় না। সরকারের লোকজন ও দলীয় ক্যাডাররা ভুয়া কৃষক সেজে সস্তায় ধান কিনছে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের ঢাকা সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নয়টি কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগঠনের জোট কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের নয় দফা দাবিতে এ সমাবেশে এর সমন্বয়ক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্য রাখেন ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল হক, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, কৃষক ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন দুলাল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সচিবালয় অভিমুখে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গুলিস্তান হয়ে সচিবালয়ের কাছে এলে আইনশৃংখলা বাহিনী আটকে দেয়। সেখান থেকে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে আসেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের জনসংখ্যার সিংহভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে যুক্ত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অবদান রাখা প্রধান তিনটি খাতের একটি কৃষি। বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির ৪২.৭ ভাগই কৃষিতে নিয়োজিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অপার সম্ভাবনা ও বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান থাকার পরও শাসকরা দেশের কৃষি-কৃষক ও ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের উপেক্ষা করে আসছে। প্রতি বছর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অন্যতম অবদান রাখলেও জাতীয় বাজেটে প্রতি বছর কৃষি খাতের বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণমজুর দরিদ্র মানুষের জন্য সামান্য যা বরাদ্দ করা হয় তা প্রশাসনিক ও স্থানীয় দলীয় টাউট বাটপাররা লুট করে নিচ্ছে। অথচ এ দেশের কৃষি-কৃষক-ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুর না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। এই উদাসীনতা ও লুটপাটের কারণে দেশের কৃষক-ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরের জীবন আজ দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, কৃষকদের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তির জন্য তাঁরা তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন গড়ে উঠছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দেশে হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপিদের দায়মুক্তি দেয়া হলেও কৃষককে সামান্য ঋণের জন্য তাঁদের সার্টিফিকেট মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। তারা বলেন, কৃষকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সকল মামলা প্রত্যাহার ও ঋণ মওকুফ করতে হবে। কৃষকের ফসলের জন্য শস্যবীমা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে এ মানুষদের বাঁচাতে তাঁদের অধিকার খাস জমির বরাদ্দ, কৃষি শিল্প নির্মাণ করে সারাবছর কাজের নিশ্চয়তা তৈরি, পল্লী রেশন চালু, ৬০-ঊর্ধ্ব বয়সের মজুরদের জন্য পেনশন স্কীম চালু ও খাই খালাসি ধরনের আইন করে এনজিও ঋণ মওকুফ করতে হবে। জাতীয় বাজেটে সেফটি নেটের জন্য উপকার ভোগীর সংখ্যা ও বরাদ্দ বাড়াতে হবে।