২০১৮ সালে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৮০৬টি
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৩৮
২০১৮ সালে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ছিল ৮০৬টি। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছেন ৯০ জন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
২০১৮ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত। অন্যদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারসহ ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, কাজল দেবনাথ, সাংবাদিক বাসুদেব ধর, লায়ন জে এল ভৌমিক, মিলন কান্তি দত্ত, নির্মল রোজারিও, সঞ্জীব দ্রং, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, এ্যাড. পরিমল গুহ, মনিন্দ্র কুমার নাথ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বিগত বছরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার চালচিত্রে আরো বলা হয় যে, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ৯০ জন, লাশ উদ্ধার হয়েছে ১৫ জনের (প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান), কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শাস্তি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে ১০টি, অপহরণের ঘটনা ৩৯টি, নিখোঁজের ঘটনা ১৮টি, ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ১৪টি, ধর্ষণের ঘটনা ৩২টি, গণধর্ষণের ঘটনা ১৬টি, যৌন হয়রানীর ঘটনা ২৬টি, প্রতিমা চুরির ঘটনা ১৪টি, মন্দিরে চুরি/ডাকাতির ঘটনা ৭টি, প্রতিমা ভাংচুর ১৬৯টি, মন্দিরে হামলা/ভাংচুর/অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৫৮টি, শ্মশান/ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ২১টি, দখলের অপপ্রয়াস ১১টি, বসতবাড়ি, জমিজমা দখল/উচ্ছেদের ঘটনা ১২২টি, দেশত্যাগের হুমকির ঘটনা ১১৫টি, বসতঘর/সম্পত্তি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা/ভাংচুর/অগ্নিসংযোগ/লুটপাট/ডাকাতির ঘটনা ২৩৫টি, চাঁদাবাজীর ঘটনা ২০টি, হত্যার হুমকির ঘটনা ৩১টি, হত্যাচেষ্টার ঘটনা ২৩টি। শারীরিক হামলার শিকার হয়েছেন এ বছরে ৪৪৭ জন। দখলের/উচ্ছেদের অপতৎপরতায় ৫৮৮টি পরিবার/প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনার উল্লেখ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, দেশে ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন-নিপীড়নের ধারা আজো অব্যাহত আছে।
এতে আরো বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসনীয় ভূমিকায় বিগত নির্বাচনগুলোর সময়ের মতো দুঃসহ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। তবে এর পরেও ফেনীর সোনাগাজী, ঠাকুরগাঁও সদর, রাংগামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি কিয়দংশ, রাজস্থলী, কাপ্তাই, কাউখালিসহ কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ সির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথমবারের মতো সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদক নির্মূলের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের অঙ্গীকার করেছে, তা আমাদের আশ্বস্ত করেছে। জাতি এর দৃশ্যমান প্রতিফলন দেখতে চায়। তবে তিনি বলেন, ৭২-এর সংবিধানে না ফেরা ছাড়া দেশ সাম্প্রদায়িকতামুক্ত হতে পারবে না।