‘বদ্বীপ পরিকল্পনায় পুরোনো তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছ’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:২২, আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:১৮
বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখা এবং এ প্রক্রিয়ায় সরকার বহির্ভূত বিশেষজ্ঞ ও জনগণের মতামত গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন দেশের পরিবেশবাদীরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, বদ্বীপ পরিকল্পনায় পুরোনো তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে। তারা সরকারকে সর্তক করে দিয়ে বলেন, দেশের বিশেষজ্ঞসহ পরিবেশবাদীদের মতামত উপেক্ষা করে এধরণের প্রকল্প বাস্তবায়ন দেশের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আসবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) ও পরিবেশ-সপক্ষ সরকারি-বেসরকারি ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৪১টি সংগঠন ও সংস্থাসমূহের যৌথ উদ্যোগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলা হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাপা-বেন বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ ও বাংলাদেশ স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সম্মেলনের ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব প্রকাশ’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাপা’র সহ-সভাপতি, অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাপা’র সহ-সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান, অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ, বাপা’র যুগ্মসম্পাদক মিহির বিশ্বাস ও শরীফ জামিল। সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তাবনা পাঠ করেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় এক শতাব্দির সময় পরিধির একটি পরিকল্পনা চুড়ান্ত করতে এত তাড়াহুড়ার প্রয়োজন নেই। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বদ্বীপ আইন সংসদে উপস্থাপিত হয়নি। তারপরে বদ্বীপ পরিরকল্পনার দ্বিতয়ি খণ্ড এখনও জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়নি। তাই উন্মুক্ত পন্থার ভিত্তিতে বদ্বীপ পরিকল্পনার পরিমার্জনের এখনও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, বর্তমান সরকার অত্যন্ত বিচক্ষণ, তার বিচক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনমূখী ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা আশাবাদী।
অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, পানি একটি জটিল বিষয় আর পানি বিজ্ঞানও জটিল। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি আর নেদারল্যান্ডের ভূ-প্রকৃতি এক নয়। তাই তাদের পরীকল্পনার আদলে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীতে পলি জমা হয়- এটা একদিক থেকে অভিশাপ অন্যদিক দিয়ে আশীর্বাদও বটে। তাই সব দিক বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির আদলে বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রনয়ন করতে হবে।
ডা. মো. আব্দুল মতিন বদ্বীপ নিয়ে সরকারের ৮০টি প্রকল্পের ব্যাপারে এতো তড়ি-ঘড়ি না করে এ বিষয়ে যথেষ্ট উম্মুক্ত আলোচনা, পর্যালোচনা, স্থানীয় জনগনের সম্পৃক্ততা এবং প্রচারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এ বিষয়ে পুরাতন থিউরিকে রিভিউ এবং পূন:মূল্যায়ন করা জরুরী বলেও তিনি মনে করেন।
মিহির বিশ্বাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল আমরা উপলব্দি করতে পারছি। বদ্বীপ পরিকল্পানা সে ভাবে করা উচিৎ যেন জলবায়ু পরিবর্তন এর উপর প্রভাব না পড়ে।
শরীফ জামিল বলেন, বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়নে আরো তত্ব উপাত্য সংগ্রহ ও যাচাই বাচায়ের প্রয়োজন ছিল। জনগনের মাঝে যে ধরনের প্রচার-প্রচারণার দরকার ছিল তাও করা হয়নি। আমি মনে করি এ ধরনের একটি মেগা প্রকল্প প্রনয়নের পূর্বে এর রিভিউ অত্যন্ত জরুরী।