১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দলিত জনগোষ্ঠির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি

-

দেশে বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। দলিত জনগোষ্ঠীকে পিছনে ফেলে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। তাছাড়া মানবতাকে উপেক্ষা করে কোন জাতি উন্নয়নের শিখরে আরোহন করতে পারে না। আর এজন্য সংসদে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা বরাদ্দ করতে হবে। তবে এর পাশাপাশি দলিত জনগোষ্ঠী ও সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি।

বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) আয়োজনে শনিবার রাজধানীতে এক সম্মেলনে এঅভিমত ব্যক্ত করেন বিশিষ্টজনেরা। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’র প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার। সম্মেলনে সংহতি বক্তব্য রাখেন বিডিইআরএম এর উপদেষ্টা জাকির হোসেন, মুকুল রঞ্জন সিকদার। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডিইআরএম এর সহ-সভাপতি মনি রাণী দাস। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএম এর সভাপতি সুনিল কুমার মৃধা।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন তার বক্তৃতায় দলিত আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং ভারতের সংবিধান রচয়িতাদের মধ্যে অন্যতম ড. বি. আর. আম্বেদকরের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এসডিজির মূল স্লোগান ‘কাউকে পিছনে রাখা যাবে না’ এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করি। সবাইকে এগিয়ে নিতে পারলেই শুধুমাত্র প্রকুত উন্নয়ন সম্ভব। তিনি আরো বলেন, দলিত শব্দটি তিনি বিভিন্ন সাহিত্য কর্মে ব্যবহার করেছেন। শব্দটি তাদের জাতি পরিচয় বহন করে। সুতরাং তিনি শব্দটি বহাল রাখার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমান মার্যাদা ও অধিকার প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করে বিশ্বের বুকে জায়গা করে নিবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সুনিল কুমার মৃধা বলেন, ২০০৮ সালে বিডিইআরএম জন্ম এবং দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে বিডিইআরএম আজ এই অবস্থানে এসেছে। একটি জাতীয় পর্যায়ের সংগঠন হিসেবে বিডিইআরএম পরিচিতি ও স্বীকৃতি পেছেয়ে। কিন্তু অনেক দুঃখের সাথে এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশে দলিত জনগোষ্ঠীর কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নাই। তাই তাদের স্বীকৃতি আদায়ে সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান।

আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, জন্মগত পরিচয়ের কারণে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, মানবতাকে উপেক্ষা করে কোন জাতি উন্নয়নের শিখরে আরোহণ করতে পারে না। তিনি জানান দেশে বেকার দলিত যুবক-যুবতীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের পেশা পরিবর্তনে সহায়তা করা হচ্ছে।

মুকুল রঞ্জন শিকদার বলেন, বিডিইআরএম এর আন্দোলনের ফলে জাত-পাত ভিত্তিক বৈষম্য অনেকাংশে কমে এসেছে। বর্তমানে দলিত জনগোষ্ঠীর অস্পৃশ্যতা চর্চা প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গিয়েছে। তবে দলিত জনগোষ্ঠীকে এখানে থেমে না গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান।


আরো সংবাদ



premium cement