নির্বাচনের মাঠে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা বিএনপির
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২১:৫৭
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনের মাঠে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সংসদীয় আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার গ্রহণকালে শীর্ষ নেতারা এ নির্দেশনা দেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপিতে যুক্ত হয়ে প্রার্থীদের দিনভর দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সাক্ষারকালে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহাবুুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ২টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ২১টি সংসদীয় আসনে ১৭৮ জন এবং দুপুরের পর খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৬ টি সংসদীয় আসনে ৩শ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী সাক্ষাতকার দেন।
জানা গেছে, মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা প্রার্থীদের নানা ধরনের প্রশ্ন করেছেন। একই আসন থেকে একাধিক প্রার্থী থাকার বিষয়ে দল যাকে মনোনয়ন দেয় তার পক্ষে কাজ করা, মনোনয়ন দিলে এলাকায় নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত মাঠে টিকে থাকতে পারবেন কিনা ইত্যাদি প্রশ্ন করেছেন। এমনকি নেতাকর্মী-সর্মথকদের নিয়ে ভোট কেন্দ্র পাহাড়া দেয়ার মতো বিষয়েও প্রার্থীদের অবস্থান জানতে চেয়েছেন।
বরিশাল-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী আকন কুদ্দুসুর রহমান সাক্ষাকার শেষে বলেন, শীর্ষ নেতারা নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। যদি তৃণমূলের সাথে সম্পৃক্ত কর্মীবান্ধব প্রার্থী বেছে নেয়া হয়, তাহলে আমি মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছি।
খুলনা-৩ (খালিশপুর-খানজাহান ও দৌলতখান) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাক্ষাতকার গ্রহণের সময় আমরা আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা মনোযোগ সহকারে তা শুনেছেন। তারেক রহমান বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
আমাদেরকে তিনি বলেছেন যে, ‘এবারের নির্বাচন বিগত নির্বাচনের মতো নয়। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো ব্যক্তির হয়ে নয় ধানের শীষ মার্কার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। অনেকেই যোগ্য লোক আছেন কিন্তু মনোনয়ন দেয়া হবে একজনকে। সবাইকে তারই পক্ষে কাজ করতে হবে।’
কিভাবে নেয়া হলো সাক্ষাতকার এ প্রশ্নের উত্তরে বরিশাল-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুলাল হোসেন বলেন, বরিশাল ১, ২ ও ৩ আসনের প্রার্থীদের একসাথে ডাকা হয়েছে। আমরা কার্যালয়ের দোতলায় গিয়ে বসার পর প্রার্থীদের নাম পড়ে শুনান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এরপর তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে যুক্ত রয়েছেন। তিনি আপনাদের সাথে কথা বলবেন। এরপর তারেক রহমান ১৫/২০ মিনিট সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকাসহ নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। পরে অন্য নেতাদের বক্তব্য শেষে তারা চলে আসেন।
বরিশাল-৫ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ বলেন, কারো প্রার্থীতাই চূড়ান্ত করা হয়নি। দলের দুর্দিনে সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে হাইকমান্ড।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাক্ষাতকার দিতে এসে সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাবেক এমপি শহিদুল হক জামাল এবং ইলেন ভুট্টো নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পরেন।
এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপির চেয়ারপারনের গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সঙ্গে তাদের অনুসারি নেতাকর্মী ও সর্মথকরা ভীড় করেন। তবে নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের স্লোগান দেননি। কার্যালয় এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ এবং বেলা আড়াইটা থেকে কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হবে।