২০ রোজার মধ্যে বেতন-বোনাসের দাবি গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৫ মে ২০১৮, ১৭:১১, আপডেট: ২৫ মে ২০১৮, ১৭:৩৯
২০ রোজার মধ্যে বেসিক বেতনের সমান ঈদ বোনাস পরিশোধ এবং ন্যুনতম মজুরি আঠারো হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা। একই সাথে তারা কালক্ষেপণ বন্ধ করে জুলাই মাসের মধ্যে মজুরি বোর্ডের সুপারিশ ঘোষণা করার দাবি জানান। তা না হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় মালিকদের বহন করতে হবে হুঁশিয়ারি দেয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এ আহবান জানান। সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র কুমার দাস, অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ প্রমূখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দুই ঈদে বেসিক বেতনের সমান বোনাস দেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও সরকার শ্রম আইনে বোনাসের বিষয় উল্লেখ না করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু ঊৎসব বোনাস কোন দয়া নয়, এটা শ্রমিকের অধিকার।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রতি বছর রোজার শুরুতে শ্রম মন্ত্রণালয় মালিকদের সাথে বৈঠক করে সকল পোষাক শিল্প শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু মালিকরা ঈদের ছুটির পুর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত শ্রমিকদের বোনাস-বেতন পরিশোধ না করে শ্রমিকদের জিম্মি করে। ঈদের আগ মুহুর্তে শ্রমিকরা যখন স্বজনদের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য উদগ্রিব হয় তখন মালিকরা শ্রমিকদের বোনাস না দিয়ে বকশিশ হিসাবে কিছু টাকা দিয়ে আর আংশিক বেতন দিয়ে শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করে। শ্রমিকদের তখন প্রতিবাদ করার কোন সুযোগ থাকেনা। সরকার এইসব প্রতারক মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। পুর্ণ বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শ্রমিকরা অল্প ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে যায়। এতে প্রায়শই তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ অথবা পঙ্গুত্ববরণ করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ন্যুনতম মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণা দেয়া হলেও এর প্রায় ২ মাস পর ১৯ মার্চ তারিখে মজুরি বোর্ডের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল তারিখে মজুরি বোর্ডের নির্ধাবিত বৈঠক মালিক পক্ষের আবেদনে স্থগিত করা হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইনের ১৩৯ (২) ধারা অনুসারে মজুরি বোর্ড গঠনের ছয় মাসের মধ্যে নতুন মজুরির সুপারিশ করবে। সেই হিসাবে মজুরি বোর্ডকে জুলাই‘১৮ মাসের মধ্যে নতুন মজুরি কাঠামোর সুপারিশ করতে হবে। আথচ মজুরি বোর্ডে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বিজিএমইএ এর সভাপতি বলছেন যে তাদের হাতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় আছে। বিজিএমইএ এর সভাপতির এই বক্তব্য ও মজুরি বোর্ডের বৈঠক স্থগিত করানো মুলত কালক্ষেপনের ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কালক্ষেপণ না করে জুলাই মাসের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আঠারো হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে। এছাড়া সকল শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।