০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১, ৪ শাবান ১৪৪৬
`

ঢাবিতে ‘আলুঘাটি’ উৎসবের নামে একই সংগঠনের পাল্টাপাল্টি ঘোষণা, দুই পক্ষের উত্তেজনা

-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বগুড়া স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি সংগঠনের পক্ষে দু’টি পক্ষ আলুঘাটি উৎসব করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পাল্টাপাল্টি এমন কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাবিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী আলু ঘাটি উৎসবকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি দেয়া দিয়েছে তারা। কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া এক পক্ষের আলু ঘাটি উৎসব আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি, তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মী। একই সংগঠনের অন্য পক্ষ ৮ ফেব্রুয়ারি টিএসসিতে এই উৎসব করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদেরও দাবি- তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মী। এদিন অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

অভিযোগ উঠেছে, বহিরাগতরা বগুড়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নাম ব্যবহার করে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে আলু ঘাটি উৎসবের নামে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদাবাজি শুরু করছে।

পাল্টাপাল্টি এই কর্মসূচিকে ঘিরে এরই মধ্যে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একই সংগঠনের নামে আলাদা আলাদা ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টারও ঝুলানো হয়েছে। তবে, আলাদা আলাদা দু’টি কর্মসূচিকে ঘিরে ক্যাম্পাসে বগুড়ার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একে অপরের বিরুদ্ধে আলু ঘাটি উৎসব বাঞ্চাল করা নিয়ে নানা হুমকি-ধামকিও দেয়ার অভিযোগও উঠেছে। ছিড়ে ফেলা হয়েছে ব্যানার পোস্টারও।

নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজকদের অভিযোগ, সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষটি তাদের প্রচারণার ব্যানার ও পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। একইসাথে তাদের কর্মীদের নানাভাবে হুমকি ধামকিও দেয়া হচ্ছে। আয়োজকদের অন্যতম সংগঠক ও ঢাবি ছাত্রদলের যোগাযোগ সম্পাদক জুবায়ের আলী সাবেক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তাদের পোস্টার ব্যানার ছেড়ার অভিযোগ তুলেছেন। একই সাথে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের তাদের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করতে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে।

ঢাবির ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিউল এবং সমাজ কল্যাণ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বিল্লালকে ডেকে তাদের এই প্রোগ্রাম থেকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। অন্যথায় তাদের দেখে নেয়া হবে বলেও হুমকী দেন তারা।

এ ব্যাপারে জুবায়ের আলী নামের একজন বলেন, ক্যাম্পাসের বহিরাগত কিছু শিক্ষার্থী বগুড়ার সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে টিএসসিতে একটি আলু ঘাটি উৎসব করার ঘোষণা দেন, যেখানে বগুড়ার নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। এ কারণেই আমরা নিয়মিত শিক্ষার্থীরা নিজেরা আরেকটা প্রোগ্রামের আয়োজন করি। সেখানে আমাদের কর্মীদের নানাভাবে হুমকি ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আর যারা এসব করছেন তারা ক্যাম্পাসের অনিয়মিত শিক্ষার্থী। আমার প্রশ্ন হলো অনিয়মিতরা কোন মতলবে হঠাৎ করে এসে আবার নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে আলু ঘাটি উৎসবের ঘোষণা দেয়। একই সাথে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বগুড়া সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। আপনি ওদের আয়োজকদের দেখলেই বুঝতে পারবেন ওরা কারা। তাদের বেশিরভাগই ক্যাম্পাস থেকে কমপক্ষে ১০ বছর বেড়িয়ে গেছেন। আর ক্যাম্পাসে বগুড়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কোনো কমিটিও নেই। সুতারাং বহিরাগতদের বগুড়া অ্যাসেসিয়েশনের নাম ব্যবহার করার কারণ কি?

অন্যদিকে, বহিরাগত পক্ষের আয়োজকদের দাবি তারা সবাই মিলেই আলু ঘাটি উৎসবটি করছেন। একইসাথে অন্যদের পোস্টার ব্যানার ফেস্টুন ছেড়েননি বলেও দাবি করেন তারা। অন্যদের ভয়-ভীতি দেখানোর বিষয়টিও অস্বীকার করেন তারা।

এ বিষয়ে তাদের অন্যতম আয়োজক সাফিউল আলম বলেন, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংগঠনটি স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ন্ত্রণে। তাই আমরা তাদেরটা প্রত্যাখান করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একই সংগঠনের আলাদা প্রোগ্রাম হলেও আমরা উভয়ে উভয়ের প্রোগ্রামে যাবো।

নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা আয়োজন করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম জুবায়ের আলী মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক।

জুবায়ের আলী বিশ্বধর্ম তত্ত্ব বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী, সংস্কৃত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো: শিপন মিয়া, অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিউ, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খাতিজাতুল কুবরা নিশী, সমাজ কল্যাণ বিভাগের মাস্টারের শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন।

আর বহিরাগতদের পক্ষে অন্যতম আয়োজক সাফিউল আলম ২০০৫-২০০৬ সালের শিক্ষার্থী, তিনি মীরপুরের সাবেক ঝুট ব্যবসায়ী। আরেক আয়োজক ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আনোয়ার পারভেজ ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রনি, আইইআরের ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী আল মামুন ইলিয়াস, তিনি যাকাত ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা। আরেকজন ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের তথ্য বিষয় সম্পাদক মাহমুদ হোসেন কাজল। কাজলের নামে অতীতে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

ঢাবিতে একই সংগঠনের পাল্টপাল্টি প্রোগ্রাম নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাবিতে এই ধরণের প্রোগ্রাম করতে কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। এ ঘটনায় যেকোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না। এ প্রোগ্রাাম করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement
মূল্যস্ফীতি সহনীয় হতে আরো ২-৩ মাস অপেক্ষা করতে বললেন অর্থ উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতেই হতে পারে ট্রাম্প-মোদি বৈঠক তথ্য হালনাগাদ না করলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের লকার ফ্রিজ করতে দুদকের চিঠি নওগাঁয় বিস্ফোরক মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ২ বাংলাদেশ শিবিরে ফিরছেন মোশতাক আহমেদ সিলেটে পূজায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা : আটক ছাত্রলীগ নেতা মুচলেকায় মুক্ত! গলাচিপায় যুবকের লাশ উদ্ধার আবারো প্রশ্নবিদ্ধ আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নতুন ভোটার প্রায় ৫০ লাখ, মৃত ১৫ লাখ বাদ তারেক রহমান ও আবদুস সালামের রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা বাতিলের রায় প্রকাশ

সকল