২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
নিউইয়র্কে মতবিনিময় সভায় কাদের গনি চৌধুরী

‘পতিত সরকারের দোসরদের চারপাশে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়’

নিউইয়র্কে মতবিনিময় সভায় কাদের গনি চৌধুরী - সংগৃহীত

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র দেশের ভেতর ও বাইরের। পতিত সরকারের দোসরদের চারপাশে বসিয়ে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়।’

শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব বলেন। শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি আহসান উল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জাকির এইচ চৌধুরী, আবদুর রহিম বাহার, নুর আলম, মাসুদ রানা,খান মোহাম্মদ টিপু, জাহাঙ্গীর আলম,মাহমুদুল হক, সালেহ আহমেদ রুমেল, মশিউর রহমান রুবেল,হারুন রশীদ, মোজাম্মেল হোসেন সাগর।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আল মামুন সুমন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে ফ্যাসিবাদের দালালরা। ডিসি হিসেবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের অনেকই ফ্যাসিবাদের দোসর। সচিব, উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় সকলেই শেখ হাসিনার দোসর। এদের না সরালে সরকারকে বিপদে পড়তে হবে। বিভিন্ন বাহিনী থেকে র-এর অ্যাজেন্টদের সরাতে হবে। না হয় ফ্যাসিবাদ আবার ঠুঁস করে ঢুকে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আজ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান তারেক রহমানের। তার নির্দেশেই আমরা জীবনবাজি রেখে রাজপথে নেমে এসেছিলাম। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তারেক রহমানকে মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। তাকে এখনো আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। বিভিন্ন রকম টালবাহানা চলছে। কোনোরকম টালবাহানা দেশের মানুষ সহ্য করবে না। আমরা পরিষ্কার করে সরকারকে বলে দিতে চাই, সব মামলা প্রত্যাহার করে দ্রুত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে দায়ের সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’

সাংবাদিক, পেশাজীবী ও আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মামলার প্রসঙ্গ টেনে পেশাজীবীদের এ নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দেয়া উদ্দেশ্যমূলক সমস্ত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিতর্কিত করার নানান ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কেউ বিগত দখলদার সরকারের মতো এই সরকারকে ক্ষমতা দখলে রাখার কুপরামর্শ দিচ্ছে। এই ফাঁদে পা দেয়া হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী। বিএনপি বলেছে, একটি যৌক্তিক সময় সরকারকে অবশ্যই দেবে। যৌক্তিক সময় মানে এই না যে তারা অনেক বেশি সময় নিয়ে আমাদেরকে পূর্বের অভিজ্ঞতার মতো অন্য কিছুর মধ্যে জড়িয়ে দেবে। সেটা করা যাবে না। যত দ্রুত নির্বাচন দেয়া যাবে, ততই দেশের জন্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে।’

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘পাঁচ বছর পরপর নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়। নির্বাচন ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন চালু করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। মানুষের অধিকার, মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য প্রতিষ্ঠার ও বৈষম্য দূর করে মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য অতি দ্রুত আলোচনা করে সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার লোকগুলো ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা বিভিন্ন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। গত ১৭ বছরে বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। শুধু বিএনপিই নয়, সাংবাদিক-পেশাজীবীরাও রেহাই পাননি। ব্যবসায়ীদের নানাভাবে ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। গত ১৫ বছরে ২৪টি বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে প্রায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা আনতে একটি সুনির্দিষ্ট, সময় উপযোগী, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন জরুরি হয়েছে।’

জাকির এইচ চৌধুরী বলেন, ‘জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করার পর দম ফেলার সুযোগ পেয়েছেন। এই সুযোগ একদিনে তৈরি হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে তারা প্রশাসন, বিচার বিভাগ, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সবকিছু কুক্ষিগত করেছিল। শেখ হাসিনা সরকার ভেবেছিল সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। অত্যাচার-নিপীড়ন করে ক্ষমতা ধরে রেখে সম্পদের পাহাড় গড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।’

২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি বিএনপি নেতা তৌহিদ ইসলামকে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার দু’দিন পর ৩০ জানুয়ারি বেগমগঞ্জে রাস্তার পাশে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement
নিজেদের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করল যুক্তরাষ্ট্র! হাসিনা যত টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে ১০০টি পদ্মা সেতু তৈরি করা যেত : টুকু খুলনায় হত্যাসহ ৪ মামলায় সালাম মুর্শেদীর জামিন নামঞ্জুর কারো লুটপাটের দায়ভার আমি নেব না : মেজর হাফিজ ‘যারা চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করছে দেশের মানুষ তাদেরকেও বর্জন করবে’ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার দিয়ে এনসিএলের ফাইনালে ঢাকা মেট্রো দেবিদ্বারে গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ রক্ষার দাবি স্থানীয়দের ‘পোল্যান্ড গেলে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা হবে’ জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ : সিলেটে জামায়াত আমির নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা প্রয়োজন তুরস্ক করবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিদান উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক

সকল