১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

যাত্রীরা হুঁশিয়ার!

যাত্রীরা হুঁশিয়ার! - নয়া দিগন্ত

ভয়কে জয় করার বাংলাদেশে এক মাস পার হলো। মূলত ১৬ জুলাই আবু সাইদের বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়ার মাধ্যমে দেশের মানুষ ভয়কে জয় করতে শেখে । তারপর আর থামতে হয়নি। ১৮, ১৯ জুলাই আর এর পর যারা ঢাকার রাজপথ দেখেছেন, তারা রাস্তায় নেমে থাকা ছাত্র-ছাত্রী, নারী-পুরুষ, শ্রমিক-রিকশাওয়ালাদের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলে দেখেছেন, তারা জানেন, সেখানে ছিল ভয়হীন প্রতিবাদের অভিব্যক্তি।

আজ দেশ পুনঃগঠনে প্রত্যেকে নিজ মতামতে সরব। অনেক দিন পর প্রাণখুলে কথা বলতে পারছি। সোসাল মিডিয়ায় লিখছি। যেসব ক্যামেরা বুম পরীমণি, বুবলি, সাকিব খানের পরিবারের পিছনে ছুটত, তারা ছুটছে রাজনৈতিক খবরের পেছনে। আর আমরাও খবরেরে শিরোনাম দেখে মত-দ্বিমতের ব্যাক্যালাপে ব্যস্ত।

এ গণজোয়ার ছিল কিসের বিরুদ্ধে? শাসনযন্ত্রের সব অংশ কব্জা করে চেপে বসা এক রক্তপিপাসু শাসককে মাত্র কয়েক দিনের আন্দোলনে কেন উৎখাত করা সম্ভব হলো?

প্রথমত, শিক্ষা নিয়ে ছাত্র ও অভিভাবকের হতাশা। পতিত সরকার দেশের শিক্ষাব্যাবস্থার মাধ্যমিক পর্যায় থেকেই এমন অবস্থা করেছিলো যে পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখার কিছুই ছিল না। তারপর পরীক্ষাগুলোতে চলছিল প্রশ্নফাঁসের হিড়িক। অন্যদিকে এই শিক্ষাব্যাবস্থাকেই সবচেয়ে অধুনিক বলা হচ্ছিল সরকারের পক্ষ থেকে।

দ্বিতীয়ত, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির কারনে হিমশিম খেতে হচ্ছিল সমাজের বড় একটা অংশের। দেশের অর্থনীতির এমন বেহাল অবস্থায় সরকারের আমলা ও মদদপুষ্টদের সম্পদের পাহাড় একটি বড় অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে। কাছাকাছি সময়ে এক দুদক কর্মকর্তার ছাগলকাণ্ড, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীরের দুর্নীতি মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হওয়ায় জনরোষ আরো বাড়ে।

তৃতীয়ত, কোটা আন্দোলন বিষয়ে সরকার প্রধানের প্রহনসনমূলক উক্তি। এরকম উক্তি তিনি দেশের বিভিন্ন সমস্যায় বারবার করেছেন। গুরুতর সমস্যার দিয়েছেন হাস্যকর সমাধান : কখনো কাঠালের রেসিপি, কখনো বা মরিচ সংরক্ষণ ফর্মুলা।

চতুর্থত, অরাজনৈতিক দাবিতে ছাত্ররা নেমেছিল, তাদের উপর নজিরবিহীন দমনপীড়ন চালানো হয়েছে। ছাত্রীদের গায়ে হাত তোলা, এমনকি হেলিক্পটার থেকে গুলি করে ঘরে অবস্থানরত নাগরিকদেরও হত্যা করা হয়েছে। যার কারণে জনগণের দেয়ালে পীঠ ঠেকে গিয়েছিল। যার ফলে কেবলমাত্র এই খুনি সরকারের পতনই ছিল এর একমাত্র সমাধান। সুতরাং ৫ আগস্ট অনিবার্য ছিলে।

তবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি দেশের সামনে রয়েছে চ্যালেঞ্জ অনেক। একটি আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে যাওয়া সরকার পতনের পর তার ক্ষত সহসাই উন্মুক্ত হয়ে গেছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার তার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য সংবিধানসহ রাষ্ট্রের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে তাদের সুবিধামতো পরিবর্তন করেছে, যা আর মেরামতের পর্যায়ে নেই। প্রয়োজন ঢেলে সাজানো বা পুনঃনির্মাণ। এ অবস্থায় মতামত বা ভিন্নমত থাকবে। তবে এসকল বিতর্কের ফাঁকফোকর গলে যেন ফ্যাসিবাদের অনুসারীরা ছোবল না দিতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ক্ষমতার চারপাশে সবসময় কিছু সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী থাকার চেষ্টা করে, এদের কোনো দল নেই, আদর্শ নেই, সকল সময় ক্ষমতার পদলেহন করতে এরা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

সর্বোপরি বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে জাতিগতভাবে আমাদের একটা বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে, আমরা কোন মানদণ্ডে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো? রাজনীতির পুরোনো বিতর্ক নিয়ে- না সকল মত ও পথের ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে?


আরো সংবাদ



premium cement
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আসলে কী হয়েছিল? মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করুন : তথ্য উপদেষ্টা বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টায় নজর ভারতের এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট নাটোরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে যুবদল নেতাসহ গ্রেফতার ৬ বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ ভিসা সমস্যার সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা মার্চেন্ট শিপিং ফেডারেশনের শহীদ পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ, আহতরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম

সকল