‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ বনাম ‘আদিবাসী’: একটি পর্যালোচনা
- মোহাম্মদ আজিজুল হক
- ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৬:১৬
আজ ৯ আগস্ট। দিনটি জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। দিবসটি এলেই বাংলাদেশের কিছুসংখ্যক কথিত বুদ্ধিজীবী মায়াকান্না জুড়ে দেন যে, কেন সরকার এ দেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে মেনে নিচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা।
জাতিসঙ্ঘের সংশ্লিষ্টতা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেসব জনগোষ্ঠীকে জাতিসঙ্ঘ আদিবাসী মনে করে, সেসব জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে জাতিসঙ্ঘ সব সময় সোচ্চার। কখনও আইএলওর মাধ্যমে, কখনও ইন্ডিজিনাস পিপলস কমিটি অথবা মানবাধিকার পরিষদের মাধ্যমে সংস্থাটি সোচ্চার রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনটি ডকুমেন্ট বা দলিলের সাথে পরিচিত হওয়া জরুরি:
ক. ১৯৫৭ সালের আই এলও কনভেনশন নম্বর ১০৭
এটি ১৯৫৭ সালের ২৬ জুন আইএলওর সাধারণ পরিষদের ৪০তম অধিবেশনে অনুমোদিত কনভেনশন। বিষয়, বিভিন্ন দেশের আদি-অধিবাসী বা ইন্ডিজেনাস বা উপজাতীয় জনগণের নিরাপত্তা এবং জাতি-রাষ্ট্রের ভেতর, বৃহত্তর জনগণের সাথে আত্তীকরণ। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এই কনভেনশনটি অনুমোদন (জবঃরভু) করেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগেই তৎকালীন সরকার কনভেনশনটি অনুমোদন করে।
খ. ১৯৮৯ সালের আইএলও কনভেনশন নম্বর ১৬৯
পরে উপজাতীয় জনগোষ্ঠী নিয়ে আলাপ-আলোচনা, ঘটনা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার একপর্যায়ে জাতিসঙ্ঘের কাছে ১৯৫৭ সালের ১০৭ নম্বর কনভেনশনটির নবতর বা যুগোপযোগী সংস্করণের মাধ্যমে ১৯৮৯ সালের ২৭ জুন আরেকটি কনভেনশন গ্রহণ করে, যার নম্বর ১৬৯ । ১৯৮৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সরকার, ১৬৯ নম্বর কনভেনশন (সঙ্গত কারণেই) অনুমোদন বা রেটিফাই করেনি। অতএব এ কনভেনশনটি বাংলাদেশ মেনে চলতে বাধ্য নয়। বাংলাদেশের মতে, দেশে কিছু ট্রাইবাল (উপজাতি) থাকলেও, আদিবাসী নেই।’
গ. জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্র বা ডিক্লারেশন
আইএলও এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ না নিলেও, জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ সক্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ এক রেজিউলিশনে (নম্বর ৬১/২৯৫) ইউনাইটেড নেশনস ডিক্লারেশন অন দি রাইটস অব ইন্ডিজিনাস পিপলস গ্রহণ করে। ঘোষণাটির তাৎপর্য পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় হিউম্যান রাইটস কমিশন বা পরবর্তী ‘হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল’কে। বিস্তারিত পর্যালোচনার পর ‘ইউনাইটেড নেশনস ডিক্লারেশন অন দি রাইটস অব ইন্ডিজিনাস পিপলস’-এর চূড়ান্ত ভাষ্য গৃহীত হয়। বাংলাদেশ এটিও গ্রহণ বা অনুমোদন করেনি।
তুলনার প্রথম বিষয় : উভয় কনভেশনের মূল প্রতিপাদ্য
প্রাসঙ্গিক দু’টি আইএলও কনভেনশনের তাৎপর্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাকে কিভাবে প্রভাবিত করে সে বিষয়টি বিবেচ্য।
কনভেনশন ১০৭ এবং কনভেনশন ১৬৯ উভয়ের মূল প্রতিপাদ্যে তিনটি পয়েন্ট আছে।
কনভেনশন ১০৭ এর মতে; উপজাতি জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় সমকক্ষ হতে সহায়তা করা হবে। আর কনভেনশন ১৬৯ এর মতে; উপজাতী জনগোষ্ঠী, চিরস্থায়ী জনগোষ্ঠী এ, ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং এ ধারণাই বিকশিত করা হবে। দ্বিতীয়ত, কনভেনশন ১০৭ এর মতে, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে, রাষ্ট্রকর্তৃক সহায়তা করা। বিপরীত পক্ষে কনভেনশন ১৬৯-এর মতে, সর্বক্ষেত্রেই উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং রাষ্ট্র সেটা নিশ্চিত করবে। তৃতীয়ত, কনভেনশন ১০৭ এর মতে, আত্মপরিচয় নিরূপণের ক্ষেত্রে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যাবে না। অন্য দিকে কনভেনশন ১৬৯-এর মতে, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয় নিরূপণের ক্ষেত্রে, তারা মূল জাতিগোষ্ঠী থেকে ভিন্নতর, নিজস্ব সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক মানদণ্ডে বিবেচিত হবে।
তুলনার দ্বিতীয় বিষয় : উভয় কনভেনশনে ভূমি সংক্রান্ত বক্তব্য
প্রথমত, কনভেনশন ১০৭ এর মতে, ভূমির ওপর উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে, যা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে কনভেনশন ১৬৯ এর মতে : ঐতিহ্যগতভাবে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মালিকানার পাশাপাশি তাদের জীবনধারণ ও বিবিধ কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত জমির ওপর অধিকার এবং দখল রাষ্ট্র্র কর্তৃক সংরক্ষণ করা হবে।
দ্বিতীয়ত, কনভেনশন ১০৭ এর মতে রাষ্ট্র, নিরাপত্তা বা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জমি ব্যবহার করতে পারবে, তবে এ ক্ষেত্রে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর স্বাধীন মতামত গ্রহণ করতে হবে এবং যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিপরীত-পক্ষে, কনভেনশন ১৬৯ এর মতে: উপজাতীয় জনগোষ্ঠী যে ভূখণ্ডে বাস করে, সে ভূখণ্ডে কোনো খাস জমি থাকবে না; এমনকি প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রেও, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর মতামত প্রাধান্য পাবে। তৃতীয়ত, কনভেনশন ১০৭ এ, উপজাতি নয়, এমন মানুষ জমির মালিক হতে পারবে কি না এ প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা নেই। অথচ কনভেনশন ১৬৯ এর মতে: উপজাতীয় জনগোষ্ঠী যে ভূখণ্ডে বাস করে, সে ভূখণ্ডে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর বাইরের কোনো মানুষ, জমির মালিক হতে পারবে না এবং এ বিষয়টি রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। চতুর্থত, উভয় কনভেনশনে বিচার-আচারসংক্রান্ত বক্তব্যে, কনভেনশন ১০৭ এর মতে: উপজাতীয় জনগোষ্ঠী দেশের প্রচলিত ধারায় বিচারযোগ্য হবেন। অন্য দিকে কনভেনশন ১৬৯ এর মতে : উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর কোনো ব্যক্তি অপরাধ করায় কারাভোগের দণ্ড দেয়া হলে কারাভোগ করবে। কিন্তু যদি অন্য কোনো দণ্ড প্রযোজ্য হয়, তাহলে বাংলাদেশে প্রচলিত ধারার দণ্ড না দিয়ে- তাকে, উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর নিজেদের মধ্যে প্রচলিত ধারায় শাস্তি প্রদানকে প্রাধান্য দিতে হবে।
জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্রের বক্তব্য
জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্র-২০০৭ এ যে ১৪টি অধিকারের ওপর গুরুত্ব¡ দেয়া হয়েছে সেগুলি হলো:
১. অভ্যন্তরীণ এবং স্থানীয় বিষয়াবলির ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার। ২. ভূমি ও ভূখণ্ডের ওপর অধিকার। ৩. উপজাতীয় তথা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি ও ভূখণ্ডের ওপর সামরিক কার্যক্রম বন্ধের অধিকার। ৪. উপজাতীয় তথা আদিবাসীদের ভূমি ও ভূখণ্ডের ওপর থেকে তাদেরকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ থেকে রেহাই পাওয়ার অধিকার (এমনকি ক্ষতিপূরণ প্রদানপূর্বক স্থানান্তরিত হলেও, সেটা নিরুৎসাহিত হওয়ার অধিকার)। ৫. স্বাধীন সম্মতি তথা পূর্ব-অবহিতকরণপূর্বক সম্মতি ছাড়া, উপজাতীয় জনগোষ্ঠী থেকে হরণ করে নেয়া বা যে কোনো নিয়মে নিয়ে যাওয়া ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের পুনরুদ্ধার ও সম্পদ ফেরত পাওয়ার অধিকার। ৬. মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার। ৭. নিজস্ব ভাষায়, নিজস্ব সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠার অধিকার। ৮. উন্নয়নের অধিকার প্রয়োগ করার জন্য অগ্রাধিকার তালিকা ও কর্মকৌশল নির্ধারণ ও গ্রহণের অধিকার। ৯. নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ঔষধি ও স্বাস্থ্যসেবা সংরক্ষণের অধিকার। ১০. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রথাচর্চা ও পুনরুজ্জীবনের অধিকার। ১১. নিজেদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, নৃতাত্ত্বিক উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করার অধিকার। ১২. জাতিসঙ্ঘের সহায়তা কামনা বা ইন্টারভেনশনের মতো হস্তক্ষেপ কামনা; জাতিসঙ্ঘ এবং অন্যান্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা এ কনভেনশনের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা বা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্র তথা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে, ওই নিমিত্তে জনমত গঠন বা ইংরেজি পরিভাষায় মোবিলাইজেশন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বা কারিগরি সহায়তার ফোরাম গঠন করার অধিকার। ১৩. ট্রান্সবর্ডার বা সীমানা রেখার উভয় পাড়ে বসবাসরত একই প্রকারের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগ, সহযোগিতা বৃদ্ধির অধিকার এবং এই কাজে রাষ্ট্রের সহযোগিতা ও নিশ্চয়তা পাওয়ার অধিকার।
জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্রের প্রথম তাৎপর্য
প্রথম তাৎপর্য : আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার সম্পর্কিত; সাম্প্রতিককালের একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে। যুক্তরাজ্যের উত্তর অংশে অবস্থিত স্কটল্যান্ড, নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবায়ন করেছে। সেখানে রেফারেন্ডাম হয়েছে। স্কটল্যান্ডের জনগণ ভোট দিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের মেজরিটি ভোটার এ বলে ভোট দিয়েছেন যে, ‘আমরা স্কটল্যান্ডবাসী স্বাধীন রাষ্ট্র হতে চাই না; বরং আমরা ইংল্যান্ডের সাথে সহাবস্থান করে, যুক্তরাজ্যে অন্তর্ভুক্ত যেমন আছি, তেমন থাকতে চাই।’
আমরা কি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যত্র বসবাসরত উপজাতি জনগণকে, জেনে-শুনে আদিবাসী স্বীকৃতি দেবো? আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দিলে তাদের একটি সুযোগ দিতে হবে। সুযোগটি হলো এই যে, তোমরা ভোট দাও এবং তোমরাই নির্ধারণ করো যে, তোমরা কি একটি স্বাধীন দেশ হবে, নাকি বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রদেশ হবে, নাকি যেমন আছে তেমন থাকবে, নাকি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রদেশগুলোর সাথে মিলিত হয়ে, ভারতের অংশ হয়ে যাবে?
বাংলাদেশ সরকার যদি আনুষ্ঠানিকভাবে কনভেনশন ১৬৯ এবং ঘোষণাপত্র-২০০৭ মেনে নেয় এবং রেটিফাই করে, তাহলে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী জনগণ ঠিক এ অধিকারটির বাস্তবায়ন চাইবে এবং বাস্তবায়নের নিমিত্তে জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতা চাইবে। এখন সম্মানিত উপজাতীয় অনেক নেতাই বলাবলি করছেন যে, তাদেরকে আদিবাসী ঘোষণা দিলে, বাংলাদেশের কোনো অসুবিধা হবে না। কারণ এটি একটি আলঙ্কারিক উপাধি এবং সম্মানজনক উপাধি। আপনারা বাঙালি আমরা আদিবাসী-এ তফাতটুকু আমরা উপজাতি জনগণ আপনাদের মুখ থেকে শুনতে চাই।’ কিন্তু একবার যখন বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে, তখন এ সম্মানিত উপজাতীয় নেতৃবর্গই, আইনানুগ তাৎপর্য মোতাবেক আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার চাইবেন।
আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ ভারত সে দেশের শত শত উপজাতীয় জনগোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মিয়ানমারও তাদের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী ঘোষণা দেয়নি। কেন দেয়নি? অনুমান করতে পারি।
আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়া হলে ঘোষণাপত্র-২০০৭-এর একটি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত চাকমা সম্প্রদায়কে, আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখার অপর পাড়ে ভারতের মিজোরাম প্রদেশের চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ, সমঝোতা, সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সরকার বাধা দিতে পারবে না; এমনকি সীমান্ত সেখানে অকার্যকর থাকবে। ভারত সরকারও দিতে পারবে না, যদি ভারত সরকার ওই মানুষগুলোকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। যদি বাধা দেয়, পৃথিবীর শক্তিশালী মুরব্বিরা বিরূপ হবে এবং উপজাতীয় নেতারা পৃথিবীব্যাপী প্রচারণা চালাবে।
জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্রের দ্বিতীয় তাৎপর্য
সামরিক বাহিনী মোতায়েন ও কার্যক্রম সংক্রান্ত: বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার, তিনটি বাহিনীর সদর দফতরের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনার আদেশ বা অনুমোদন দিতে পারেন। সামরিক কার্যক্রম বলতে, দুর্যোগ মোকাবেলাও হতে পারে, ইলেকশন ডিউটিও হতে পারে, রাষ্ট্রবিরোধীদের সাথে যুদ্ধ করাও হতে পারে, বিদ্রোহ দমনও হতে পারে অথবা সীমান্তে গিয়ে বাইরের শত্রুর মোকাবেলা করাও হতে পারে। সামরিক কার্যক্রম শুরু করার আগে, সরকার কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তির বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়া বা তাদের সাথে আলোচনা করা ইত্যাদির অবকাশ বর্তমান সংবিধান বা কার্যপ্রণালী বিধিতে নেই।
বাংলাদেশ সরকার যদি আনুষ্ঠানিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মার্মা, ত্রিপুরা ইত্যাদি উপজাতীয় জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে কোনো প্রকারের সামরিক কার্যক্রম গ্রহণের আগে আঞ্চলিক পরিষদ অথবা সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের সাথে আলোচনা করতে হবে; যা স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের জন্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা