ইসরাইলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী
- আবদুর রহমান তরফদার
- ২৬ মে ২০২৪, ০৬:১৫
ইসরাইল কেন পরাজিত হবে- এর সবচেয়ে সহজ উত্তর, যে কারণে ভিয়েতনাম, ইরান ও আফগানিস্তানে আমেরিকার পতন হয়েছে। কিন্তু সোজাসাপটা এই উত্তরে মন ভরবে না। কারণগুলো তাই ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
যুদ্ধের কতগুলো মূলনীতি আছে; যেসব মোটামুটি সর্বজনীন, মোটের ওপর প্রায় সব দেশ যেসব মূলনীতি অনুসরণ করে; এর প্রধানতম কারণ ন্যায্যতা। অর্থাৎ যুদ্ধ জয়ের অন্যতম মূলমন্ত্র ওই যুদ্ধের সঠিকতা, ন্যায্যতা, নৈতিকতা, আত্মমর্যাদা বা ধর্মীয় কারণ কতটা জোরালো। যুক্তরাষ্ট্রে এটি ন্যায়যুদ্ধ তত্ত্ব হিসেবে বেশি পরিচিত। ন্যায়যুদ্ধ তত্ত্বের আড়ালে তারা যুদ্ধের কারণের ন্যায্যতা ও নৈতিকতা উপেক্ষা করে ব্যাখ্যা করে, সামরিক উদ্দেশ্য অবশ্যই দেশের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। জাতীয় স্বার্থ ও গণতন্ত্রের অনুকূল হতে হবে। বাস্তবে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সবসময় ন্যায্য ও নৈতিক হয় না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র একটি নিও কলোনিয়াল সাম্রাজ্য; যারা ধ্রুপদী উপনিবেশবাদীদের মতো দুনিয়ার গরিব ও অনুন্নত রাষ্ট্রগুলো শোষণ করে নিজেদের মত, প্রাচুর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে চায়। কিন্তু একটি পরিশীলিত গণতন্ত্রের মুখোশে উচ্চ নৈতিক ভিত্তির বুলি আউড়িয়ে ধোঁকা দিয়ে কাজটি করে। এ কাজের হাতিয়ার হলো- গণতন্ত্র দুনিয়ার সবচেয়ে সেরা রাষ্ট্র পরিচালন ব্যবস্থা বলে প্রচার করা। অন্যান্য শাসনব্যবস্থা অবজ্ঞা ও তুচ্ছ জ্ঞান করা এবং ছলে-বলে-কৌশলে গণতন্ত্র কায়েম করা।
গণতন্ত্রের সাথে থাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের ছল- যেন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একে অপরের পরিপূরক! অথচ এসব আপ্তবুলির সর্বজনীন ভাব যুক্তরাষ্ট্র না অন্তরে পোষণ করে, না চর্চা করে। এসবের সংজ্ঞা আমেরিকার কাছে খুব সাবজেকটিভ, অন্য দেশের বিষয়ে দূরে থাক, নিজ দেশে অভিবাসী ও অশ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এ আদর্শ মেনে চলে না; বর্ণবাদ, শ্বেত-শ্রেষ্ঠত্ববাদ মার্কিনিদের অস্থিমজ্জায়, স্বার্থের প্রশ্নে হামেশা মুখোশ খসে পড়ে। একটি দীর্ঘ সময় দুনিয়াজোড়া বাজার সম্প্রসারণে বিশ্বায়নের প্রবক্তা ও প্রচারক ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যে মাত্র চীন অর্থনীতি ও নানা প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেল, গোলকায়ন নির্বাসনে দিয়ে স্যাংকশনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ওয়াশিংটন! মিসরে গণতান্ত্রিক মুরসি সরকার মার্কিন প্রশাসনের চোখের বালি। ক্যু করে ক্ষমতায় আসা সিসি সরকার অতিপ্রিয়। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার- এসব ছল বিশ্বাসযোগ্য ও প্রতিষ্ঠিত করতে অস্ত্র হলো মিডিয়া, ইন্টারনেট আর চলচ্চিত্র অর্থাৎ হলিউড। যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত লিবারেল ও সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থাও নিজেদের মতবাদে দীক্ষিত করার অন্যতম হাতিয়ার। সারা বিশ্বে গুজব ছড়ানো, মার্কিন ইমেজ বাড়ানো, মিথ তৈরি এবং জনমত প্রভাবিত করতে পদ্ধতিগত মিডিয়া ম্যানিপুলেশন তথা প্রপাগান্ডার উদ্দেশ্যে পেন্টাগন ও সিআইএ এসব মিডিয়ার সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আমেরিকান ড্রিম- এসব সফট পাওয়ার সব সময় কাজ করে না। তখন কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ দেয়া হয় প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে। পাশাপাশি, সিআইএর অ্যাজেন্ট ও গুপ্তঘাতকরা তলে তলে তাদের কাজ করে। তাতে আমেরিকা যত বলে, তার চেয়ে ঢের বেশি উচ্চকণ্ঠ থাকে সিআইএর সুবেশী দেশী দালালরা। এত কিছু করেও কাজ না হলে আমেরিকা প্রক্সিযুদ্ধে যায় এবং সবশেষে গণতন্ত্র উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালায়। এ অভিযান কখনো ন্যায্য হয় না, নৈতিকতা থাকারও প্রশ্ন উঠে না। মোদ্দা কথা, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক, আর্থিক, প্রাযুক্তিক এবং সার্বিক ক্ষমতায় এত বিশাল ও অতুলনীয় যে, তার সাথে দূরতম কল্পনায়ও কেউ অন্যায় যুদ্ধে জড়ানোর চিন্তা করে না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নিও কলোনিয়াল স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হলে যখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মিডিয়া, হলিউড, সিআইএ এমনকি প্রক্সিও কাজে আসে না, তখন তাকে নিজ স্বার্থে যে অনৈতিক ও অন্যায্য যুদ্ধে যেতে হয়, সেটি তথাকথিত ন্যায়যুদ্ধ তত্ত্ব। প্রক্সি বা নিজেদের এসব যুদ্ধ একটি অপ্রতিরোধ্য অর্থনৈতিক লাভজনক বিষয়ও বটে। মারণাস্ত্র শিল্পের মতো এত লাভজনক বাণিজ্য আর একটিও নেই এবং এতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বসেরা! কিন্তু এ যাবত অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এ যাবৎ ন্যায়যুদ্ধের মোড়কে করা এসব ন্যায়নীতিবিবর্জিত ও গর্হিত কোনো যুদ্ধে এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি। তা ভিয়েতনাম, ইরাক এবং সর্বশেষ আফগানিস্তানে- কোথাও না যদিও আকাশ শক্তির আধিপত্যে বোমারু বিমান, ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে নৃশংসভাবে অগুনতি মানুষ হত্যা করতে পেরেছে এবং সম্পদ ও অকাঠামো ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পেরেছে। তবে যখনই তারা মাটিতে বুটের চিহ্ন এঁকেছে, অপ্রচলিত যুদ্ধে বেধড়ক মার খেয়ে অতি সুরক্ষিত মিলিটারি বেজের গর্তে ঢুকতে বাধ্য হয়েছে, যুদ্ধ তখন আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ সীমিত হয়ে গেছে। অবশেষে এসব সাপের গর্ত থেকে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে আমেরিকাকে সরতে হয়েছে। এসব নিও কলোনিয়াল আগ্রাসনে পুরনো সাম্রাজ্যবাদীরা সর্বদা সহযোগী, এতে সাবেক কলোনিগুলোর উপর, বিশেষ করে আফ্রিকায় ছায়া সাম্রাজ্যবাদ কায়েম থাকে, নানা প্রাপ্তিযোগ হয়। অনেকের মনে হতে পারে, ইসরাইলের পরাজয়ের কথা বলতে গিয়ে কেন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে এত কথা বলছি, কারণ ইসরাইল বাস্তবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি মার্কিন প্রক্সি বা ছায়ারাষ্ট্র, নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ইউএস মিলিটারি বেজ। সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র যে মডেলে সাম্রাজ্যবাদ কায়েম করে, সেটির সবচেয়ে নৃশংস, রক্তপিপাসু, হিংস্র ও প্রত্যক্ষ মডেল এটি। বলতে হবে, ইসরাইলিরা ‘গুরু মারা বিদ্যা’ অর্জন করেছে! ফিলিস্তিনি তথা আরবদের ন্যায়যুদ্ধের কাছে ইসরাইলি ন্যায়নীতিবিবর্জিত ও হিংস্র যুদ্ধ শুরু থেকে নৈতিকভাবে পরাজিত, সেখান থেকে এখন সামরিক পরাজয়ের দিকে অনিবার্য পথচলা দেখা যাচ্ছে!
সর্বশেষ গাজায় নারী ও শিশু হত্যায় যে ইসরাইলি জেনোসাইড আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তার শুরুটা এবং পরবর্তী পর্যালোচনা করলে এ পরাজয়ের সূত্র পরিষ্কার হবে। প্রথমে মোসাদের ব্যর্থতা পর্যালোচনা করা যাক। বিশ্বব্যাপী ইসরাইলি স্বার্থে হুমকি বা হুমকি হতে পারে, এমন ব্যক্তি ও স্থাপনায় আঘাত হানতে মোসাদ অসাধারণ দক্ষতা ও তৎপরতা দেখিয়ে নিজেদের সামর্থ্যরে একটি মিথ তৈরি করেছে, এতে তাদের ‘হাসবারা’র সাথে যোগ দিয়েছে পশ্চিমা মিডিয়া, যোগ দিয়েছে হলিউড। মোসাদের কালো হাতের দৈর্ঘ্য আসলে যতটা না নিজেদের, ততটা সিআইএ ও এমআই-৫-সহ সব পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার সক্রিয় ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিংয়ের বদৌলতে।
৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে হামলার পর থেকে ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিমানগুলো ইসরাইলকে গোয়েন্দা তথ্য সহায়তা করতে প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘণ্টা করে গাজার ওপর টহল দিয়েছে বলে এক রিপোর্টে বলা হয়েছে। তারা অর্থ, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিও পায় পশ্চিমা শক্তি থেকে। ফলে দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থায় পরিণত হতে ও অসাধারণ সাফল্য পেতে তাদের সময় লাগেনি। তারা মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক গুপ্তহত্যা চালিয়ে গেছে, যাচ্ছে। এত কিছু করেও কোনো বিরূপ পরিস্থিতি সামলাতে হয়নি, ফলে কোনো অপরিণামদর্শী হত্যা বা ধ্বংসযজ্ঞে পিছপা হয়নি। তারা ফিলিস্তিনের প্রতিটি রাস্তায়, মোড়ে, জনসমাগমস্থলে সিসিটিভি লাগিয়ে রেখেছে, সর্বত্র বাগিং ডিভাইস, প্রতিটি ফিলিস্তিনি নাগরিকের সব ইনফরমেশন ডাটাবেস আকারে সংরক্ষিত আছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতিটি পদক্ষেপ নজরদারি হয় এআই দিয়ে। কোনো ছেলেকে তিন দিন দেখা যাচ্ছে না- সেটিও অ্যালার্ম দিয়ে জানিয়ে দেয় যে নি-িদ্র এআই ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা, সেখানে গাজার মতো জনবহুল আকাশখোলা জেলখানায় বসে হামাস সংগঠিত হয়, প্রশিক্ষণ নেয় এবং ৭ অক্টোবরের অপারেশনে ইসরাইলি বাহিনীকে এমনভাবে হতবিহ্বল করে, তারা তাৎক্ষণিক ন্যূনতম রেসপন্স করতে ব্যর্থ হয়, তখন এত দিনের লোকগল্পের ফানুস গোয়েন্দা ব্যর্থতায় ফুটো হয়ে ভূলুণ্ঠিত হয় বৈকি!
অবশ্য ব্যর্থতা ঢাকতে বলে বেড়াচ্ছে, এ বিষয়ে তাদের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিল, কিন্তু ঠিক আমলে নেয়া হয়নি। এই আমলে না নেয়াই গোয়েন্দা ব্যর্থতা। হামাসের হামলার আগে ইসরাইলের গোয়েন্দা, সেনা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতারা একযোগে বলেছেন, উই হ্যাভ ডিটার্ড হামাস! অর্থাৎ, তারা হামাসকে এত তীব্রভাবে ভীতসন্ত্রস্ত করেছে, হামাস কোনো হামলার বিষয়ে কল্পনার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে। ইসরাইলকে এ পর্যায়ের আত্মতুষ্টির দিকে নিয়ে গিয়ে প্রতিরক্ষা বিষয়ে উদাসীন করে তোলা হামাসের চমৎকার মনস্তাত্ত্বিক সাফল্য। বন্দিশালায় বসে হামাসের আল-কাসসাম ব্রিগেড এ মাত্রার একটি অপারেশন চালালো আর মোসাদ টেরও পেলো না- এ থেকে মোসাদের এস্পিয়নাজ ব্যর্থতা যত, তার থেকে বেশি প্রমাণিত হয় হামাসের কাউন্টার-এস্পিওনাজ সমতা। অন্য দিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্কে একাধিকবার মোসাদের এজেন্ট ও সেল আবিষ্কার হয়েছে, পুরো নেটওয়ার্ক ধরা পড়েছে। অর্থাৎ, মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলিম বিশ্বে মোসাদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থান নড়বড়ে হচ্ছে, তাদের শত্রুদের গোয়েন্দা শক্তি বাড়ছে।
৭ অক্টোবর হামাসের প্রথম যে অর্জন, তা হলো ইসরাইলের নিজ ভূখণ্ডের নিরাপত্তার মিথ ভেঙে দেয়া। হামাস এক সাথে তিন হাজার মিসাইল ছুড়ে অনেক বাগাড়ম্বরের আয়রনডোমের কার্যকারিতা কিছুক্ষণ প্রায় নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিল। এতে হামাস ছাড়াও হিজবুল্লাহ, ইরান এবং ইরানের আঞ্চলিক প্রক্সিরা ভবিষ্যতে করণীয় সম্বন্ধে ছক কষতে পারবে। ইসরাইলিরা ক্রমাগত কার্পেট বোম্বিং করে গণহত্যা করছে ও স্থাপনা ধসিয়ে দিচ্ছে। সেটি তাদের আকাশের একাধিপত্যের ফলে সম্ভব হচ্ছে, কিন্তু নিশ্চিতভাবে অদূর ভবিষ্যতে তা থাকবে না। আগে হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনের হাতে ছিল একে-৪৭ এবং প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন, অকার্যকর কাতিউসা রকেট। এখন তাদের, বিশেষ করে হিজবুল্লাহর হাতে আছে লাখ দেড়েক নানান মিসাইলের বিশাল ভাণ্ডার। ডজন ডজন ধরে মারকাভা ট্যাঙ্ক ও নানা যুদ্ধসরঞ্জাম।
হামাসের ইয়াসিন আরপিজি-৭ রকেট ধরাশায়ী হয়ে গাজায় পড়ে আছে। কথিত দুনিয়া সেরা ট্যাঙ্ক ও এপিসি নিয়ে কথিত দুনিয়ার সেরা ইসরাইলি গোলানি ব্রিগেড গাজা থেকে ক্যাজুয়াল্টি নিয়ে অপমানজনকভাবে বদলি সেনাদলের মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত হতে বাধ্য হয়েছে। সম্মুখযুদ্ধে ইসরাইলিরা হামাসের কাছে কুপোকাত হয়েছে- এটি স্পষ্ট। তারা এখন আকাশ আধিপত্য দিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে জেনোসাইড চালাচ্ছে। কিন্তু সময়ের সাথে আমরা দেখছি, প্রতিরোধের অস্ত্রের মানোন্নয়ন হচ্ছে, নতুন নতুন অস্ত্র নিয়ে আসছে। মে ২০২৪-এ এসে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করছি- হিজবুল্লাহ বেইত হিলেল মিলিটারি বেসে নতুন স্থাপিত আয়রনডোম ড্রোনের আক্রমণে ধ্বংস করেছে, তাদের ছয়টি ড্রোনের মধ্যে মাত্র একটি আটকাতে পেরেছে আয়রনডোম। হিজবুল্লাহ ও ইসলামী রেসিস্ট্যান্স এখন অ্যান্টিট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল বা এটিজিএম ব্যবহার করছে।
ইসলামী রেসিস্ট্যান্স ইরাক ও লেবানন থেকে আক্রমণ শানাচ্ছে, ইসরাইলের এয়ার কমান্ড বসে আঘাত হানছে। মে মাসে রাফায় অভিযান চলাকালে এক দিনে ১৮-১৯ আহত ইসরাইলি সেনাকে হেলিকপ্টারে তেলআবিবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হামাসের ড্রোন হামলাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আন্তঃসীমান্ত যুদ্ধে হিজবুল্লাহ স্পষ্টত শক্তির সমতা নয়; বরং আধিপত্য বজায় রেখেছে। চোখের সামনে বাবা-মা-ভাই-বোন বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে মৃত্যু প্রত্যক্ষ করা হামাস যোদ্ধারা সম্মুখ সমরে অতুলনীয়, অপ্রতিরোধ্য। তাদের যুদ্ধ ন্যায়ের যুদ্ধ, সত্যের যুদ্ধ, দেশপ্রেমের যুদ্ধ, সর্বোপরি ঈমানি তেজে বলীয়ান যুদ্ধ। তাদের শুধু প্রয়োজন বিমানবিধ্বংসীসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের নিয়মিত সরবরাহ। আশির দশকে ফিলিস্তিÍনিরা গুলতি দিয়ে, খালি হাতে আইডিএফের দিকে পাথর ছুড়ত, সেখান থেকে রকেট, ড্রোন, মিসাইল, আরপিজি, প্যারাগ্লাইডিং, বুবিট্রাপে উন্নীত হয়েছে অস্ত্রভাণ্ডার। তাদের পরবর্তী অস্ত্র যে বিমানবিধ্বংসী মিসাইল হতে যাচ্ছে, তা স্বাভাবিক সমীকরণ। সে পরিস্থিতিতে আফগান মুজাহিদদের হাতে স্টিংগার মিসাইল আসার পরে সোভিয়েত সেনাদের নাজেহাল পরিস্থিতি যেভাবে পরাজয় নিশ্চিত করেছিল, তেমন পরিস্থিতি আইডিএফের হবে, এটি অনুমান করা কঠিন নয়।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা