২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভূরাজনীতিতে আরাকান আর্মির অবস্থান

ভূরাজনীতিতে আরাকান আর্মির অবস্থান - ফাইল ছবি

সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের নির্বাচিত সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। প্রতিবাদে সাধারণ জনগণ পথে নেমে আসে। জান্তার কঠোর দমননীতির মুখে একসময় প্রতিবাদ বিক্ষোভ সশস্ত্র সংগ্রামে রূপ নেয়। শুরুতে জান্তাবিরোধী এই আন্দোলনের দুটো ধারা পরিলক্ষিত হয়। একটি, গণতন্ত্রকামী মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিরোধ সংগ্রাম; অপরটি, আঞ্চলিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর স্বাধিকার আদায়ের লড়াই। মূলধারার আন্দোলনটি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এবং সশস্ত্রবাহিনীর দলছুট সদস্যদের নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গড়ে ওঠায় সেটির সাংগঠনিক কাঠামো তেমন মজবুত ছিল না। কাজেই, শুরুতে শক্তিশালী সেনা সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। পক্ষান্তরে, যুগ যুগ ধরে স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র প্রতিরোধ সরকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

শুরুতে প্রতিটি আন্দোলন ছিল বিচ্ছিন্ন, অঞ্চলভিত্তিক। এগুলোর মধ্যে কোনো ঐক্য বা সমন্বয় ছিল না। ফলে সুচতুর সেনা সরকার একেক সময় একেকটি দল বা গোষ্ঠীর সাথে সমঝোতা করে কিংবা এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আরেক গোষ্ঠীকে নেপথ্য সমর্থন জুগিয়ে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পদ্ধতিতে তাদের নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিরোধ এ আন্দোলন সুসংহত হতে শুরু করে। অঞ্চলভিত্তিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র গ্রুপগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে গড়ে তোলে দ্য থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ মোর্চা। গত অক্টোবরে এরা তীব্র আক্রমণ চালিয়ে ২৫০টি সেনাচৌকি দখল করে এবং বেশ কটি সীমান্ত শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি সৈন্যরা অস্ত্র এবং গোলাবারুদের বিশাল মজুদ পেছনে ফেলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এ বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত মিয়ানমারের ৪২টি শহর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে এবং আরো ১৬টি শহর পতনের অপেক্ষায়। সর্বশেষ শহর পালেতওয়ার দখল নিয়েছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অন্যতম সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি। বাংলাদেশ এবং ভারত সীমান্তের খুব কাছে, মিয়ানমারের চীন প্রদেশে কালাদান নদীর তীরে অবস্থিত এই পালেতওয়া শহরের ভূরাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। শহরটিকে ভারত এবং মিয়ানমারের যৌথ উদ্যোগে নির্মীয়মাণ ‘কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট’ বা সংক্ষেপে ‘কালাদান প্রজেক্ট’ এর হৃৎপিণ্ড বললে অত্যুক্তি হবে না। কালাদান প্রজেক্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলোকে সংযুক্ত করার এক মাল্টিমিলিয়ন ডলার প্রজেক্ট। এর তিনটে অংশ। প্রথম অংশ ৫৪০ কিলোমিটারের সমুদ্রপথ, যা বঙ্গোপসাগরের দুই ধারে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং রাখাইন প্রদেশের সিত্তোয়ী সমুদ্র বন্দরকে সংযুক্ত করেছে। দ্বিতীয় অংশ ১৬০ কিলোমিটারের নদীপথ, যা কালাদান নদী ধরে সিত্তোয়ীর সাথে পালেতওয়াকে সংযুক্ত করেছে। শেষ অংশ সড়কপথ, যা পালেতওয়ার সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলোকে সংযুক্ত করেছে। আরাকান আর্মির হাতে পালেতওয়ার পতন তাই ভারতসহ এ অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে এমন প্রতিটি মহলকেই চিন্তিত করে তুলেছে বলে ধারণা করা যায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাখাইন প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আরাকান আর্মির ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিভিন্ন কারণেই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানের (ইউএলএ) সামরিক শাখা আরাকান আর্মি ২০০৯ সালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দূরদর্শী রাজনৈতিক এবং সামরিক কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে রাখাইনের সাধারণ জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। অধিকন্তু চলমান আন্দোলনে মূলধারার বিপ্লবী সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সাথে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে আরাকান আর্মি আন্তর্জাতিক মহলেও তার অবস্থানটিকে সুসংহত করে নিয়েছে বলে ধারণা করা যায়। উল্লেখ্য, ক্ষমতাচ্যুতির পর সু চির রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) নামে একটি অভ্যুত্থানবিরোধী অসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলে। পিডিএফ হচ্ছে সেই এনইউজির সামরিক শাখা। শুরু থেকেই পাশ্চাত্যের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশগুলো এনইউজির চলমান আন্দোলনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে আসছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এরই মধ্যে এনইউজিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও সংগঠনটির শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। কাজেই সেনাশাসনমুক্ত গণতান্ত্রিক মিয়ানমারে এনএলডির বিকল্প সংগঠন এনইউজিই যে বিশ্ব পরিমণ্ডলে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে, সেটা বলাই বাহুল্য। একইভাবে, সেনা-সরকার বিরোধী আন্দোলনে এনইউজির ঘনিষ্ঠ সহযোগী সংগঠন হিসেবে ইউএলএ তথা আরাকান আর্মি আন্দোলন-পরবর্তী দেশগঠনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বৈধ সংগঠন হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবে বলে ধরে নেয়াই যায়।

বিভিন্ন কারণে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব আঞ্চলিক সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। চলমান বিশ্বরাজনীতির দু’টি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গণচীনের গভীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক স্বার্থ রয়েছে এই প্রদেশটিকে ঘিরে। বস্তুত রাখাইনকে বলা যেতে পারে ভারত মহাসাগরে গণচীনের গেটওয়ে বা প্রবেশদ্বার। মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল এবং এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘকাল ধরে গণচীনকে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ঘুরে মালাক্কা প্রণালী হয়ে সমুদ্রপথে চলাচল করতে হতো। অতিরিক্ত পরিবহন খরচ এবং সময়ের অপচয় ছাড়াও এই দীর্ঘ সমুদ্রপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছু সম্ভাব্য ঝুঁকিও ছিল। দক্ষিণ চীন সাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গণচীনের সাথে এই অঞ্চলে মার্কিন মিত্রদেশগুলোর দীর্ঘকাল ধরেই একধরনের শীতল যুদ্ধ চলে আসছে। অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের জন্য এ ধরনের সমস্যাসঙ্কুল এবং কিছুটা বৈরী সমুদ্রপথে চলাচল গণচীনের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর ছিল তো বটেই। এই পুরো ব্যাপারটার একটা সহজ, লাভজনক এবং কার্যকর সমাধান এনে দিয়েছে চীন-মিয়ানমার তেল এবং গ্যাস পাইপলাইন।

গণচীনের চতুর্থ বৃহত্তম এনার্জি সাপ্লাই রুট হিসেবে বিবেচিত এই পাইপলাইনটি সরাসরি গণচীনের ইউনান প্রদেশের সাথে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশকে সংযুক্ত করেছে। গ্যাসের পাইপলাইনটি ২০১৩ সালের মে মাস থেকে এবং তেলের পাইপলাইনটি ২০১৭ সাল থেকে রাখাইন প্রদেশের সিত্তোয়ী বন্দর থেকে গণচীনের ইউনান প্রদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে তেল ও গ্যাস সরবরাহ করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই পাইপলাইন ঘিরে রয়েছে গণচীনের আরো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। ‘ফাইভ লাইনস অব কানেকশনস’ নামে পরিচিত এই পরিকল্পনায় পাইপলাইন দুটোর পাশাপাশি ইউনান-রাখাইন মহাসড়ক, রেল-সড়ক এবং হাইস্পিড কেবল কানেকশনেরও স্বপ্ন দেখছে গণচীন। মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতার কারণে পরিকল্পনাটি আপাতত স্থগিত থাকলেও পরিস্থিতি শান্ত হলেই গণচীন সেটি বাস্তবায়নের পথে এগোবে বলে ধারণা করা যায়।

তবে রাখাইনে ফাইভ লাইনস অব কানেকশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিশাল স্বার্থ আছে গণচীনের। পুরো মিয়ানমারে চলমান বা পরিকল্পিত তাবৎ চৈনিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে ভূরাজনৈতিক, ভূ-অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত এই প্রকল্পটি হচ্ছে রাখাইনের পশ্চিম উপকূলের চকফু বন্দরে একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা। পরিকল্পনায় এর তিনটে অংশ আছে- একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এবং একটি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প। তবে দৃশ্যমান পরিকল্পনার নেপথ্যে চকফু অঞ্চলে গণচীন একটি শক্তিশালী নৌঘাঁটি গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করছে বলেও পাশ্চাত্যের অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষকের ধারণা। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে গণচীনের এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।

সঙ্গতকারণেই, ভূরাজনৈতিক সমীকরণের এই জটিল সন্ধিক্ষণে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো রাখাইন রাজ্যের ওপর তীক্ষè নজর রাখছে। প্রতিটি পক্ষই চাইবে চলমান সঙ্ঘাতে বিজয়ী পক্ষের সাথে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলতে। আর এ ব্যাপারে আরাকান আর্মিই এ যাবৎ সবচেয়ে এগিয়ে। রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণের নেপথ্যে রয়েছে তাদের সামরিক কৌশল এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞার যুগপৎ সমন্বয়। এ ক্ষেত্রে সেনা-সরকারের ‘বিভাজন ও নিয়ন্ত্রণ’ নীতি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, অভ্যুত্থান-পূর্ব সময়ে সু চি-সরকার আরাকান আর্মিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করে রেখেছিল। বিভাজন ও নিয়ন্ত্রণ নীতির অনুসারী সেনাসরকার এই সুযোগটি কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। সু চিপন্থীদের দেশব্যাপী প্রতিরোধ আন্দোলন থেকে শক্তিশালী আরাকান আর্মিকে দূরে সরিয়ে রাখতে সেনা-সরকার অভ্যুত্থানের অব্যবহিত পরেই সংগঠনটিকে কালো তালিকামুক্ত করে তাদের সাথে একটি অঘোষিত যুদ্ধবিরতির আয়োজন করে। আরাকান আর্মি এই সুযোগটি পুরোপুরিই কাজে লাগায়। প্রায় দু’টি বছর তারা সঙ্ঘাত এড়িয়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে মনোনিবেশ করে। রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক গণসংযোগ চালায় সংগঠনটি। প্রতিটি এলাকায় তাদের রাজনৈতিক এবং বিচারিক নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেয়। উত্তর এবং দক্ষিণ রাখাইনের মধ্যে যুগ যুগ ধরে বিদ্যমান দূরত্ব একেবারেই কমিয়ে আনে। ধীরে ধীরে তারা হয়ে ওঠে রাখাইনবাসীদের একমাত্র আস্থার প্রতীক।

অভ্যুত্থানের আগে থেকেই রাখাইনের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা ইউএলএর একচ্ছত্র আধিপত্য বিদ্যমান ছিল। ২০২০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনেও সরকারি দল এনএলডি রাখাইনে ইউএলএর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে রাখাইনে এনএলডির শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দুটো নির্বাচনী এলাকাতেও জয়ী হয় ইউএলএ। আরাকান আর্মি তথা ইউএলএর চলমান কৌশল বলছে, অদূর ভবিষ্যতে রাখাইনে ওদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো আর কেউ থাকবে না। ওদের সবচেয়ে মোক্ষম হাতিয়ার হচ্ছে রাখাইনবাসীদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধর্মীয় সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অঙ্গীকার। যেখানে সেনা-সরকার তো বটেই মূলধারার রাজনৈতিক দল এনএলডি ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রতি বরাবরই বিদ্বেষমূলক আচরণ দেখিয়ে এসেছে, সেখানে আরাকান আর্মি রাখাইনের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায়টিকে সাথে নিয়েই এগোতে চায়।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, চলমান প্রতিরোধ আন্দোলনে আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকেও বেশ কিছু যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে। বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। রাখাইন রাজ্যের দু’টি প্রধান এথনিক গ্রুপ- রাখাইন এবং রোহিঙ্গারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থেকে স্বাধিকার আদায়ের দাবিতে অনড় থাকলে স্বাধীনতা না হোক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা এখন শুধুই সময়ের ব্যাপার। বিষয়টি উপলব্ধি করে ভারত এবং গণচীনসহ অন্যান্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো ইতোমধ্যেই আরাকান আর্মির সাথে প্রকাশ্য অথবা গোপনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে বলে ধারণা করা যায়। বাংলাদেশেরও স্বার্থ আছে। প্রায় বারো লক্ষাধিক রোহিঙ্গার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে রাখাইনের আশু ক্ষমতাসীনদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের প্রয়োজন তো আছেই। আমাদের নীতিনির্ধারক মহল বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন কি?

লেখক : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শান্তি এবং সঙ্ঘাত বিশ্লেষক
Email: [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement