৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

হজরত ঈসা আ: আল্লাহর বান্দা ও রাসূল

বাইতুল মাকদিস, ফিলিস্তিন। - ছবি : সংগৃহীত

আল্লাহ তায়ালার কুদরত ও হেকমতের বিস্ময়কর নিদর্শন হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম। মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম আ:-এর পর একমাত্র তিনিই এমন এক সৃষ্টি, যিনি পিতা ছাড়া পৃথিবীর বুকে এসেছেন। তবে হজরত আদম আ:-এর সাথে হজরত ঈসা আ:-এর পার্থক্য হলো, হজরত আদম আ:কে পিতা ও মাতা ছাড়াই সরাসরি মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর হজরত ঈসা আ:কে পিতা ছাড়াই সরাসরি মাতৃগর্ভে কুদরতিভাবে সৃষ্টি করা হয় এবং অপর মানুষদের মতোই নির্দিষ্ট সময় পরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মতো। তিনি তাঁকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি দিয়ে। এরপর তাঁকে বলেছিলেন, হও, সঙ্গে সঙ্গে তিনি হয়ে গেলেন’ (সূরা আলে ইমরান, ৫৯)। অর্থাৎ ঈসা আ:কে অস্বাভাবিকরূপে পিতা ছাড়া সৃষ্টি আল্লাহ তায়ালার কাছে আদম আ:-এর সৃষ্টির মতোই স্বাভাবিক ব্যাপার। তিনি শুধু বলেছেন, ‘কুন’-হয়ে যাও। আর তা হয়ে গেছে।

হজরত ঈসা আ:-এর জন্ম
হজরত ঈসা আ: আর দশজন মানুষের মতোই স্বাভাবিক নিয়মে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছেন। পার্থক্য ও অস্বাভাবিকতা শুধু এতটুকুই যে, তিনি পিতা ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেন। তবে এর অর্থ এই নয় যে, তাঁর মাতা মরিয়ম আ: দুশ্চরিত্র রমণী ছিলেন। বরং তিনি ছিলেন পূত-পবিত্র সতী-সাধ্বী রমণী। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহ তায়ালা দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন ইমরান কন্যা মরিয়মের, যিনি তাঁর সতীত্ব বজায় রেখেছিলেন। অতঃপর আমি তাঁর মধ্যে আমার পক্ষ থেকে রূহ (প্রাণ) ফুঁকে দিয়েছিলাম’ (আত-তাহরিম, ১২)।

এ আয়াতে মরিয়ম আ:-এর নিষ্কলুষ চরিত্রের সাফাই বর্ণনার পাশাপাশি হজরত ঈসা আ:-এর জন্ম কিভাবে হয়েছে, তা বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা মরিয়ম আ:-এর গর্ভে সরাসরি রূহ ফুঁকে দেয়ার মাধ্যমে হজরত ঈসাকে সৃষ্টি করেছেন। এর জন্য পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী পুরুষের স্পর্শের প্রয়োজন হয়নি।

হজরত ঈসা আ:-এর জন্মবৃত্তান্তের মূল কাহিনী পবিত্র কুরআনের সূরা মরিয়মে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘এই কিতাবে মরিয়মের কথা বর্ণনা করুন, যখন তিনি তাঁর পরিবারের লোকজন থেকে পৃথক হয়ে পূর্বদিকে এক স্থানে আশ্রয় নিলেন। অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য তিনি পর্দা করলেন। অতঃপর আমি তাঁর কাছে আমার রূহ (জিবরাইল আ:কে) প্রেরণ করলাম। তিনি তাঁর নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করলেন। মরিয়ম আ: বললেন, আমি তোমার কাছ থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যদি তুমি আল্লাহ ভীরু হয়ে থাকো, তাহলে আল্লাহকে ভয় করো। তিনি বললেন, আমি তো শুধু তোমার পালন কর্তার প্রেরিত তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য। মরিয়ম বললেন, কেমন করে আমার পুত্র হবে, যখন কোনো পুরুষ আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও নই? তিনি বললেন, এভাবেই হবে। আপনার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং আমি তাকে মানুষের জন্য একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহস্বরূপ করতে চাই। এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার। অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন’ (মারইয়াম, ১৬-২২)।

হজরত ঈসা আ:-এর জন্ম গ্রীষ্মকালে
মরিয়ম আ: হজরত ঈসা আ:কে গর্ভে ধারণের নির্দিষ্ট সময় পর যখন প্রসব বেদনা অনুভব করলেন, তখন তিনি লোকালয়ের বাইরে এক খেজুর গাছের গোড়ায় আশ্রয় নিলেন। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। ফেরেশতা এসে তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘তুমি দুঃখ করো না। তোমার পালনকর্তা তোমার পাদদেশে একটি নহর জারি করেছেন। আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কাণ্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার ওপর সুপক্ব খেজুর পতিত হবে। সুতরাং আহার করো, পান করো ও চক্ষু জুড়াও।’ (মরিয়ম, ২২-২৬) এখানে লক্ষণীয়, হজরত ঈসা আ:-এর জন্মের সময় তাঁর মাতাকে পাকা খেজুর খেতে বলা হয়েছে। আর কাণ্ড নাড়া দিলে ঝরে পড়ার মতো খেজুর পাকে গ্রীষ্মকালে, শীতকালে নয়। সুতরাং শীতকালে নয়, হজরত ঈসা আ: জন্মগ্রহণ করেছেন গ্রীষ্মকালে।

হজরত ঈসা আ: আল্লাহর বান্দা ও রাসূল
পৃথিবীর সৃষ্টিজগতের বিস্ময় হজরত ঈসা আল্লাহর পুত্র নন, বরং তিনি ছিলেন মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার একান্ত অনুগত বান্দা বা দাস এবং তাঁর বার্তাবাহক বা রাসূল। এক নির্জন নিরালায় (বায়তুল লাহম বা বেথেলহামে) হজরত ঈসা আ:-এর ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাঁর পূত-পবিত্র মাতা আল্লাহর অনুগত বান্দী মরিয়ম আ: যখন তাঁকে নিয়ে এলাকায় এলেন, তখন সবাই নিন্দা করতে লাগল। ওই সময় মায়ের কোলেই শিশু ঈসা আ: অস্বাভাবিকরূপেই কথা বলে ওঠেন।

পবিত্র কুরআনের ভাষায় তিনি বলেন, ‘আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন’ (মরিয়ম, ৩০) আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা: সৃষ্টির সেরা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর পরিচয়, তিনি আল্লাহর দাস (বান্দা) ও রাসূল। যেমনটা আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে থাকি, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, যিনি একক, যাঁর কোনো অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হজরত মুহাম্মদ সা: আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। অনুরূপ হজরত ঈসা আ:ও আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

রাজার পুত্র রাজা বা রাজপুত্র বা শাহজাদা হন। রাজার পুত্র কখনো রাজার দাস হন না। দুধের শিশু ঈসা আ: মায়ের কোলেই নিজেকে ‘আল্লাহর দাস’ বলে পরিচয় দিয়ে প্রকারান্তরে এই ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি আল্লাহর পুত্র নন। পাশাপাশি তিনি এ ঘোষণাও দিয়েছেন যে, তিনি আল্লাহর নবী। অন্যত্র তিনি নিজেকে রাসূল হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ করুন, যখন মরিয়ম-পুত্র ঈসা বললেন, হে বনি ইসরাইল, আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যয়নকারী এবং এমন একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। যাঁর নাম হবে আহমদ’ (আস-সফ, ৬)। আল্লাহ তায়ালা অপর এক স্থানে বলেন, ‘মরিয়ম-পুত্র মাসীহ (ঈসা) রাসূল ছাড়া আর কিছুই নন’ (মায়েদা, ৭৫)।

আল্লাহ মহান স্রষ্টা, তিনি কারো জনক নন
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অন্যতম অনন্য গুণ হচ্ছে সৃষ্টি করা। তিনি চাইলেই যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করতে পারেন। আর যেটা সৃষ্টি করতে চান, শুধু ‘কুন’ (হও) বললেই তা সৃষ্টি হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তিনি যখন কোনো কিছু সৃষ্টি করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন, ‘কুন’ (হও), তখনই তা হয়ে যায়’ (ইয়াসিন, ৮২)। ‘হও’ বললে হয়ে যায়, এমন সৃষ্টির ক্ষমতা যাঁর, তিনি কেন দীর্ঘ মেয়াদের সন্তান জন্ম দেয়ার কষ্ট করতে যাবেন? হজরত ঈসা আ:ই শুধু অস্বাভাবিক সৃষ্টি নন, বরং হজরত আদম আ:ও অস্বাভাবিক সৃষ্টি। হজরত ঈসা আ: তো কমপক্ষে মায়ের গর্ভের আশ্রয় পেয়েছেন, হজরত আদম আ: তো সেটিও পাননি।

মহান স্রষ্টা আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। হজরত ঈসা আ:কে সৃষ্টির উদ্দেশ্যও একই।

হজরত ঈসা আ: মারা যাননি
হজরত ঈসা আ:-এর আরেকটি অস্বাভাবিক গুণ হচ্ছে, তিনি মারা যাননি, এখনো জীবিত আছেন। ইহুদিরা তাঁকে হত্যার চেষ্টা করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেন। পৃথিবীর শেষলগ্নে তিনি উম্মতে মুহাম্মদী হয়ে আগমন করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘(অতএব তারা শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল) তাদের এ কথা বলার কারণে যে, আমরা মরিয়ম-পুত্র ঈসা মাসিহকে হত্যা করেছি, যিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূল। অথচ তারা না তাঁকে হত্যা করেছে, আর না শূলীতে চড়িয়েছে, বরং তারা এরূপ ধাঁধাঁয় পতিত হয়েছিল। বস্তুত যারা এ ব্যাপারে মতভেদ করে, নিশ্চয় তারা এ ক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছে, শুধু অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোনো খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই তারা তাঁকে হত্যা করেনি। বরং আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (আন-নিসা, ১৫৭-১৫৮)।

হজরত ঈসা আ: আগমন করবেন উম্মতে মুহাম্মদী হয়ে
পৃথিবীর শেষলগ্নে হজরত ঈসা আ: দামেস্কের শ্বেত মসজিদের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসবেন। তিনি এসে ক্রুশের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। তিনি ইসলামকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন যে, পৃথিবীতে ইসলাম ছাড়া আর কোনো ধর্মই অবশিষ্ট থাকবে না। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘ঈসা আ: দামেস্কের পূর্ব দিকে শ্বেত মিনারের সন্নিকটে আসমান থেকে অবতরণ করবেন’ (মুসলিম, ২৯৩৭)। ‘তিনি (ঈসা আ:) অবতরণ করার পর ইসলামের জন্য লড়াই করবেন, ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং জিজিয়াপ্রথা বাতিল করবেন। ঈসা আ: দাজ্জালকেও খতম করবেন। তিনি এ পৃথিবীতে ৪০ বছর অবস্থান করবেন। তারপর তাঁর ওফাত হবে। মুসলমানরা তাঁর জানাজার সালাত আদায় করবেন’ (আবু দাউদ, ৪৩২৪)। উল্লেখ্য, হজরত ঈসা আ:-এর ওফাতের আগে আহলে কিতাবের সব শ্রেণী ঈমান আনবে (আন-নিসা, ১৫৯)।

হজরত ঈসা আ: কারো পাপের বোঝা বহন করবেন না
শুধু হজরত ঈসা আ:ই নন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কাউকেই অন্যের পাপের বোঝা বহনের ক্ষমতা দেননি। আল্লাহ বলেন, ‘(কিয়ামতের দিন) কোনো বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না’ (ফাতির, ১৮)। হজরত ঈসা আ: পাপের বোঝা তো দূরের কথা, কিয়ামতের কঠিন সময়ে তিনি নিজেকে শাফায়াতেরও উপযুক্ত বলে মনে করবেন না। কিয়ামতের দিন মানুষ ভিড়ে ঠাসাঠাসি করবে। তারা হজরত আদম আ:, হজরত ইবরাহিম আ: ও হজরত মূসা আ:-এর কাছে যাওয়ার পর হজরত ঈসা আ:-এর কাছে গিয়ে বলবে, আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট শাফায়াত করুন। হজরত ঈসা আ: বলবেন, ‘আমি এর উপযুক্ত নই’ (বুখারি, ৭৫১০)।

বিচার দিবসের কাঠগড়ায় হজরত ঈসা আ:
বিচার দিবসে প্রত্যেককেই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। সবার আগে নবী-রাসূলদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সে ধারাবাহিকতায় মহান বিচারক আল্লাহ তায়ালা হজরত ঈসা আ:কে প্রশ্ন করবেন, ‘হে ঈসা ইবনে মরিয়ম, আপনি কি লোকদের বলেছিলেন, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতাকে খোদা সাব্যস্ত করো? ঈসা বলবেন, আপনি পবিত্র। আমার জন্য শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোনো অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই জানতেন। আপনি তো আমার মনের কথাও জানেন, কিন্তু আমি জানি না যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয় আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত। আমি তো তাদের কিছুই বলিনি। শুধু সে কথাই বলেছি, যা আপনি আদেশ করেছিলেন বলতে- তোমরা আল্লাহর দাসত্ব অবলম্বন করো, যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা। যত দিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, তত দিন আমি তাদের কার্যকলাপের সাক্ষী। অতঃপর যখন আপনি আমাকে তুলে নিলেন, তখন থেকে আপনিই তাদের কার্যকলাপের তত্ত্বাবধায়ক। আপনি সর্ববিষয়ে সাক্ষী’ (মায়েদা, ১১৬-১১৭)।

হজরত ঈসা আ:-এর অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যসমূহ
হজরত ঈসা আ:-এর অনেক অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ১. তিনি পিতা ছাড়া জন্মগ্রহণ করেছেন। ২. মায়ের কোলেই কথা বলেন। ৩. মাটির তৈরি পাখিকে আল্লাহর অনুমতিতে ফুঁক দিলেই তা জীবন্ত হয়ে উড়ে যেত। ৪. তিনি আল্লাহর অনুমতিতে জন্মান্ধকে চক্ষুষ্মান করতে পারতেন। ৫. আল্লাহর অনুমতিতে কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করতে পারতেন। ৬. আল্লাহর অনুমতিতে মৃতকে জীবিত করেছেন। ৭. তিনি মারা যাননি। তাঁকে জীবিতাবস্থায় আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। ৮. কিয়ামতের আগে তিনি পৃথিবীতে ফিরে এসে বিশ্ব মুসলিমের নেতৃত্ব দেবেন। ৯. তিনিই একমাত্র নবী, যিনি উম্মতে মুহাম্মদী হবেন।

পথহারা মানুষকে পথ দেখানোর জন্যই আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। হজরত ঈসা আ: সেই ধারাবাহিকতারই অংশবিশেষ। তিনিও আর সবার মতো মাটির তৈরি রক্তমাংসের মানুষ ছিলেন। সব নবী-রাসূলের প্রতি সমভাবে সম্মান প্রদর্শন ঈমানী দায়িত্ব। তাঁরা সবাই পৃথিবীর মানুষদের একত্ববাদের শিক্ষার মাধ্যমে চিরমুক্তির পথ দেখিয়েছেন। আমাদের কর্তব্য সেই পথকে আঁকড়ে ধরা। তবেই আমরা চিরকাঙ্ক্ষিত মনজিলে মাকসাদে পৌঁছতে সক্ষম হবো।

লেখক: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement