৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আমাদের সেকেন্ড স্যার

আমাদের সেকেন্ড স্যার - নয়া দিগন্ত

আব্দুল হামিদ মাস্টার আমাদের পণ্ডিত স্যার। সবাই তাকে সেকেন্ড স্যার বলেই জানে। স্যারের গ্রামেই পাঠশালা। তিনি দীর্ঘকায়। দৈত্যের মতো দেহখানা। গৌর বর্ণের সুন্দর চেহারা। মুখখানা গম্ভীর। ছাত্রছাত্রীরা তাকে অহেতুক ভয় পায়। ছাত্রছাত্রীদের তিনি বেশ স্নেহ করেন, আদর করেন। তবে পড়া না হলে হুম হুম করে গর্জন করেন। তাতেই আমরা ভয়ে জড়সড় হতাম। সেকেন্ড স্যার যথা সময়ে স্কুলে আসতেন। বেশির ভাগ সময়ে তিনি স্কুল বসার আগেই আসতেন। অন্য স্যাররা বিলম্বে স্কুলে এলে তিনি ক্ষুব্ধ হতেন। রাগে গড় গড় করতেন। হেড মাস্টারকেও খাতির করতেন না। হেড মাস্টার নুরুল ইসলাম নির্ধন, নিরীহ মানুষ। শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। কোনো কথায় প্রতিবাদ করতেন না। অভাবের সংসারে তিনি কখনো কখনো মহিলাদের পরনের কাপড় ভাঁজ করে পরে আসতেন। আমরা বুঝতাম, হেড স্যার মাঝে মাঝে না খেয়ে স্কুলে আসতেন। যারা বিদ্যার মতো অমূল্য সম্পদ শিক্ষার্থীদের দান করেন, তাদের এহেন করুণ দশায় মন আমার ব্যথিত হয়ে ওঠে। মনে মনে বলতাম কর্তাব্যক্তিরা এত নিষ্ঠুর! তারা শিক্ষকদের দুঃখ বোঝেন না। শিক্ষকরা কত মানবেতর জীবন কাটান! কর্তাব্যক্তিদের শুভ বুদ্ধি উদয় হোক। শিক্ষকদের প্রতিবাদমুখর হতে হবে। দাবি করা নয়; শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। শিক্ষকরা দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পান এ কামনাই করি। শিক্ষকরা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, জাতির উন্নতি হোক। হেড স্যার নম্রভাবে কথা বলতেন, নম্রভাবে চলতেন। সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়ে পড়াতেন। স্যার ইংরেজি ও অঙ্কে পাকা। সুন্দর ড্রিল করাতেন এবং বিভিন্ন শারীরিক কসরত দেখাতেন।

তিনি দেশাত্মবোধক সঙ্গীত শেখাতেন। হেড স্যার বলতেন, ‘যাহা কিছু করিব ভালো করেই করবো, কাজ যদি কাঁচা হয় শরমেতে মরবো’। স্যার ছাত্রছাত্রীদের নিজের সন্তানবৎ স্নেহ করতেন, ভালো বাসতেন। হাসি মুখে কথা বলতেন। স্যার দ্বীনদার-পরহেজগার ছিলেন। দয়া তার শ্রেষ্ঠ গুণ। ছাত্রীরা স্যারকে চতুর্দিক ঘিরে গল্প করত। স্যার একটুও ধমক দিতেন না। শুভ্র শ্মশ্রুসম্বলিত স্যারের মুখখানি ছিল দৃষ্টিসুন্দর। স্যারের দিকে দৃষ্টিপাত করলে সৃষ্টিকর্তা প্রভুকে মনে হয়। প্রভু কত সুন্দর করে তাকে পয়দা করেছেন!

সেকেন্ড স্যারের বাড়ির অবস্থা ভালো। তিনি সচ্ছল। গ্রামে তিনি বড় মাতব্বর। গ্রামের অধিকাংশ অধিবাসী হিন্দু। হিন্দু-মুসলিম সবাই তাকে মান্য করে। প্রায় লোকই তার ছাত্র। তিনি কোনো অন্যায় মেনে নেন না। গ্রামের যেকোনো সমস্যার তিনি সুষ্ঠু সমাধান দেন। বলতে গেলে, তিনি গ্রামের দেবতা, মধ্যমণি। সেকেন্ড স্যারের মুখখানা গম্ভীর। ছাত্রছাত্রীরা মনে করে, স্যার রাগ করে আছেন। আসলে তা নয়। তিনি ছিলেন ছাত্রছাত্রীবান্ধব। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা তিনি দেখতেন। ছাত্রছাত্রীদের বসার অসুবিধা, লেখার অসুবিধা সব সমস্যা সমাধান করতেন। বর্ষাকালে সেকেন্ড স্যার নিজের নৌকা দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পারাপার করাতেন। কোনো ছাত্রছাত্রীর বই-কলম না থাকলে কিনে দিতেন। সেকেন্ড স্যার অঙ্কে ছিলেন পাকা; কিন্তু ইংরেজিতে ছিলেন দুর্বল। এটা জানা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীরা স্যারের কাছে ইংরাজি পড়া বলে দেয়ার জন্য বলত। স্যার রাগতস্বরে বলতেন, অবনী স্যারের কাছে যা। অবনী মাস্টার সেকেন্ড স্যারের ছাত্র। স্কুলে নতুন জয়েন করেছেন। চতুর্থ শ্রেণী ও পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাসগুলো হেড স্যার ও অবনী স্যার নেন। আর সেকেন্ড স্যার নিচের ক্ল¬াসগুলো, বাংলা, অঙ্ক ও অন্যান্য ক্লাস নিতেন। টিফিনের সময় ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে মাথার চুল উঠাতেন। চুল উঠানোর সময় স্যার পা দুটো টেবিলের উপর তুলে অঘোর নয়নে ঘুমিয়ে পড়তেন। ঘুমের মধ্যে জোরে জোরে নাক ডাকতেন। নাকের গোঙানিতে হেড স্যার অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন; কিন্তু কিছু বলতে পারতেন না। পরে সেকেন্ড স্যার রাগ করেন। বলতে গেলে, সেকেন্ড স্যার ছিলেন স্কুলের রাজাধিরাজ। অবশ্য তার সুশাসনে, প্রতাপে স্কুলের পড়ালেখা ভালো হতো। তার ছাত্রছাত্রীরা দেশের বিভিন্ন অফিসের বড় বড় কর্মকর্তা। অনেক ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সচিব তার হাতে মানুষ।

সেকেন্ড স্যার পড়ানোর চেয়ে শাসন করতেন বেশি। ক্লাসের সময় ছাত্রছাত্রীদের বাইরে দেখলে তার মাথা গরম হয়ে উঠত। এটা তিনি কিছুতেই সহ্য করতেন না। ডেকে এনে রৌদ্রে নিলডাউন করিয়ে রাখতেন। স্কুলের উত্তর, পেছনের দিকটা খালি আড়া-জঙ্গল। আমরা আড়া-জঙ্গলে পাকা তেঁতুল, পাকা গাব, পাকা বেথুন, গোকুল ফল আরো কত কী খেতে যেতাম! স্যার বলতেন, ওই আড়া-জঙ্গলে যাওয়া যাবে না। ওখানে বৈরাগীর আখড়া ছিল। কাজেই খুব সাবধান। তবুও আমরা চুপি চুপি টিফিনে ওগুলো খেতে যেতাম। স্কুল প্রাঙ্গণে মস্তবড় একটা শিমুলগাছ ছিল। ওটার সাথেই ছিল একটা করবী ফুল বা কল্কি ফুলের গাছ। কল্কি গাছে প্রতিদিন অসংখ্য ফুল ফুটত। দেখতে চমৎকার লাগত। ফুলের ভেতর থাকত অনেক মিষ্টি মধু। সেকেন্ড স্যার স্কুলে আগমনের আগে ছাত্রছাত্রীরা ওই সব ফল ও মধু খাওয়ার জন্য আগেই স্কুলে আসত; কিন্তু তারা স্যারের চোখ এড়াতে পারত না। স্যারের শাসনের ছড়ি হাতে থাকত।
একদিন হেড স্যার শহর থেকে এসে বললেন, সোমবার স্কুলে ইন্সপেক্টর আসবেন। কাজেই স্কুলঘর প্রতিদিনই পরিষ্কার করার ধুম পড়ে গেল। ইন্সপেক্টর মহোদয়ের সম্মানে স্কুলের সামনে একটা গেট করতে হবে। আমরা ছাত্রছাত্রীরা খুশিতে মেতে উঠলাম। কেউ কেউ কলাগাছ, কেউ কেউ দেবদারুগাছের পাতা পেড়ে আনল। ছাত্ররা লাল-সবুজ কাগজ দিয়ে গেট সাজাতে ব্যস্ত হয়ে উঠল। সুুন্দর একটা গেট তৈরি হলো। গেটের উত্তর পাশে দু’ধারে বিভিন্ন ফুলের গাছের বিপুল সমারোহ যেন প্রাচীন ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করছে।

আজ সোমবার। সবাই সকাল সকাল স্কুলে এসেছে। হেড স্যারের সে দিন বিলম্ব হয়নি। তিনি সবার আগে স্কুলে এসেছেন। ছাত্রছাত্রীরা সুশৃঙ্খল। শিক্ষকরা ইন্সপেক্টর মহোদয়ের আগমনের অপেক্ষায়। যথারীতি ক্লাস চলছে। বেলা এগারোটার দিকে ইন্সপেক্টর মহোদয় আসলেন। সাথে চাপরাশি মদন। মদন আড়ালে জানাল, স্যার চা খান না, কফি খান। আর কচি ডাবের পানি খান। ইন্সপেক্টর আসলেন সেকেন্ড স্যারের যেনতেন পোশাক পরিধান করা যায় না। স্কুলে তার পাজামা পরে আসার অভ্যাস নেই। সে দিন পাজামা-পাঞ্জাবির সাথে মাথায় তুর্কিয়ে পশমি টুপি পরেছেন। পায়ে পকিস্তানি চটি স্যান্ডেল, কাঁধে কাশমিরী শাল চাদর ঝুলিয়েছেন। সেকেন্ড স্যারের রাজকীয়ভাব গাম্ভীর্যের উত্তরাধিকারী পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইন্সপেক্টর মহোদয় এসেই প্রথমে সেকেন্ড স্যারের সাথে হ্যান্ডশেক করে বললেন, স্যার ভালো আছেন? রাজ-সম্মান পেয়ে সেকেন্ড স্যারের বুক আনন্দে ভরে উঠল। তিনি ইন্সপেক্টর মহোদয়কে থ্যাঙ্কস দিলেন। ইন্সপেক্টর মহোদয় ক্লাস ভিজিট করতে গেলেন। সাহেব আমাদের ক্লাসে ঢুকলেন। ফাইভে আমরা পাঁচজন। আমি সবার ছোট। আর চারজন ছাত্র বয়সে বড়। আগের দিনে বড় ছেলেমেয়েরা ফাইভে পড়ত। একটা মাত্র মেয়ে। নাম সুমতি। সুমতি খুবই ভালো ছাত্রী। ইন্সপেক্টর মহোদয় ওকে প্রশ্ন করলেন, ও সঠিক উত্তর দিলো। আমি উত্তর দিতে পারিনি। ভয়ে কাঁপছিলাম। সাহেব আমার মাথায় হাত দিয়ে অভয় দিলেন ও বললেন, বেশি বেশি পড়বে। তুমি ভালো করবে। সুমতিকে বাহবা দিলেন ও বললেন, তুমি জীবনে অনেক বড় হবে। স্কুল ভিজিট শেষ হয়েছে। এখন বিদায়ের পালা। হেড স্যার খুব বিনয়ের সাথে স্কুলের রিপোর্ট ভালো লিখতে সাহেবকে অনুরোধ করলেন। ইন্সপেক্টর সাহেব ‘ওকে’ বললেন। সাহেব কফি খেলেন, ডাব খেলেন। স্কুল পরিদর্শনে তিনি সন্তুষ্ট। ইন্সপেক্টর মহোদয় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ করে বললেন, তোমরা ভালো করেছ। আগামীকাল তোমরা ছুটি কাটাবে। ছুটি পেয়ে আমরা খুশি। সুমতি বললো, স্যার আবার আসবেন। আমরা ভালো করে লেখাপড়া করব। ইন্সপেক্টর মহোদয় চলে গেছেন। স্যাররা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।

একদিনের ঘটনা। আমি আগেই বলেছি, ক্লাসে আমি সবার ছোট। অন্যরা বেশ বড়। সবাই হাফপ্যান্ট পরে স্কুলে আসে। সুমতিও হাফপ্যান্ট পরে। সুমতি উজ্জ্বল, শ্যামলা। চোখ দু’টি ডাগর ডাগর। লম্বাকৃতি। স্লিম বডি। আকর্ষণীয় চেহারা। ছাত্রীও খুবই ভালো। খেলাধুলায়ও পাকা। টিফিনের ঘণ্টা পড়েছে। ছাত্রছাত্রীরা দৌড়ে খেলার জন্য বের হচ্ছে। সুমতি আমাকে বলল, সালাম আমার বই-খাতা দেখিস। আমি খেলতে গেলাম।’ আমি সুবোধ বালকের মতো বসে সুমতির বই-খাতা পাহারা দিই। সুমতি আমাকে খুব ভালোবাসত, বিশ্বাস করত। একটু পরে সেকেন্ড স্যারের ছেলে সেলিম এসে সুমতির সমাজপাঠ বইয়ের ভেতর একটা চিঠি রেখে দিলো। আমাকে শাসিয়ে বলল, শালা, আমার কথা বলবি না। বললে বাড়ি যাওয়ার পথে আমার হাতে মাইর খাবি।’ বলা বাহুল্য ওদের বাড়ির কাছের রাস্তা দিয়ে আমাদের গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। আমি ভয়ে কাঁপতে লাগলাম। চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। টিফিন শেষ হয়েছে। এই মাত্র ঘণ্টা পড়েছে। ছাত্রছাত্রীরা যার যার ক্লাসে ঢুকছে। সুমতি ক্লাসে ঢুকেই সমাজপাঠ বই খুলেছে। টিফিনের পর সমাজপাঠ পড়া। বই খুলতেই সে চিঠি দেখতে পেল। হাতে নিয়ে পড়ল। আমাকে বলল, সালাম তুই লিখেছিস? আমি কথা বলতে পারছিলাম না। চোখ দিয়ে টস টস করে জল পড়ছে। সুমতি জানে, আমার দ্বারা ওকাজ হবে না। ও সরাসরি হেড স্যারের কাছে চিঠি দিলো আর বললো, স্যার সেলিম দিয়েছে। সেলিম সেকেন্ড স্যারের ছেলে। আমাদের সাথে ক্ল¬াস ফাইভে পড়ে। হেড স্যার চিঠিটা দেখে সুমতিকে বললেন, এটা সেকেন্ড স্যারকে দেখাও। সুমতি চিঠি নিয়ে সেকেন্ড স্যারের কাছে গিয়ে বলল, স্যার সেলিম আমাকে এ চিঠি দিয়েছে। সুমতি সেকেন্ড স্যারের বন্ধুর মেয়ে। তা ছাড়া সেকেন্ড স্যার অন্যায়কে কোনো দিন প্রশ্রয় দেন না। তাতে নিজের ছেলেই হোক বা অন্যের ছেলেই হোক। তিনি উপযুক্ত বিচার করেন। ছেলে হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। স্যার ঢাকি বাঁধানো মোটা বেত হাতে নিলেন। তার পর সেলিমকে শপাং শপাং বেত মারতে লাগলেন। স্যার খুব শক্তিধর মানুষ। বেত মারতে মারতে ছেলেকে ধরাশায়ী করলেন। সেলিম চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়ল। অবনী স্যার ছাত্রদেরকে দিয়ে পানি এনে সেলিমের মাথায় ও মুখে দিতে লাগলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর সেলিমের জ্ঞান ফিরল এবং বলে উঠল, আব্বা আর কোনো দিন এ কাজ করব না। সেলিমের শরীরে জায়গায় জায়গায় লালচে দাগ হয়ে ফুলে উঠেছে। সেকেন্ড স্যার রাগে থর থর করে কাঁপছেন।

বহুদিন গত হয়েছে। অনেক সময় গড়িয়েছে। কাটাখালি দিয়ে প্রতি বছর অনেক পানি গড়িয়ে হুড়া সাগরে পড়েছে। সেকেন্ড স্যার দুনিয়ার বুকে নেই; কিন্তু স্যারের গুরুগম্ভীর মুখখানা আজো আমার চোখে চোখে ভাসে। তার আদর্শ, গাম্ভীর্য ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়ে গাঁথা। সেকেন্ড স্যারকে ঘুমন্ত অবস্থায় নয়, জাগ্রত অবস্থায় দেখি। স্যার যেন হাতে ছড়ি নিয়ে এদিক ওদিক পায়চারি করে দেখছেন। বর্তমানে আমি একটা বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা। আমি যখনই পাঠশালার পথ দিয়ে যাই তখনই স্কুলের সামনে মাথা নিচু করে যাই। ভক্তিতে মাথা নত হয়ে আসে। পানিতে চোখ টলমল করে। স্যার আমাদের অনেক দিয়েছেন। স্যারের ঋণ কোনো দিন শোধ হওয়ার নয়। মনে হয়, আমাদের সেকেন্ড স্যার শিমুল-কল্কি ফুলগাছের তলায় সেই মোটা বেতখানা হাতে নিয়ে তীক্ষè দৃষ্টিতে অনড় পদে দাঁড়িয়ে আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement