পুলিশ নিজেরাই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে
- আব্দুর রহমান
- ১৯ অক্টোবর ২০২২, ২০:০৮
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকালীন সরকার, তাদের নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনদ্বয় ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী প্রশাসন এবং পুলিশ-সবাই নিজেদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের আস্থা হারিয়েছে। তাই আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ করা হবে বলে যতই ঘোষণা দেওয়া হোক না কেনো ভোটাররা তা বিশ্বাস করতে পারছে না ২০১৪ থেকে তারা জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাধিকার হারা হওয়ার কারণে। প্রখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক সিডনি জে হ্যারিস টাকার নকল নোট তৈরিকারকদের সম্পর্কে যে বিখ্যাত উক্তি করেছিলেন যা গত ২২ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার কথা অমৃত কলামে প্রকাশিত হয়েছে সেটি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকালীন সরকার, তাদের নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনদ্বয়, প্রশাসন ও পুলিশের নির্বাচনকালীন কর্মকাণ্ডের সাথে হুবহু মিলে যাওয়ায় ওটার উদ্ধৃতি দিচ্ছি ‘মানুষ টাকার নকল নোট তৈরি করতে পারে, কিন্তু বেশির ভাগ সময় টাকাই নকল মানুষ তৈরি করে’।
উদ্ধৃতিটি দেয়ার প্রয়োজন পড়ত না যদি ১৪ দলের ১২৭ এমপি জামাতে ইসলামীর ২০ এমপির সাথে মিলে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে ১৯৯৪ সালে সংসদ হতে পদত্যাগ করে মার্চ ১৯৯৬ পর্যন্ত ১৭৩ দিন হরতাল পালন শেষে সচিব মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নেতৃত্বে সরকারি কর্মচারীদের বিদ্রোহ ঘটিয়ে জনতার মঞ্চে আরোহণ করে দাবি মেনে বেগম খালেদা জিয়াকে পদত্যাগে বাধ্য করে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে, সেই সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও জাপা ক্ষমতাসীন না হতো। আবার ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনকালীন সরকারে তাদের নিয়োগ করা প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান প্রধান উপদেষ্টা, গোপালগঞ্জ নিবাসী সাবেক সিএসপি আবু সাঈদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি থাকায় নির্বাচন ১৯৮৬ সালের ৯ মের মতো না হয়ে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের মতো হওয়ায় নির্বাচনে পরাজিত হয়ে কারচুপির অভিযোগে তাদেরকে ‘বেঈমান’ বলে অসম্মানিত করা না হতো। আবার ২০০৭ সালে নির্বাচনকালীন সরকারের শতভাগ নিরপেক্ষতা কায়েমের জন্য জেনারেল মঈনের মাধ্যমে ‘১-১১’ ঘটিয়ে ড. ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের নেতৃত্বে আধা সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে ইয়েসউদ্দিনে পরিণত করা না হতো। তারপর নির্বাচন নিয়ে কী কী করা হয়েছিল তা একটু পেছন ফিরে দেখা যাক।
ভারতের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পরে রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের পরম বন্ধু ও বাংলাদেশের ‘জামাই বাবু’ প্রণব মুখার্জির মাধ্যমে জেনারেল মইনকে ম্যানেজ করে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফটোযুক্ত ভোটারতালিকা প্রণয়নের নামে নির্বাচন দুই বছর পিছিয়ে নিয়ে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে জনগণের সাথে প্রতারণা করে ১৪ দলের হাতে ২৬৫ আসন তুলে দেয়ার কারণে তারাই তাদের আন্দোলনের ফসল, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ৩০ জুন ২০১১ বাতিলপূর্বক ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার ক্ষমতা ‘অধিগ্রহণ’ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিষ্কণ্টক করতেই আইন পাস করে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে সেনাবাহিনীকে বাদ দেয়া হয় যাতে একতরফা নির্বাচনে সেনাবাহিনী ২০০৭ সালের মতো বাগড়া দিতে না পারে। তার পরেও জেনারেল মইনের মতো যাতে কেউ শপথ ভঙ্গ করে এগিয়ে আসতে সাহস না করে তা ঠেকাতে এরূপ অপচেষ্টাকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বলে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মরহুম জুলফিকার আলী ভুট্টো যেভাবে সংবিধান সংশোধন করে তাতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। অনুরূপ সংশোধন বাংলাদেশে ১৪ দলীয় সরকারও ২০১১ সালে করেছে। তার পরেও সব দলের বর্জনের মুখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যখন ভন্ডুল হতে বসেছিল তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তার পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংকে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর দুই দিনের মিশনে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি ঢাকায় এসে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের দূত তারানকোকে নিউইয়র্কে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় পছন্দের নেতা জেনারেল এরশাদকে যেভাবে নির্বাচনে রাজি করিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ তা পরে যেভাবে প্রকাশ করে দিয়েছিলেন তেমনি আগামী নির্বাচনে ভারতকে অনুরূপ ভূমিকা রাখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অনুরোধ জানালেও পরে প্রকাশ করে দেয়ায় গোপন ফাঁস হয়ে পড়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা তার ওপর নাখোশ হলেও দলীয় প্রধান কিন্তু মুখ খোলেননি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের সহায়তায় আওয়ামী ও জাপার ক্যাডাররা রাতদুপুরে ৯৭.৩৩ শতাংশ আসনে ৮০ শতাংশ থেকে শতভাগ অস্বচ্ছ ব্যালট কেটে স্বচ্ছ ব্যালট বক্স পূর্তির মাধ্যমে ১৪ দলের ৯৭.৩৩ শতাংশ প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করেছিল। ভোটকেন্দ্র ভোটার শূন্য থাকা সত্ত্বেও গণনায় লাখ লাখ ব্যালট পাওয়ায় নির্বাচন দেশে বিদেশে সমালোচিত হওয়ায় ভারত ও চীন এগিয়ে এসেছিল বিদেশী স্বীকৃতি প্রদানে। টাকার নকল নোট তৈরির মতো বা পরীক্ষায় নকল করে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পাওয়ার মতো নকল নির্বাচনের মাধ্যমে নকল জনপ্রিয় নেতারা আসল ভোটারের ঘাড়ে চেপে বসেছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকালীন সরকার, তাদের নিয়োগ করা কাজী রকিব ও কে এম নুরুল হুদার নির্বাচন কমিশনদ্বয় এবং নির্বাচনের কাজে তাদের নিয়োজিত প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসাররা নিজেদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিজেরাই শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পরেও আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ হবে বলে যতই দাবি করা হোক না কেনো, ভোটাররা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছেন না, তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে।
সরকারের কথায় উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে একবার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগের জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশন কাকুতি মিনতি করছেন। নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণের জন্যই সংলাপে অংশগ্রহণকারী ২৯২ আসনের অধিকারী দলগুলোর ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের দাবি ৫০ শতাংশ মেনে ১৫০ আসনে ইভিএমে এবং সংলাপে অংশগ্রহণকারী ও বর্জনকারী যাদের আসন সংখ্যা মাত্র দুই হালি তাদের দাবি ৫০ শতাংশ কার্টেল করে ১৫০ আসনে ব্যালটে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নির্বাচনের ৫৪৩ দিন আগেই ঘোষণা করেছেন যাতে সরকারি ও বিরোধী দল নির্বাচন কমিশনের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে কূটতর্কে লিপ্ত থাকার ফাঁকে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুই লাখ ইভিএম ক্রয়ের প্রকল্প পাস করিয়ে নেয়া যায়। অথচ ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের ও প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ১০ সদস্যের সরকার এবং তাদের নিয়োগ করা বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ও সাবেক সচিব আবু হেনার নির্বাচন কমিশনদ্বয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য সর্বসাকুল্যে সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৭০-৭৫ দিন। পক্ষান্তরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫০ সদস্যের দলীয় সরকার ও তাদের দলের ২৬৫ ও ৩০০ জন এমপি প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ১৮২৬ দিন করে এবং কাজী রকিব ও কে এম নুরুল হুদার নির্বাচন কমিশন ৫৪৮ দিন সময় পেয়েও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মধ্য রাতে ভোট গ্রহণের যে নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন, তা গণতন্ত্রের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছিল। যে শিক্ষকরা তাদের ছাত্রদেরকে পাঁচ-সাত বছর শিক্ষাদান করে থাকেন তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে রেখে ছাত্রদেরকে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হলে শিক্ষকরা ছাত্রদের নকলে সহায়তা করতে পারেন। তাই তাদের বিশ্বাস না করে মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিক্ষককে দূরবর্তী কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য না পাঠিয়ে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীকেই দূরবর্তী কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার নিয়ম প্রবর্তন করায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
অথচ বাংলাদেশের ইতিহাসে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পরাজয়ের রেকর্ড যেখানে ১৯৮৬ সালের ৯ মে দ্ইু বছর বয়সী জাপাই গড়তে পারেনি, সেখানে আওয়ামী লীগ ও জাপা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে সেই নির্বাচন ১৯৯৬ সালের ১২ জুন বা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেস্বরের মতো হবে এটা আওয়ামী লীগ ও জাপা ছাড়া কেউ বিশ্বাস করে না। ১৪ দলের ২৬৫ জন এমপি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৮২৬ দিনে এতই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন যে, তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এমপি পদে বহাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কোনো ব্যক্তি না থাকায় তারা যেমন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তেমনি বাকি ১৪৬ জন মামা-ভাগ্নে অর্থাৎ ওয়ারিশসূত্রে ভাগ দেয়া নেয়ার সম্পর্ক যাদের সাথে তাদের মামা ও ভাগ্নেদের যতটি আসন দেয়া হয়েছিল সেসব আসনে প্রকৃতপক্ষে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ ফটোযুক্ত তালিকাভুক্ত ভোটারের ভোট পড়লেও ভোটার তালিকাবহির্ভূত উৎসাহী নাবালক ভোটার, কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার এবং পোলিং অফিসারদের কল্যানে তা ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল।
১৪ দলের ৩০০ জন এমপি পরবর্তী পাঁচ বছরেও সমানভাবে জনপ্রিয় থাকায় তাদের মধ্যে ২৯২ জনই ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জয়ী হওয়ায় জাতীয় সংসদের ২০১৪ সালের ও ২০১৮ সালের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের লিখে দেয়া ভাষণ যা পাঠে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাতে ১৪ দলের এই অভাবিত জয়ের নায়ক সংসদ নেতার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। যে নির্বাচন কমিশনদ্বয়ের সুপরিচালনায় এই নির্বাচন দুটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই কাজী রকিব কমিশন ও কে এম নুরুল হুদা কমিশন যথাক্রমে ২০১৭ সালে ও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেলে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনকে সফল করায় তাদেরও ধন্যবাদ জানিয়ে ছিলেন। তরিকত ফেডারেশনের দেয়া তালিকা হতে কে এম নুরুল হুদা কমিশনকে নিয়োগ দেওয়ায় তারা বিরোধী দলের অংশগ্রহণ সত্তে¡ও ১৪ দল ২৯২টি আসন পাওয়ায় আওয়ামী লীগের জন্য সৌভাগ্যের ডালি বয়ে আনায় কাজী হাবিবুল আওয়ালের নির্বাচন কমিশনও তরিকত ফেডারেশনের দেয়া তালিকা হতেই নিয়োগ দেয়ার কানাঘুষা শোনা গেলেও তাদের কর্মকাণ্ডে ইতোমধ্যে তারা তা যে, প্রমাণ করেছেন।
জনগণ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের মতো বা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মতো ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অবাধে ভোট দিতে না পেরে প্রতারিত হওয়ার জন্য নির্বাচনকালীন সরকার, তাদের নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনদ্বয় ও নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলায় তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হয়েছে এক বিধবা বুড়ির অবিশ্বাসী ছেলের মতো। ছেলেটি অনর্গল অসত্য বলায় চৌকশ ছিল বলে কেউ তাকে বিশ্বাস করত না; এমনকি তার মা-ও নয়। ছেলেটি তার এক বন্ধুকে তার বাড়িতে আসতে বলেছিল। বন্ধু এসে তাকে না পেয়ে তার মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিল, বন্ধু, আমাকে আসতে বলে কোথায় গিয়েছে? মায়ের জবাব ছিল ওর কথা তো ওর বউয়ের ভাইয়েরা ছাড়া কেউ বিশ্বাস করে না, তুমি বিশ্বাস করলে কেমন করে? নির্বাচন সম্পর্কে সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও পুলিশের বক্তব্য ১৪ দলের নেতাকর্মী ব্যতীত কেউ বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করবেইবা কেন?
ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার রিপোর্টে লিখেছেন মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে ভিক্টিমের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সুপার রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে গুলি বিদ্ধ হওয়াকে ইট বিদ্ধ হওয়া বানিয়ে ফেললেন। আদালতের অপেক্ষায়ও থাকতে পারলেন না। আইজিপি অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে বিদায়ী অনুষ্ঠানে বললেন পুলিশ নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে থাকে। তাহলে ২০১৮ সালে রাতদুপুরে পুলিশ প্রহরায় আওয়ামী ও জাপার ক্যাডাররা ৯৭.৩৩ শতাংশ কেন্দ্রে ৮০ শতাংশ থেকে শতভাগ ব্যালট কেটে বাক্স ভর্তি করার অপকর্ম কি নির্বাচন কমিশনের অভিপ্রায় অনুযায়ী হয়েছিল?
জামসিং, সাভার, ঢাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা