বিএনপির গণমুখী আন্দোলন
- আবুল কালাম মানিক
- ০৩ অক্টোবর ২০২২, ২০:০২, আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০৬:৪৮
ক্রমাগত জনদুর্ভোগে উন্নয়নের সব বুলি ফিকে হয়ে যাচ্ছে। সরকারের একতরফা প্রচারণা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আমজনতা। সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার কষ্টও বাড়ছে দিন দিন। তাদের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী ঊর্ধ্বগতি, অসহনীয় যাতায়াত ভাড়া, অস্বাভাবিক পরিবহন ব্যয়, লোডশেডিং ও গ্যাস সঙ্কটে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সরকার দফায় দফায় বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার যাতনাকে পরিহাস করছে। দলীয় রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে শুরু করেছে। দীর্ঘ দিন পর তারা বিরোধী দলের জনস্বার্থসম্পৃক্ত আন্দোলন কর্মসূচিতে সাড়া দিচ্ছে। জনসমর্থনে বলীয়ান প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বিগত দুই মাসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, সরকারি দল ও পুলিশের হামলা, মামলা, গ্রেফতার, ভয়ভীতি ও উসকানি উপেক্ষা করে রাজপথের কর্মসূচিগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে। সরকারি দল ও পুলিশের সহিংস প্রতিরোধ উপেক্ষা করে তাদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশগুলোতে লোকসমাগম বাড়ছে। সঙ্গত কারণেই বৃদ্ধি পেয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাস। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। আন্দোলনে গুণগত পরিবর্তন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, প্রায় এক দশক পর বিরোধী দলের রাজপথের আন্দোলনে একটি ইতিবাচক ধারা সূচিত হয়েছে। বস্তুত এটি সম্ভব হয়েছে, ক্ষমতার রাজনীতির চেয়ে জনগণের জীবন-জীবিকার অধিকারকে কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণেই। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতায় জনজীবনে সৃষ্ট অস্তিত্বের সঙ্কট, হতাশা ও অনিশ্চয়তাকে রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রধান ইস্যু নির্ধারণ করে বিএনপি বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। জনদুর্ভোগে সাড়া দিয়ে ও জ্বালানি তেল এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দলটি বিগত ২৯ জুলাই থেকে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে। পূর্ব ঘোষণা দিয়েই তারা এই জনমুখী আন্দোলনের সূচনা করে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য- জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপি দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি আহ্বান করে। রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি কর্মসূচিতে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটে। কয়েকটি স্থানে পুলিশ ও সরকারি দলের সমর্থকদের হামলায় বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিবাদ সমাবেশগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত ও পুলিশ-আওয়ামী লীগ যৌথ হামলায় কয়েক শ’ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হলেও কর্মসূচিগুলোতে মানুষের অংশগ্রহণ মোটেও হ্রাস পায়নি। আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্যম-অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে। বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণের আগেই আট সপ্তাহের জনস্বার্থসম্পৃক্ত আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগ সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করেছে। জনগণের বর্তমান দুঃখ-দুর্দশাকে প্রাধান্য দিয়ে আন্দোলনের সূচনা করে বিএনপি নিজেকে দীর্ঘ দিনের ক্ষমতার রাজনীতির অপবাদ থেকে মুক্ত করতে পেরেছে। ফলে, অতীতে যেকোনো সময়ের তুলনায় বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ, উৎসুক, আস্থা ও প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, এবার আন্দোলনের মাঠে নামার আগে বিএনপি হাইকমান্ড আগের ব্যর্থতার কারণগুলো ভালোভাবেই পর্যালোচনা করেছে এবং আন্দোলনে গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বর্তমান পর্যায়ে দু’টি লক্ষ্য স্থির করেছে। তার একটি হলো, এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ইস্যুর চেয়ে জনস্বার্থকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া, অর্থাৎ জনগণের কষ্ট ও দুর্ভোগের বিষয়টিকে কর্মসূচির প্রধান আকর্ষণে পরিণত করা। অন্যটি হলো, পুলিশ ও সরকারি দলের সহিংস উসকানির ফাঁদে পা না দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় রাজপথের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। তারা এটিও মনে করে যে, মানুষের খেয়েপরে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তাকে রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের নীতি ও কর্মসূচির সাথে সমন্বয় সাধন করতে পারলে বিএনপি একটি সফল গণআন্দোলনের সূচনা করতে পারবে। কারণ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ তাদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার বিশেষ করে ভোটাধিকারও ফিরে পেতে চায়।
বর্তমান আন্দোলনের গতি ও প্রকৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, বিএনপি অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ ও সঙ্ঘাতমুক্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি দলের হামলা-মামলার প্রতিবাদে বিএনপির মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন তার উদাহরণ। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপি যে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল এবার তা পরিহারে যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। নির্বাচন বর্জন আন্দোলনে সহিংসতা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ করে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোর দায় বিএনপি অস্বীকার করলেও এ জন্য দলটিকে বেশ নিন্দিত হতে হয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে পুলিশ আজ পর্যন্ত আন্দোলনকালে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকে হামলার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করেনি। সেই গোলযোগপূর্ণ সময়ে রাজপথে সংঘটিত সব হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের দুর্নাম বিএনপির ওপর চাপিয়ে সরকার যে ফায়দা হাসিল করেছিল সে ব্যাপারে দলটি বেশ সচেতন রয়েছে। এ কারণেই এবার পুলিশি হামলার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিএনপি সমর্থকদের আগের মতো পাল্টা হামলা না করে অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। দলের গায়ে সন্ত্রাসের তকমা লাগিয়ে দেয়ার সরকারি ফাঁদে এবার তারা পা দিচ্ছে না। বিএনপি ইতোমধ্যেই তার আন্দোলন কৌশলে লক্ষণীয় পরিবর্তন এনেছে।
বর্তমানে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে চরম অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিরাজমান অর্থনৈতিক সঙ্কটে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। জীবন বাঁচানোর সব উপকরণ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। চাল, ডাল, পেঁয়াজ, নুন, তেল ইত্যাদির দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে, দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের খেয়েপরে বেঁচে থাকাই বড় দায়। সরকারসমর্থক অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এই বিপর্যয়ের জন্য কোভিড মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দোষারোপ করছেন। তবে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনায় সামষ্টিক আর্থিক খাতে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। উন্নয়ন অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। এই সঙ্কট সামনের দিনগুলোতে আরো প্রকট হতে পারে। সঙ্কট মোকাবেলায় হতবিহ্বল সরকার জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়ে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনজীবনের অন্যান্য সঙ্কট। কয়েক কোটি হতাশ বেকার যুবক চাকরির আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির ন্যূনতম কোনো পরিকল্পনাও নেই ক্ষমতাসীন সরকারের। দারিদ্র্যও বেড়ে চলেছে। নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা। তাদের সামনে নেই কোনো আশার আলো। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি স্বাভাবিক জীবন-যাপন অসম্ভব করে তুলেছে। দেশের মানুষ এখন হয়ে ওঠেছে অতিমাত্রায় পরিবর্তনপ্রত্যাশী।
সঙ্গত কারণেই সরকার দেশে একটি ঘনায়মান দুর্বার জনপ্রিয় গণআন্দোলনের আভাস পাচ্ছে। এ কারণে সরকার ও শাসক দল অস্থির হয়ে উঠেছে। তারা আগের মতো রাজপথে বল প্রয়োগের মাধ্যমে বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করতে চায়। উসকানি ও হামলার আশ্রয় নিয়ে বিএনপির চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়। তারা অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপির গায়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের তকমা এঁটে দিয়ে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে তৎপর রয়েছে। আসন্ন গণআন্দোলন দমন করার জন্য নানা কৌশলও গ্রহণ করেছে। তারই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও মনিটরিং কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তদন্তাধীন মামলাগুলোর তদন্তকাজ দ্রুত শেষ করতে। যেসব মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে সেগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া মনিটরিং করা ও স্থগিত মামলাগুলো পুনরায় সচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে জনজীবনে সৃষ্ট নিত্যদিনের আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, নৈতিক ও মানসিক সঙ্কটগুলোকে অবশ্যই রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দরিদ্র ও বেকারদের সমস্যাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিগত দিনে দেশের বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার পালাবদলের লড়াইয়ে নাগরিক অধিকারের কোনো উন্নয়নই হয়নি। ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার নির্বাসিত হয়েছে। গণতন্ত্রের অপমৃত্যুতে এক শ্রেণীর রাজনীতিবিদ-আমলা-ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে সারা দেশ। তারাই এখন দেশের মালিক বনে গেছেন। দুর্নীতি-লুটপাট সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। এতে ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে গরিবরা আরো গরিব হচ্ছে। এই দুষ্টচক্র লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। এদের লাগামহীন লুটপাটে দেশ দেউলিয়া হতে চলেছে।
বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে জনগণের আস্থার সঙ্কট দূর করার জন্য গতানুগতিক কর্মসূচি, বক্তব্য ও বিবৃতিতে আমূল পরিবর্তন সাধন করতে হবে। জনগণের আস্থাহীনতার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। লাখ লাখ শিক্ষিত বেকারকে আন্দোলনের সাথে যুক্ত করতে হবে। বিগত দুই মাসের আন্দোলনে পুলিশ-সরকারি দলের যৌথ নৃশংস ও অমানবিক হামলা ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করে বিএনপি রাজপথে নিজেদের অবস্থান শক্তভাবে ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। রাজপথে বিএনপির সরব উপস্থি’তি গণতন্ত্রকামী নাগরিকদের মন জয় করেছে। একই সময়ে সংবাদপত্রের পাতায় ও টেলিভিশনের পর্দায় দেশীয় ধারাল অস্ত্র সজ্জিত সরকারি দলের সমর্থকদের মহড়া এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও তাদের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলার যেসব চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে, তাতে বিএনপি দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় দাবিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। অন্য দিকে, সরকারি দলের নেতাদের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাটি- ‘বিএনপির আন্দোলনে বাধা দেয়া হবে না’ অসার বলে বিবেচিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের ৫২টি কর্মসূচিতে একতরফা হামলা চালিয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। এসব হামলায় চারজন নিহত ও কয়েক শ’ আহত হয়েছেন। বিএনপির ৫২ হাজার নেতাকর্মীকে মামলার আসামি করা হয়েছে; কিন্তু তাতেও আন্দোলনে ছেদ পড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন আরো বেগবান হবে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। কারণ দীর্ঘ দিন পর সাধারণ মানুষ বিরোধী দলের আন্দোলনে তাদের চাওয়া-পাওয়ার একটি মিল খুঁজে পেয়েছে। তারা এখন মুক্তির লড়াইয়ে বিরোধী দলের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আন্দোলনের কর্মসূচিতে জনগণের বাঁচা-মরার দাবিগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আসলে সময়ের দাবি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা