২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

একটি কলেজের ইতিবৃত্ত

-

১৯৬৯ সালের ৭ আগস্ট। প্রায় ৫২ বছর আগের কথা। তখন যশোরে কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাই এ দিনটি ছিল এলাকাবাসীর কাছে একটি আনন্দের দিন, স্মরণীয় দিন। নিজে ছিলাম কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নের একজন শিক্ষক। আবার সাংবাদিকও। কলেজ গড়ার পেছনে এর সঠিক তথ্য ইতিহাস তুলে ধরাই একটি মহান দায়িত্ব।

১৯০৩ সালে যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের তীরেরহাট গ্রামে তাবারক হোসেন নামে একজন মহান ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন শিক্ষাদরদি, নিঃসন্তান। একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। তিনি স্বপ্ন দেখেন তার এলাকার কৃষক পরিবারের দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের ছেলেমেয়েরা কিভাবে উচ্চশিক্ষা লাভ করবে। একদিন তার এই কলেজ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়।

যশোর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের পাশে ছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা। ঘন বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ ইটভাটায় কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সভার আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন দৌলতদিহি গ্রামের ডা: জনাব আলী। সে দিন সভায় শাহবাজপুর গ্রামের ডা: এলাহী বক্স কলেজের নামকরণ হবে কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ মর্মে প্রস্তাবটি করা হলে তুমুল হর্ষধ্বনি ও করতালির মাধ্যমে সেটি সমর্থন লাভ করে।

উল্লেখ্য, কাজী নজরুল তখন ভারতীয় নাগরিক। এ দেশে তার নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামকরণ এটিই প্রথম বলা যায়।

পরবর্তীকালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত থেকে কবি নজরুলকে বাংলাদেশে আনার উদ্যোগ নেন। ১৯৭২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশ বিমানে করে সপরিবারে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ধানমন্ডির কবি ভবন বর্তমান নজরুল ইনস্টিটিউটে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয়ভাবেই গ্রহণ করা হলো।

সে দিন কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে আয়োজিত সভায় আমার উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়ে সবে বাড়ি ফিরেছি। প্রতিষ্ঠাকালীন একজন শিক্ষক হিসেবে ১৯৬৯ থেকে ২০০৪ সালের ৩০ মে পর্যন্ত প্রায় ৩৫ বছর ধরে খুব কাছ থেকে এই কলেজকে দেখার ও গড়ার ব্যাপক সুযোগ ঘটেছে। তবে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালে কলেজে কোনো দায়িত্ব পালন করিনি। যেহেতু যশোর সেনানিবাস সংলগ্ন আমার গ্রাম হওয়ায় প্রায় সপ্তাহ আগেই সপরিবারে গ্রাম ছেড়ে মামাবাড়ি শ্বশুরালয়ে, ঝিনাইদহ ও শৈলকুপায় আশ্রয় গ্রহণ করি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। এ সময়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে একটি দায়িত্ব দেয়, যেহেতু স্বাধীনতার আগে কবি নজরুলের প্রতি সম্মানার্থে এ দেশে প্রথম কলেজ স্থাপিত হয় এ জন্য যেকোনো মূল্যে তাকে আমাদের কলেজে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই মহান দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে আমি ঢাকা রওনা হই। এ সময় আমার কাছে থাকত সাংবাদিকতার একটি পরিচয়পত্র। ফলে অফিস-আদালত প্রভৃতি স্থানে অবাধে যাতায়াত করার বিশেষ সুবিধা ছিল।

ঢাকায় ‘কবি ভবনে’ যখন পৌঁছলাম তখন বেলা ২টা। কবিকে পরম আদরে মুখে ভাত তুলে দিচ্ছেন তার পুত্রবধূ উমা কাজী। আমার পরিচয় ও বিস্তারিত জেনে তিনি খুবই খুশি হলেন। ওই সময়ে কবির গায়ে হাত রেখে তাকে ছুঁয়ে দেখার পরম সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। উমা কাজী আমাকে জানালেন তাদের সীমাবদ্ধতা ও সাধ্যের কথা। ইচ্ছা করলেই তারা বাইরে কোথাও যেতে পারেন না। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। তা ছাড়া কবির শারীরিক অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। তবে আপনাদের এই আমন্ত্রণ আমরা গ্রহণ করলাম। সময় এবং পরিস্থিতির ওপর এটি নির্ভর করবে। আমি ঢাকা থেকে ফিরে আসার তিন মাস পরই কবি নজরুল ইসলাম পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

এ প্রসঙ্গে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কলেজের শহীদ লে. আনোয়ার হোসেন পাঠাগারে বসে লাইব্রেরিয়ানের সাথে পাঠাগারের তদারকি করছিলাম। কলেজ থেকে অবসর নিলেও পাঠাগারের সভাপতি হিসেবে দায়বদ্ধতার জন্য সেখানে ছুটে যাই। দুপুর ১২টায় হঠাৎ চেয়ে দেখি, একটি মাইক্রোবাস কলেজে ঢুকছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম, কুষ্টিয়া জেলার বিশিষ্ট শিল্পপতি আলাউদ্দিন ও কবি নজরুল ইসলামের পৌত্র সুবর্ণ কাজী কলেজে এসেছেন। তাদেরকে অভ্যর্থনা জানালাম। রাস্তায় কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ সামনে দেখেই এই যাত্রাবিরতি। লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খুশি হন তারা। পাঠাগারে নজরুলের বই নিয়ে ‘নজরুল কর্নার’ গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানান। আমরা তাদের এই অনুরোধে এবং সম্মানার্থে একটি ‘নজরুল গ্যালারি’ স্থাপন করেছি।

১৯৭০ সাল, ৯ ফেব্রুয়ারি। আমার জীবনে সূচনা হয় একটি নতুন অধ্যায়। কলেজ ক্যাম্পাসে একটি স্কুটার এসে থামে। চেয়ে দেখি, আমার শ্রদ্ধেয় স্যার শরীফ হোসেন স্কুটার থেকে নামছেন। দ্রুত ছুটে গিয়ে অভ্যর্থনা জানালাম। তিনি শুধু আমার কলেজের শিক্ষকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন আমার দীক্ষাগুরু। জীবনে চলার পথে মানবসেবা, মানুষের কল্যাণে কাজ করার যে প্রেরণা, শিক্ষা তার কাছ থেকেই পেয়েছি। কোনো দ্বিধা বা সঙ্কোচ না করেই সরাসরি বললেন, এ বিষয়ে তোমার আব্বার সাথে আমার কথা হয়েছে। আমার সাথে তোমাকে এখনই যেতে হবে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো স্যারের সে আদেশ পালন করলাম।

ওই দিকে আমার শুভ বিয়ের ব্যবস্থা আগেই তিনি পাকাপাকি করে রেখেছেন। স্যারেরই চাচাতো শ্যালিকা খড়কি পীরবাড়ির মেয়ে কাজী মাহমুদুল হক মন্টু সাজুর বান্ধবীর সাথে। পাত্রী হচ্ছে আমার হবু স্ত্রী। বিয়ের আগে কনে দেখার রেওয়াজ থাকা সত্ত্বেও তা পালন করা হয়নি। কেননা স্যারের দৃঢ়বিশ্বাস ছিল আমার প্রতি। তার কথার কোনো নড়চড় করার সাধ্য আমার নেই। ছাত্রাবস্থায় আমার স্কুল-কলেজ জীবনের বহুদিন কেটেছে খড়কিতেই। আমি সেখানে ফুফুর বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতাম। স্যারের ও ফুফুদের বাড়ি ছিল পাশাপাশি। ফলে স্যারের সান্নিধ্যে আসার সৌভাগ্য হয়। এর ফলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভক্তি বিশ্বাস ছিল অটুট।

যশোর শহরের বকুলতলা গরীবশাহ মাজারের পাশেই কলেজের অস্থায়ী কার্যালয়। সন্ধ্যার পর সেখান থেকে বরের পোশাকে সাজি। পুরাতন কসবা বেগম মিলের মালিকের বাড়িতে আমার শ্বশুর ভাড়া থাকতেন। সেখানেই শুভ বিবাহের আয়োজন সম্পন্ন হয়। উপস্থিত ছিলেন আমার শ্বশুরের নিকটতম আত্মীয় পূর্বাচল জুটমিলের মালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি আবদুর রশিদ। এই কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ আবদুস সালাম, আবদুর রশিদ ও মকছুদুল হক। আমার জীবনে সে দিন বিয়ের এই পর্বটি ঘটেছিল কলেজকে নিয়েই, যা আমার কাছে চির জাগরূক হয়ে আছে।

একটি প্রবাদ আছে, ‘Rome was not Built in a day’. স্বাধীনতার পর আমরা কলেজে ছিলাম সাতজন শিক্ষক যারা তাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সমুদয় টাকা কলেজ তহবিলে প্রদান করেন। তারা এখন ওই টাকা দিয়ে নিজ এলাকা বা শহরে কিছু জমি কিনতে পারতেন।

কলেজের উন্নয়নকাজে তিনজন সংসদ সদস্যের কথা আমাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হয়। তারা হচ্ছেন অ্যাডভোকেট রওশন আলী, তবিবর রহমান সরদার ও আলী রেজা রাজু। স্বাধীনতার পর তবিবর রহমান ত্রাণ ও পুনর্বাসনে কলেজে ২০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেন। আলী রেজা রাজু তার কাছে গেলে কলেজের কাজকে অগ্রাধিকার দিতেন। ১৯৭৩ সালে অ্যাডভোকেট রওশন আলী কলেজের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার মতো ভালো সহজ সরল বিনয়ী মানুষ আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি। কলেজের সভাপতি হওয়ার সুবাদে খুব কাছে থেকে তাকে আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। দল মত নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সবার জনপ্রতিনিধি। কেউ তার কাছে গেলে কখনও কাউকে নিরাশ হয়ে ফিরে আসতে দেখিনি। কখনও বিরক্ত বোধ করেননি। হাসিমুখে সকলের কাজ সমাধা করে দিতেন।

একটি ‘মজার ঘটনা’ উল্লেখ করছি। কলেজের কাজ নিয়ে আমি ঢাকায় গিয়েছি। উদ্দেশ্য শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করা। তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি রহমত আলী। দু’জনেরই আবার ছিল খুবই সুসম্পর্ক। আমরা সংসদ ভবন হতে রহমত আলীকে সাথে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে রওনা হই সকাল ৯টায়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় এমপি রওশন আলীর স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর সময় নির্ধারিত ছিল। আমরা কলেজের কাজ শেষে যখন সংসদ ভবনে পৌঁছলাম তখন বেলা দেড়টা। তার স্ত্রী রওশন আলীকে জানালেন, আমার থেকে কি কলেজের কাজ বড় হলো? তিনি অকপটে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমার কাছে কলেজের কাজই বড়।’ একেই বলে ‘জননেতা’। আজকাল এমন নেতা দেশে হাতেগোনা দু’চারজনই আছেন। কলেজের ইতিহাসে একজন সেনা কর্মকর্তা এম এ মঞ্জুরের সহযোগিতা ও অবদানের কথা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কলেজের পাশেই স্বাধীনতাযুদ্ধে যশোর সেনানিবাসের প্রথম বীর শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা লে. আনোয়ার হোসেনের কবর অবস্থিত। প্রতি বছর ৩০ মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদাসহকারে যশোর সেনানিবাস ও কলেজ কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে তার মৃত্যু দিবসটি পালিত হয়।

১৯৭৩ সালে এম এ মঞ্জুর যশোর সেনানিবাসের জিওসি। তিনি কলেজ চত্বরে শহীদ লে. আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে যোগদান করেন। এরপর হতেই তার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। ঢাকা সেনানিবাসে বিভিন্ন পদমর্যাদায় থাকাকালীন সময়ে তার সাথে অফিস ও বাসায় কয়েকবার সাক্ষাৎ করি। যশোর হতে বদলি হওয়ার আগে তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আপনারা কলেজের কাজে আমার কাছে আসবেন যে কোনো সময়ে।’

১৯৭৮ সালে মহিউদ্দীন খান আলমগীর যশোর জেলা প্রশাসক। ঝিনাইদহ হতে রাতে যশোরে ফেরার পথে তিনি কলেজের পার্শ্ববর্তী রহমতপুরে মাঠের কাছে ডাকাতের কবলে পড়েন। দেহরক্ষীর বুদ্ধিমত্তায় তিনি প্রাণে রক্ষা পান। ডাকাতদের কাছে আগেই খবর ছিল এই সড়কপথে একটি বিয়ের গাড়ি আসবে। তারা ভুলক্রমে ডিসির গাড়ি থামায়। এলাকার একজন কলেজশিক্ষক গ্রাম্য দলাদলির শিকার। ডাকাতিতে তার নামে মামলা হয়। এর ফলে ডিসি কলেজের প্রতি খুবই বিরাগভাজন হন। জেনারেল এম এ মঞ্জুর তখন চট্টগ্রামের জিওসি। অধ্যক্ষ ও আমি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে তার সাথে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাদের মুখে বিস্তারিত জেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন করতে বললেন। আমরা আবেদনটি তার অফিসে রেখে যশোরে পৌঁছানোর আগেই রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রেরিত প্রেসিডেন্টের তহবিল হতে কলেজে এক লাখ টাকা অনুদানের চেক এসে পৌঁছায়। এরপর কলেজ নিয়ে আর কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি।

কলেজের ২২ বিঘা জমিতে বনায়ন ও পরিবেশ সৃষ্টিতে পেয়েছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সহযোগিতা। তাদের কথাও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। ওই সময়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক-কর্মচারীদের কলেজ হতে দেয় প্রাপ্য অংশের বেতন পরিশোধ করতে পারত না। ২০০৪ সালের পূর্বে সরকারিভাবে কোনো কল্যাণ ভাতা, অবসরভাতার ব্যবস্থা ছিল না। অনেক মেধাবী শিক্ষক বাধ্য হয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তখন অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান গাজী আবদুস সালামের সাথে দেখা করি। তাকে ভালো ভাবে বোঝাতে সক্ষম হই। প্রস্তাব করি, ‘স্যার আপনি কলেজকে বৃক্ষ রোপণে সহায়তা দেন।’ ওই গাছ বড় হলে তা বিক্রি করলে কিছুটা আর্থিক সুবিধা পাবেন তারা। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বোর্ড হতে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। শর্ত জুড়ে দেন ওই গাছের মালিক হবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারাই কেবল এটি অবসরকালীন সময়ে প্রয়োজনে নিজেরাই ব্যবহার করবেন। বোর্ড হতে প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো করা হচ্ছে কি না সেটি তদারকি শেষে পরবর্তী বছরের বরাদ্দ দেয়া হতো। এভাবে পরপর তিন-চার বছর এই বরাদ্দ চলমান থাকে। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান, অফিস ও ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এদের মধ্যে ছিলেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল কাদের, যশোর শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ, বারডেম হাসপাতালের বিশিষ্ট কার্ডিওলর্জিস্ট ডা: আবদুর রশিদ, কর্নেল (অব:) মেহের মহব্বত, কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ঢাকা কল্যাণপুরে অবস্থিত পল্লী চিকিৎসক গড়ার অন্যতম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এনএফএম-এর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক, প্রাক্তন ছাত্র বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড: সাধনকুমার বিশ্বাস।


আরো সংবাদ



premium cement