২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বার্থ কায়েমে ধর্মের অপব্যবহার

স্বার্থ কায়েমে ধর্মের অপব্যবহার - ফাইল ছবি

ইসলাম শান্তির বারতা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। এটি শান্তির ধর্ম বলেই মুসলমানরা প্রায় ছয় শ’ বছর ভারত উপমহাদেশ শাসন করলেও বর্তমান ভারত হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ। হাজার হাজার মন্দির ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর উপাসনালয় ও আশ্রম যুগ যুগ ধরে পূজা উপাসনার আলয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর হিন্দু অধ্যুষিত ভারতে শত শত হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলেও মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে উভয় সম্প্রদায় পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সহাবস্থান করে সামাজিক জীবনযাপন করছে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কওমি মাদরাসা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার ১০০ গজের মধ্যেই হিন্দুদের কালী মন্দিরসহ দেশের অনেক স্থানেই মাদরাসা-মসজিদ ও মন্দির পাশাপাশি ঐতিহ্যের ধারক হয়ে নিরাপদে দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাত্র ১০০ গজের মধ্যেই শিখ সম্প্রদায়ের গুরুদুয়ারা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে কয়েক শ’ বছর। আসলে ইসলামের শিক্ষাই হলো, ‘এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে, তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না।

কেননা এরা শিরক থেকে আরো অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত যেন আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে...’। (সূরা আনআম, ৬ : ১০৮) কাজেই বাংলাদেশের আলেম-উলামা এবং সর্বশ্রেণীর মুসলিম জনতা সাধারণভাবে ইসলামের এই সুমহান শিক্ষা মেনে সহনশীল হলেও বারবার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের বলি হচ্ছে অমুসলিম সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, সম্পদ ও উপাসনালয়। গত এক দশকে এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলা দিয়ে শুরু করে গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লায় সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর হামলার। এর মাঝে পাবনার সাঁথিয়ায় ২০১৩ সালে, চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ২০১৪ সালে, হবিগঞ্জের মাধবপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ২০১৬ সালে এবং রংপুরের গঙ্গাচড়াতে ২০১৭ সালে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাগুলোর মধ্যে থেকে রামু, নাসিরনগর এবং শাল্লার ঘটনা অপেক্ষাকৃত বেশি গুরুতর। তবে বিশ্লেষণে উল্লিখিত সব ঘটনার প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি প্রায় একই রকম দেখা যায়।

২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রামু, উখিয়া এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় একদল লোক হামলা চালিয়ে ১৭টি বৌদ্ধ মন্দির ও আশ্রম, দু’টি হিন্দু মন্দির এবং পঞ্চাশেরও বেশি বাড়িঘর ভাঙচুর করে ও আগুনে পুড়িয়ে দেয়। ‘উত্তম বড়ুয়া’ নামে জনৈক যুবকের ফেসবুক ওয়ালে কুরআন শরিফের অবমাননাকর ছবি প্রকাশিত হলে তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়বিরোধী উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায় এই তাণ্ডব চালানো হয়। ওই ঘটনার সময় বৌদ্ধদের সহায়-সম্পদের ব্যাপক লুটপাট করা হয়। উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক হ্যাক করে এই অপপ্রচার চালানো হয় বলে অনেকে মনে করেন, যদিও তা প্রমাণিত হয়নি। এ ঘটনায় তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর আগে আক্রমণকারীদের চিহ্নিত এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ২০১৩ সালের ১৬ মে হাইকোর্টে উপস্থাপিত একটি তদন্ত প্রতিবেদনে স্থানীয় প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যর্থতাকে এই নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় এই তদন্ত প্রতিবেদনে ২৯৮ জনকে চিহ্নিত করা হয় আক্রমণকারী হিসেবে। পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদনে কক্সবাজার জেলার তৎকালীন এসপি এবং রামু থানার ওসিকে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা হলেও শুধু ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে ২০৫ জনকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং উদঘাটন করা হয় যে, ১০ দিন আগে চারটি পর্যায়ে এ হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল (দ্য ডেইলি স্টার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০)। পুলিশ ৩৮৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে যাতে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কারো নাম না থাকলেও স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বিএনপি নেতা, রামু উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদকেও আসামি করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে আসামিদের কেউ পলাতক, কেউ জামিনে আছেন। আর ওই হামলার বিচার আজো শুরু করা যায়নি। জানা যায়, যারা ঘটনার পরপরই হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেছিলেন তারাও এখন আর খুব একটা আগ্রহী নন ওই মামলা পরিচালনা করতে (প্রাগুক্ত)। সব মিলে ‘বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে’।

২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার কাশিপাড়া গ্রামের দত্তবাড়িতে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ১০০ বাড়িঘর এবং ১৭টি মন্দির ভাঙচুর করে ও আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তাদের সম্পদ ব্যাপকভাবে লুটপাট করে। এতে আটটি মামলায় দুই হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তবে এখনো সাতটি মামলার তদন্ত অসমাপ্ত রয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে একটির চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ ২২০ জনের নাম দেয়া হয়েছে। ১২৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও তারা এখন জামিনে রয়েছেন। ওই ঘটনাতে ‘রসরাজ দাশ’ নামে একজন মৎসজীবীর ফেসবুক হ্যাক করে এতে কাবাঘরের ছবির পাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন দেবতার ছবি পোস্ট করা হয়। এটি ফেসবুকে ভাইরাল করে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়কে উত্তেজিত করে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। ঘটনার আগে ‘তৌহিদি জনতা’র নামে সমাবেশ করে দিনে-দুপুরে আক্রমণ চালানো হয়। কিন্তু এর বিচার শুরু করা যায়নি। এ ব্যাপারে চুয়েটের কম্পিউটার সাইন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মতিউর রহমান মিনার এবং জীবন নাহার তাদের আর্টিক্যালে প্রকাশ করেন যে, ‘তৎকালীন নাসিরনগর ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে জেলেদের ইউনিয়ন নেতা রসরাজ দাশের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ছিল। ফলে ওই নেতা তার ভাইয়ের মাধ্যমে রসরাজের নামে একটি ফেসবুজ পেজ খুলে তাতে কাবাঘরের অবমাননাকর ছবি পোস্ট করে দিলে ওই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।’

সিরিজের সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে গত ১৭ মার্চ। ১৫ মার্চ পাশের দিরাই উপজেলা শহরে মাওলানা মামুনুল হক একটি ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। ১৬ মার্চ নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশ মামুনুল হককে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ১৬ মার্চ রাতে পুলিশ ঝুমনকে গ্রেফতার করে। ১৭ মার্চ ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম স্বাধীন ও তার সহযোগীরা আক্রমণ চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করেন এবং অগ্নিসংযোগ ঘটান। এতে এসআই আবদুল করিম দেড় হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের জনৈক বিবেকানন্দ মজুমদার ৫০ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং আরো দেড় হাজার অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গ্রামবাসী আগেই হামলার আশঙ্কা করে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছিল। জানা যায়, সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শহিদুল ইসলাম স্বাধীন ও তার সহযোগীরা নোয়াগাঁও গ্রামের পাশের ‘বরাম’ হাওরে ‘গোসাইর ও নিত্যার ধাই’-এর জলমহালে মাছ ধরতেন। তারা ইজারার শর্ত লঙ্ঘন করে সেচ পাম্প দিয়ে মাছ ধরায় এলাকায় পানি সঙ্কট দেখা দেয় এবং কৃষিকাজে বিঘ্ন ঘটে। নোয়াগাঁও গ্রামবাসী বিভিন্ন সময়ে শাল্লা উপজেলা প্রশাসন, থানা ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি জলমহালে সেচ দেয়ার সময় ঝুমন দাশ বিষয়টি ফেসবুকে সরাসরি লাইভ করেছেন। তখন ঝুমনকে ‘দেখে নেয়া’র হুমকি দিয়েছিলেন স্বাধীন মেম্বার। ওই ঘটনায় স্বাধীনসহ ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উপরের তিনটি ঘটনা বিশ্লেষণ করলে বেশ কিছু সত্য বের হয়ে আসে। সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো- ১. সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো ধরনের আক্রমণে আলেম-উলামা, ইমাম-মুয়াজ্জিন বা কোনো ইসলামী ব্যক্তির নেতৃত্ব দেয়ার প্রমাণ মেলেনি। ইসলামে সংখ্যালঘু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর ওপর কোনো ধরনের আক্রমণকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২. প্রতিটি ঘটনাতেই দেখা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কোনো না কোনোভাবে হামলায় জড়িত, যার মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই সাধারণত বেশি। ৩. বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয় বা উদাসীন ছিল অথবা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের সুযোগ বন্ধ করেনি। তাদের এ ধরনের নিষ্ক্রিয়তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, তা প্রশ্নের দাবি রাখে। ৪. এ ধরনের ঘটনাগুলোয় ব্যাপক লুটপাট ও চুরি-ডাকাতির ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। অর্থাৎ লুটপাটের একটি উপলক্ষ বা পরিবেশ সৃষ্টি হোক, তা সংশ্লিষ্টরা চায়। ৫. স্বার্থের দ্বন্দ্ব এ ধরনের হামলার পেছনে কাজ করতে দেখা গেছে।

প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার কৌশল হিসেবে ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগানো হয়ে থাকে। ৬. প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ ইসলামের শিক্ষা হলো- ‘কোনো পাপাচারী ব্যক্তি যদি কোনো খবর নিয়ে আসে তবে তা যাচাই করে নেবে, যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।’ (সূরা হুজরাত, ৪৯ : ৬) রাসূল সা: বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে কোনো কথা শুনল এবং তা যাচাই না করেই অন্যকে বলল।’ (আল হাদিস) ৭. প্রতিটি ঘটনাতেই মূল উপাদান হিসেবে ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট কাজে লাগানো হয়েছে। গ্রামের স্থানীয় ধর্মপ্রাণ অথচ অশিক্ষিত জনতাকে সস্তা সেন্টিমেন্টের দোহাই দিয়ে পরিকল্পিতভাবে উত্তেজিত করা হয়েছে আক্রমণ করার জন্য। ৮. আজ পর্যন্ত এসব ঘটনার কোনো সুষ্ঠু বিচার করা হয়নি। ফলে নতুন নতুন আরো সংখ্যালঘু আক্রমণের ঘটনা ঘটে চলেছে। প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত হয়েছে, প্রকৃত দোষীরা চিহ্নিত হয়েছে, তথাপি বিচারকার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়নি। এখানে দায়িত্বশীল পক্ষের অস্পষ্টতা পরিলক্ষিত হয়। ৯. প্রতিটি ঘটনাতেই বেরিয়ে এসেছে হামলার মূল উদ্দেশ্য। বাইরে থেকে শুধু ইসলাম রক্ষা বা ইসলামের অবমাননার প্রতিবাদের উদ্দেশ্যকে সামনে রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল লুটপাট, ব্যক্তিগত শত্রু দমন, নোংরা রাজনীতি, প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ওপর দোষ চাপিয়ে তাদেরকে বিতর্কিত করাসহ প্রভৃতি। ১০. প্রতিটি ঘটনার পরই একটি সচেতন মহল ও মিডিয়ার একটি চক্র ঘটনাকে ‘মৌল’বাদের দিকে তাৎক্ষণিকভাবে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করে এবং এর সাথে ‘স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’কে জড়িত করে ফেলে, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আর ওই মহলের এই প্রয়াসে শুধু হামলাকারীরাই লাভবান হচ্ছে এবং তাদের অসৎ ও লুকানো উদ্দেশ্য সফল হয়।

রামুর ঘটনা প্রায় আট বছর হয়ে গেলেও আজো তার বিচার হয়নি। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আট বছর ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ চলেছেই। যত দ্রুত সম্ভব অগ্রগণ্যতার ভিত্তিতে এমন প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। নইলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের দেশ ও জাতিকে অসভ্য-বর্বর করে তুলবে, এতে জাতির স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। যারা এসবের বিচার করছেন না, তাদেরই একদিন জাতি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। আর যারা ভাবছেন আমার কী ক্ষতি, শুধু বিরোধী গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং ইসলামিস্টদেরই শায়েস্তা হচ্ছে, তারাও একদিন এই সন্ত্রাসের অনলে দগ্ধ হবেন। কাজেই আসুন, আমাদের এই মাতৃভূমিতে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়কে সম্মান করতে শিখি, তাদের ওপর প্রতিটি অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এবং একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করি।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: maksud2648@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement