শহীদ জিয়া-আঁধারে বাতিঘর
- শায়রুল কবির খান
- ৩১ মে ২০২০, ০৬:৫১, আপডেট: ৩১ মে ২০২০, ০৬:৪২
মে ৩০ বাংলাদেশের মানুষের জন্য ঘোর অন্ধকারাচ্ছন অভিশপ্ত একটি দিন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর ৩৯ তম শাহাদতবার্ষিকী। বছর ঘুরে ঘুরে এই দিনটি যখন বারে বারে আসে, তখন আমরা কী এক মহান ভিশনারি স্টেটম্যানকে হারালাম, সেই ভাবনায় ঘুমকাড়া বিষাদে বিচলিত হয়ে উঠি। বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চে স্বল্প সময়ের জন্য তিনি কাজ করতে পেরেছিলেন, কিন্তু প্রায় পাঁচ বছরের তাঁর কাজ তাঁকে করেছে কালজয়ী এক মহাপুরুষে।
তাই ঐতিহাসিকভাবেই তাকে সামনে রেখে তাঁর দেখানো পথে নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে আমাদের আগামীর প্রতিটি ভাবনা। তিনি আমাদের অগ্রগতির "বাতিঘর"।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্য ও প্রগতির মধ্যে ঐকতান স্থাপনের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সার্কের স্বপ্নদষ্টা, এশিয়ার বৃহৎ রাষ্ট্র চীন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রদান ও মুসলিম দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে দিয়ে।
রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দলের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি'র নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন চালানোর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস ও অকার্যকর করে দেয়া হচ্ছে।
মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা দিয়ে ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রেখেছিল। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সরকার দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়।
এ পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতৃত্বের ওপর ন্যস্ত হয়েছে ঐতিহাসিক দায়িত্ব —
১. দলকে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করে গড়ে তোলা। দেশের জনগণকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করা।
যার মধ্য দিয়ে এই দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে যথাসম্ভব কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে যাতে তারা তাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করতে সক্ষম হন।
২. গত কয়েক বছরে বিএনপির ওপর দিয়ে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব বয়ে গেছে। ঝড়ে গাছটি উপড়ে পড়ে যাওয়ার কথা কিন্তু পড়েনি, কারণ ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’-এ বিএনপির আদর্শিক জায়গাটি মজবুত। ২০০৭-এর এক-এগারোতে মইন-ফখরুদ্দীন চক্র বিএনপি এবং জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করতে প্রচণ্ড আঘাতের যে ষড়যন্ত্র করেছিল সেটা এখনো থামেনি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগামীর কাণ্ডারী দেশ নায়ক তারেক রহমান, জননেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারা দেশে লাখ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার হয়রানিমূলক মামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ক্রমাগত নিপীড়ন, গুম-খুনের মধ্যে আমরা আমাদের আদর্শের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিখ্যাত উক্তি ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’ – সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি যতো বাড়বে ততই আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী সকল শক্তি একত্রিত হয়ে আগামীর স্বপ্ন পূর্ণ হবে।
৩. ‘সুশাসনের জন্য পরিবর্তন’ এই শতকের চ্যালেঞ্জ। সব মানুষকে, নারী-পুরুষ সবাইকে পূর্ণ সম্ভাবনায় বিকশিত করার সুযোগ দিয়ে, পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের অভিন্ন সমৃদ্ধি আসতে পারে। সামাজিক ব্যবস্থায় পুরুষের সক্ষমতা অর্জনের জন্য পুরুষদের মতো নারীরাও যারা তাদের ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা বেছে নিতে পারে সে পরিবেশ আনতে হবে। সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত সুশাসনে আমাদের সমাজ, পরিবার, ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাস লালিত হলে সমাজের অগ্রগতি সাধিত হয়।
৪. দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশগুলো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বজায় রেখেই অর্থনীতির প্রভূত উন্নয়ন সাধন করছে। একইভাবে প্রযোজ্য কুয়ালালামপুর থেকে দুবাই পর্যন্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের বিস্ময়কর অগ্রগতির ক্ষেত্রে। যেকোনো উন্নয়ন কৌশল শুধুই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ নির্ভর হতে পারে না। বরং বেশি করে দরকার বেকার জনশক্তিকে নিয়োজিত রাখা । তেলের কারণে উপসাগরীয় দেশগুলো বিশাল সম্পদের অধিকারী হয়েছে ঠিকই কিন্ত তারা তাদের সেই সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। অর্জিত সম্পদ যে পাশ্চা্ত্যে নিয়োজিত রাখে তার আদৌ নির্ভযোগ্যতা নেই। তাই সেখানকার কোনো কোনো দেশ এখন ব্যাপক উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করছে। কিন্তু সবাইকে এটা স্বীকার করতে হবে সুশাসনেই দিয়েছে শিক্ষা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির প্রভূত উন্নয়ন সাধন করার। আমরা পিছিয়ে আছি সুশাসনের অভাবে। তাই আমাদের এই শতকের স্লোগান ‘পরিবর্তনের জন্য সুশাসন-সুশাসনের জন্য পরিবর্তন’ সুশাসন ফিরে এলে তবেই দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, দুবাইয়ের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুবিচার ও সমৃদ্ধির নীতি অনুসরণ করে।
লেখক : সহ-সভাপতি
জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা- জাসাস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা