মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বনাম ইরানের অগ্রযাত্রা
- রাশিদুল ইসলাম
- ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন একবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে ‘শান্তিপূর্ণ, নীরব, মারাত্মক প্রতিকার’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। উইলসন অর্থনৈতিক যুদ্ধের অনন্য শক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন, যা ‘একটি চাপ এবং কোনো আধুনিক জাতি প্রতিরোধ করতে পারে না’ (হাফবাউয়ার, গ্যারি এবং জেফ্রি ২০১৬, পৃষ্ঠা-১)। উইলসনের মূল্যায়নের এক শতাব্দী পরে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার শক্তি আগের চেয়ে আরো স্পষ্ট। নিষেধাজ্ঞাগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী, এমনকি মারাত্মক নীতিগত হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত, যা রাষ্ট্রযন্ত্র এবং যুদ্ধের মধ্যে রেখাগুলোকে ঝাপসা করে দেয়।
গত সাড়ে চার দশক ধরে ইরান বিশ্বের সর্বাধিক নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশ। কিন্তু দেশটি সক্ষমতার সাথে এর মোকাবেলা করছে। ফলে ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা পরাশক্তির নিষেধাজ্ঞার বিচক্ষণতা ও কার্যকারিতা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে। ইরান বহুপক্ষীয় (২০০৬-১৬) এবং একতরফা (২০১৮ থেকে বর্তমান) নিষেধাজ্ঞার প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশ্বের কঠোরতম এসব নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার ওপর উল্লেখযোগ্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এগুলো আরোপ করা হয়েছে পারমাণবিক বিস্তার, সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকার সম্পর্কিত নানা স্তরের কর্তৃপক্ষের অধীনে এবং ইরানের বিভিন্ন খাত, সত্তা ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এর ফলে ইরানের মুদ্রার দ্রুত অবমূল্যায়ন, তীব্র বাণিজ্য ও রাজস্ব ঘাটতি, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের হারসহ বিস্তৃত নেতিবাচক ফলাফল বয়ে এনেছে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে ইরান নিষেধাজ্ঞার চাপ সত্যিকার অর্থে প্রশমিত করতে সক্ষম হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে ইরানের শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে পরাশক্তিগুলোর উপনিবেশে পরিণত না হয়ে স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকা যায়। বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থাগুলো ইরানের এ প্রতিরোধ সাফল্য নিয়ে গবেষণা করছে। উদাহরণস্বরূপ, Gutmann, Neuenkirch, এবং Neumeier (২০২৩) এক গবেষণায় নিষেধাজ্ঞা পর্বের প্রথম দুই বছরে ইরানের মাথাপিছু জিডিপিতে ২.৮ শতাংশ হ্রাস দেখতে পায়। নিষেধাজ্ঞা অপসারণের পর প্রথম তিন বছরে তারা কোনো পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখতে পায়নি। ঘবঁবহশরৎপয এবং ঘবঁসবরবৎ (২০১৫) জাতিসঙ্ঘ এবং মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের উপর আলোকপাত করতে গিয়ে ১৯৭৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ১৬০টি দেশের (যার মধ্যে ৬৭টি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছিল) একটি নমুনা নিয়ে গবেষণা করে। তারা দেখায় যে জাতিসঙ্ঘের নিষেধাজ্ঞা রাষ্ট্রের বার্ষিক প্রকৃত মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধির হার ২ শতাংশেরও বেশি হ্রাস করেছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি সামগ্রিকভাবে ২৫.৫ শতাংশ কমেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে বার্ষিক মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধির হার দুর্বল হয়ে পড়ে।
নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক ব্যয় সম্পর্কে সাধারণ ঐকমত্য রয়েছে। তবে, এতসব নিষেধাজ্ঞা ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পতন ঘটায়নি বা এর রাজনৈতিক আচরণে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনও আনেনি। বিশেষ করে, ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রচারণার অধীনে ট্রাম্প প্রশাসনের (আগের শাসনামলে) নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনঃপ্রবর্তনের ফলে ইরানের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন বা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক প্রকল্প বন্ধ হয়নি।
কার্যত ইরানে নিয়মিত নির্বাচন বা নির্বাচিত সরকারের শাসনব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে দেশটির বিরুদ্ধে দেয়া নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় রাজনৈতিক আচরণের পরিবর্তন ঘটে। শাসনতান্ত্রিক অবকাঠামো এমন কয়েকটি স্তরভিত্তিক যে শাসকদের কেউই কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে না; বরং জবাবদিহি করতে বাধ্য। সংসদ, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সবাই এই স্বচ্ছতার আবরণে আবদ্ধ। আছে সাংবিধানিকভাবে বাধ্যতামূলক অভিভাবক পরিষদ যেটি ইসলামী প্রজাতন্ত্রী ইরানে যথেষ্ট ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার করে। তাই একনায়কতন্ত্র সৃষ্টির কোনো অবকাশ নেই।
ইরান একই সাথে জিডিপি-ভিত্তিক পশ্চিমা অর্থনীতির সূচকধর্মী অর্থনীতির বাইরে এসে বিকল্প অর্থনৈতিক ধারা গড়ে তোলে। নিষেধাজ্ঞার কারণে আমদানি ও রফতানি হ্রাসের পাশাপাশি মার্কিন ডলারভিত্তিক আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা বা সুইফটের বাইরে গিয়ে ইরান এমন এক পণ্যের লেনদেনভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সমর্থ হয় যা একটি নতুন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয় এবং একটি নতুন ভারসাম্যে পৌঁছায় যা নিষেধাজ্ঞামুক্ত পরিস্থিতির চেয়েও আরো অগ্রসর হয়ে ওঠে। এ জন্য ইরানের বিরুদ্ধে তেল রফতানি নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে আসেনি এবং তেল উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি করে তা প্রথমে বাকিতে ভারত, চীন, ভেনিজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের কাছে বিক্রি এবং এর বিনিময়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয় দেশটি।
ইরানের ক্ষেত্রে, চেরাটিয়ান এট আলের (২০২৩) একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় নিষেধাজ্ঞার প্রভাব শূন্যে নামানোর জন্য ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোগগুলোর কৌশল পরীক্ষা করা হয়। তারা জরিপে ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০ সালের মধ্যে ইরানের পাঁচটি প্রদেশের ৪৮৬টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ব্যবহার করে। তাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিপণন খরচ, ওভারহেড ব্যয় এবং গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় হ্রাস এবং তথ্য প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মতো কৌশলগুলো নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একটি প্রতিষ্ঠানের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করতে পারে। একটি দৃঢ় ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, অর্থ ও প্রযুক্তির প্রাপ্যতা, সুশিক্ষিত মালিক, রফতানির ওপর মনোযোগ এবং অন্যান্য ব্যবসার সাথে সংযোগের মতো বিষয়গুলোও একটি প্রতিষ্ঠানের নিষেধাজ্ঞার চাপ সহ্য করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। লক্ষণীয় যে, এই কৌশলগুলোর মধ্যে কিছু, যেমন গবেষণা ও উন্নয়ন হ্রাস, স্বল্পমেয়াদে সংস্থাগুলোকে টিকে থাকতে সাহায্য করতে পারে তবে দীর্ঘমেয়াদে সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য তা ক্ষতিকারক হতে পারে। কারণ, এগুলো বিশ্ববাজারে ব্যবসায়িক উৎপাদনশীলতা, দক্ষতা এবং প্রতিযোগিতা হ্রাস করতে পারে। ইরানের নীতিনির্ধারকরা এসব বিষয় জানতেন এবং এ নিয়ে বছরের পর বছর তারা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা প্রযুক্তিবিমুখ থাকেননি। চীন, রাশিয়া ছাড়াও পশ্চিমা উৎসের বাইরে গিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে প্রযুক্তি আমদানি ও গবেষণার ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রেখেছেন।
ইরান এমন একটি দেশ যা আফগান যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন ড্রোন যেমন ভাঙ্গারি হিসেবে কিনে তা তরুণ বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দিয়েছে গবেষণার জন্য। তেমনি এক পর্যায়ে ইরানের আকাশসীমায় উড়তে থাকা মার্কিন ড্রোনকে কমান্ড দিয়ে নিরাপদে নামিয়ে আনতে সমর্থ হলে বিশ্ব অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু ইরান থেমে থাকেনি বলে রাশিয়ার কাছে কামিকাজি ড্রোন রফতানি করতে সমর্থ হয়েছে আবার সুখই-৩৫ বিমান ক্রয় ও তা ইরানেই তৈরি করছে। এ জন্য ইরানকে কম খেসারত দিতে হয়নি। তরুণ বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে পারমাণবিক সংস্থার প্রধানকে হত্যা করা হয়েছে। কোনো সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাকে যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া যাত্রীবাহী বিমানে ড্রোনের আঘাতে হত্যা করা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম। জেনারেল কাশেম সোলেইমানির ভাগ্যেও তাই ঘটেছে। অথচ মধ্যপ্রাচ্যে আইএস জঙ্গি মূলত উৎখাতের সফল নায়ক ছিলেন তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্রনীতি লক্ষণীয়। যে ইরাক বিপ্লব-উত্তর ইরানে আগ্রাসন চালিয়েছে, সময়ের পরিবর্তনে সেই ইরাকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহায়তা, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠনে এগিয়ে গেছে ইরান। নিজের ঘাটতি মিটিয়ে ইরাকে বিদ্যুৎ রফতানি করেছে। লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও গাজায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ইরানের অবস্থান আন্তর্জাতিক বিশ্বে গ্রহণযোগ্য না হলেও অন্য কোনো মুসলিম দেশ কিন্তু এসব দেশের পাশে দাঁড়ায়নি; শুধু ত্রাণ দেয়া ছাড়া। আবার কাতারের ওপর কয়েকটি আরব দেশের অবরোধের পর খাদ্যভর্তি জাহাজ দোহায় পাঠাতে ইরান কার্পণ্য করেনি।
কার্যত নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে ইরানকে একঘরে রাখার কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে ইরানের শাসকরা সম্পদের পাচার না করে, দুর্নীতির ঘেরাটোপে বন্দী না হয়ে পরাশক্তিগুলোর উপনিবেশে পরিণত না হয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পেরেছেন। পুঁজিবাদী আদর্শের বাইরে সম্পদ সৃষ্টির কৌশল ও পুঁজির ব্যাপক সম্প্রসারণের উপায় ইরানের নেতৃত্ব ভালোই জানেন।
ইরান বিশেষ করে যুবশক্তিকে খেলাধুলা, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, গবেষণামূলক কাজে নিয়োগ করেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব র্যাংকিংয়ে উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। হাজার হাজার বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী ইরানে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। বছরে অর্ধ-কোটিরও বেশি পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করে ইরানকে নতুন করে জানছেন। এমন কোনো দিন খুব কমই যায় যে দিন তেহরানে কোনো না কোনো আন্তর্জাতিক মেলা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত না হয়।
বিশেষ করে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে ইরানের সাফল্য অভূতপূর্ব। লক্ষ করার বিষয় হচ্ছে, এসব প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, তা পিনপয়েন্ট লেজার বোম সিস্টেম হোক, প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হোক কিংবা বিধ্বংসী স্যাটেলাইট ড্রোন হোক অথবা পাতাল ক্ষেপণাস্ত্র শহর, এগুলো আমদানি করে ইরান প্রতিরক্ষা শিল্পে অন্য কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল হতে চায়নি। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ইরান অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কোভিড মহামারীর সময় টিকার উদ্ভাবন কিংবা ক্যান্সার নির্ণয়ে ইরান বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশ ছিল।
ব্রিকসের শক্তিশালী সদস্য হিসেবে মার্কিন ডলারের একচ্ছত্র আধিপত্য কাটিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারসাম্যমূলক মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থার জন্য কাজ করছে ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্য হয়ে ব্রিকসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ডলারকে পাশ কাটিয়ে গেলে চরম ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা আর নেই। মাল্টিপোলার বিশ্বব্যবস্থায় শুল্ক আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় চীন, মেক্সিকো, কানাডার সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে পিছু হটছেন ট্রাম্প। চীন, রাশিয়াসহ অনেক দেশই এখন লক্ষ করছে, কিভাবে ইরান নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে গিয়ে বিকল্প রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
এ ধরনের আর্থসামাজিক ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইরানি জনগণের অবদান অসামান্য। কারণ নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানে ডলারের বিপরীতে ইরানি মুদ্রার যে ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতির প্রভাব সইতে হয়েছে সাধারণ ইরানিদের। কিন্তু তারা কখনো পরাশক্তি দেশগুলোর কাছে মাথা নোয়ায়নি। ইরানি জাতিকে পরাশক্তির বিরুদ্ধে একাট্টা করে রাখাও দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বের আরেক শক্তি।
ইমাম খোমেনিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কেন দেশটির ধর্মীয় নেতৃত্ব আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জবাবে ইমাম বলেছিলেন, ‘ইরানের শাহ তার অস্তিত্বের শুরু থেকেই ইসরাইলকে সহযোগিতা করে আসছে এবং যখন ইসরাইল ও মুসলমানদের মধ্যে যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে, তখনো শাহ মুসলিম দেশগুলোর তেলসম্পদ সংগ্রহ করে তা ইসরাইলকে সরবরাহের ব্যবস্থা করত। শাহের বিরোধিতার পেছনে এটি ছিল অন্যতম কারণ।’
আজকের ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি বলেন, ‘উপনিবেশবাদীদের লুণ্ঠনের ইতিহাসের তিনটি পর্যায় হচ্ছেÑ প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন, সাংস্কৃতিক লুণ্ঠন এবং মৌলিক সংস্কৃতি ধ্বংস করা এবং বিভিন্ন দেশ ও জাতির জাতীয় ও ধর্মীয় পরিচয় দখল, লুণ্ঠন করা। অন্যান্য জাতির সাথে ইরানি জাতির পার্থক্য হলো ইরানিরা পরাশক্তিকে আগ্রাসী, মিথ্যাবাদী এবং প্রতারক বলার সাহস রাখে। এ জন্যই গত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের সব দাম্ভিক শক্তি ইরানের বিরুদ্ধে চেষ্টা চালিয়েও কিছু করতে পারেনি; বরং অগ্রগতি অর্জন করেছে। আজকের ইরান আর ৪০ বছর আগের ইরান এক নয়। আমরা সব ক্ষেত্রেই উন্নতি করেছি।’
লেখক : সাংবাদিক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা