১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১, ১৩ রজব ১৪৪৬
`

জুলাই বিপ্লব : চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন আসল জয়

-

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ‘সাগরে নাবিকবিহীন ও দিশাহীন ভেসে চলা যেন একটি তরী’! দুর্বৃত্তের ক্রমাগত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত অথচ প্রবল সম্ভাবনাময়ী বাংলাদেশ কি খুঁজে পাবে এক প্রত্যয়ী, যোগ্য ও নির্ভার কাপ্তান? প্রশ্নটা সর্বদা বিদ্ধ করে চলেছিল কোটি হৃদয়ে। তরুণ-যুবারা হন্যে হয়ে তালাশ করছিল দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের পথ। এর ফল ৩৬ জুলাই। ২০২৪-এ অদম্য ছাত্রসমাজের কাপ্তানিতে দিশা খুঁজে পেল বাংলাদেশ।

বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে খুন-গুম ও অবর্ণনীয় রাজনৈতিক হয়রানির পর ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভূতপূর্ব বিপ্লবের মাধ্যমে ইতিহাসের জঘন্যতম লুটেরা-স্বৈরাচার ও জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে থাকা জালেম শেখ হাসিনাকে হটিয়ে বাংলাদেশ এখন নতুন এক অধ্যায়ের মুখোমুখি। বৈষম্যতে ভরা অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলে আসা অরাজকময় পরিস্থিতি থেকে আপাত উত্তরণের পর নতুন বাংলাদেশ নিয়ে গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পাহাড়সম। সেই সাথে বহির্বিশ্বও আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশ কোন পথে যায়।

মূলত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পরিকল্পিত বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরির পর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশী-বিদেশী প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যোগসাজশে একটি দলকে ক্ষমতায় আরোহণের সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে দেশে সঙ্কটের শুরু। সেই সাথে স্বৈরাচারের উত্থান। বলা হয় নতুন সরকারের ছত্রছায়ায় ও বিদেশী কূটচালে বিডিআর বিদ্রোহের নামে ২০০৯ সালে ৫৭ জন চৌকস সেনাকর্মকর্তা হত্যা ও জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফাঁসি দেয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারের গদি পাকাপোক্ত করা, সেই সাথে প্রতিবেশী দেশের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করা হয় ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে।

বিরোধী দলের আন্দোলন দমন ও ক্ষমতার মসনদ মজবুত করতে সরকার গুম-খুন-জেল-নির্যাতনসহ প্রশাসন দলীয়করণ করে। শত শত সরকারি নিয়োগে কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে সরকারদলীয় লোকজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। সব খাতে দুর্নীতি দেশকে চরমভাবে গ্রাস করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামে। এ আন্দোলন দেশব্যাপী তুমুল সাড়া ফেলে। সরকারের ব্যাপক নিপীড়ন সত্ত্বেও ছাত্ররা আন্দোলন চালু রাখে। একপর্যায়ে সরকার বাধ্য হয়ে চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে।

একই বছরের জুলাই মাসে ঢাকার সড়কে দু’টি যাত্রীবাহী বাসের প্রতিযোগিতায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ও এতে দু’জন শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভে নামে স্কুল শিক্ষার্থীরা। সেই বিক্ষোভ একপর্যায়ে পরিণত হয় দেশব্যাপী সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এক অভূতপূর্ব জাতীয় কর্মযজ্ঞে। কোমলমতি স্কুলশিক্ষার্থীদের নিরীহ এ আন্দোলন দমাতেও সরকার পুলিশ, ছাত্রলীগ ও পরিবহন শ্রমিকদের ব্যবহার করে সশস্ত্র তাণ্ডব চালায়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ছাত্রছাত্রীদের ওপর সরকারের দমনপীড়নমূলক ব্যবস্থা দেশে ও বহির্বিশ্বে তীব্রভাবে নিন্দিত হয়। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ৬ আগস্ট তৎকালীন মন্ত্রিসভা একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করে। ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ২০১৮- এই ১১ দিনের আন্দোলন প্রথমবারের মতো ছাত্র-তরুণদের মনে পরিবর্তনের বীজ বপন করে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে সরকার। সরকারদলীয় লোকজন প্রশাসনের সহায়তায় নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে ব্যালট বক্স ভর্তি করে। এরপর আসে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় বিরোধী দল বর্জনের ডাক দিলে, ২০২৪ সালে একতরফা নির্বাচন আয়োজন করে সরকার। প্রার্থী সঙ্কটে ডামি প্রার্থীদের দাঁড় করিয়ে কোনো রকমে নির্বাচনী বৈতরণী পার করে। এর মধ্যে পরিবারতন্ত্র, অপশাসন, দুর্নীতি, দলবাজি ও দলীয় নিয়োগ, মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, মানুষের কণ্ঠরোধ, ব্যাংক দখল ও অর্থপাচার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সার্বিক মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা, গুম-খুন-নির্যাতন-গণগ্রেফতারসহ নানাবিধ বিশৃঙ্খলায় নৈরাজ্য সর্বকালের বা রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

২০২৪ সালের ৫ জুন আওয়ামী রেজিমের পরীক্ষা শুরু হয়। এ দিন, একটি আপিলের রায়ে হাইকোর্ট বিভাগ ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা কোটা সংস্কার সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন। আচানক ও অনাকাক্সিক্ষত এ সংবাদে শিক্ষার্থীরা নড়েচড়ে বসেন। শিক্ষার্থীদের বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না যে, সরকারের সবুজ সঙ্কেত ছাড়া এই সিদ্ধান্ত হয়নি। তৎক্ষণাৎ কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ আন্দোলন ধাপে ধাপে জুলাইজুড়ে চলতে থাকে। দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ আন্দোলন সাড়া জাগায়। আন্দোলন দমনে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে ছাত্রলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে হামলা করে। শিক্ষার্থীদের হল ও ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। সেই সাথে সরকারি নেতা-নেত্রীদের হুমকি-ধমকি-তাচ্ছিল্য চলতে থাকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে। এ ঘটনার পর সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে বিক্ষোভের ঝড় বইতে থাকে।

১৫ জুলাই দেশব্যাপী হামলা-গ্রেফতারের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরের দিন ১৬ জুলাই সারা দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ডাক দেয়। যথারীতি পূর্ণশক্তি নিয়ে পুলিশ ও দলীয় কর্মীরা হামলা চালায় নিরস্ত্র ছাত্রছাত্রীদের ওপর। প্রকাশ্যে পুলিশের গুলিতে এদিন রংপুরে শহীদ হন আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে ফয়সাল শান্ত ও ওয়াসিমসহ সারা দেশে ছয়জন শহীদ হন।
আবু সাঈদকে পুলিশ সরাসরি গুলি করে হত্যার ভিডিও ক্লিপ মুহূর্তে নেটদুনিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। সরকার যত বলপ্রয়োগের চেষ্টা করে, ছাত্র আন্দোলন তত বেগবান হয়। একপর্যায়ে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ও হাসপাতালগুলোতে আহত আন্দোলনকারীদের চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়। কারফিউ জারি, বিজিবি, র‌্যাব, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরাসরি গুলি করা, হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার, গণগ্রেফতার কোনো চেষ্টা বাদ রাখেনি সরকার আন্দোলন দমাতে।
যেকোনো আন্দোলনের সফলতা নির্ভর করে রাজধানীকেন্দ্রিক তৎপরতায়। ১৮ জুলাই ২০২৪ পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচির দিন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবিশ্বাস্য ও অপ্রত্যাশিতভাবে আন্দোলনের ট্রাম্পকার্ড হিসেবে আবির্ভূত হন। নিজ নিজ ক্যাম্পাস ছেড়ে তারা ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসেন রাজপথে। বুক চিতিয়ে দাঁড়ান স্বৈরাচারের সব সশস্ত্র শক্তির মুখোমুখি। সাথে যোগ দেয় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। সারা দেশ রক্তাক্ত হয়েছে কিন্তু আন্দোলন থামানো যায়নি। দেয়ালজুড়ে গ্রাফিতি আঁকেন শিক্ষার্থীরা। নির্যাতিত ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ান সর্বস্তরের জনতা, নেমে আসেন রাজপথে। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন জানান।

এর মধ্যে ছাত্রনেতাদের নিয়ে নোংরা রাজনীতিতে মেতে ওঠে সরকার। সমঝোতার আহ্বান জানায়। ছাত্রসমাজ সরকারের ডাক প্রত্যাখ্যান করে ৩ আগস্ট ঘোষণা করা হয় এক দফা এক দাবি। ৪ আগস্ট থেকে সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয়া হয়। বিপরীতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের ভাড়াটে বাহিনী আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশী অস্ত্র নিয়ে সারা দেশে ঝাঁপিয়ে পড়ে আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর। প্রতিবাদে ৬ আগস্ট ঢাকা লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই দিন ৪ আগস্ট বিকেলে লংমার্চ কর্মসূচি পরিবর্তন করা হয় ও জানানো হয় ৬ তারিখ নয়, লংমার্চ হবে ৫ তারিখ। বাকিটা ইতিহাস।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা নেমে আসেন রাজপথে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। প্রায় দুই হাজার শহীদ ও ৩০ হাজার আহত নওজোয়ানের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতা ২.০, সেই সাথে নতুন কাপ্তানদের কাঁধে দেশ মেরামত ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্র্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন।
৫ আগস্টের বিপ্লবোত্তর এ সরকার কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। সব অবিচার, অনাচারের প্রতিবাদে হাজারো তরুণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে মুক্ত এ বাংলাদেশের নবগঠিত সরকার হলো দেশ পুনর্গঠনের সরকার, ন্যায়বিচার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দেশদ্রোহী ও খুনি-লুটেরাদের বিচার করার সরকার। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক সরকারগুলোর সদিচ্ছা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখনো প্রত্যাশামাফিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো সামাল দিয়ে দেশ সংস্কারে হাত দিয়েছেন। তিনি এক দুরূহ অভিযানে নেমেছেন। একটি সার্বভৌম দেশের যতগুলো ভিত্তিমূল থাকে, এ দেশে তার সবগুলোতে সমস্যা বিরাজ করছে। এই সমস্যাগুলো একদিনে তৈরি হয়নি। গত ৫০ বছরে দেশের মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, অর্থনীতি বড় হয়েছে, কিন্তু সুশাসন ও প্রকৃত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত থেকে গেছে দেশের মানুষ। জনসংখ্যা অনুপাতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার চরম অসামঞ্জস্যতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি-লুটপাট-সন্ত্রাস-অবিচার, প্রশাসন-নাগরিকের মধ্যে প্রভু-ভৃত্য সম্পর্ক ইত্যাদি মোটাদাগে এগুলো আমরা দেখে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। অথচ আমাদের চেয়ে ছোট বা কাছাকাছি অর্থনীতির দেশ হয়েও আমাদের অনেক পেছনে ফেলে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমান প্রজন্মকে স্মরণ রাখতে হবে বাংলার সমৃদ্ধ ইতিহাসের কথা। যুগে যুগে এ দেশ ভ্রমণ করে গেছে বিভিন্ন দেশীয় পরিব্রাজক। তারা লিপিবদ্ধ করে গেছেন বাংলার সেই স্বর্ণযুগের কথা। বাংলার জমিন ছিল সেরা শস্যভাণ্ডার, নদী-নালা-সাগর ছিল অফুরন্ত মৎস্যভাণ্ডার, চীন ও ইউরোপের সাথে ছিল আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বাংলার বস্ত্র শিল্প, মৃৎশিল্প, হস্তশিল্প ছিল দুনিয়াজুড়ে নামকরা। মানুষজন ছিল উদার, বুদ্ধিমান, অতিথিপরায়ণ ও কর্মঠ। দারিদ্র্য কী জিনিস তা তারা জানতেন না। বিদেশীরা বলে গেছেন, বাংলার শহর-বন্দরগুলোর কাছে ইউরোপ ছিল অজোপাড়াগাঁর মতো। সেই সমৃদ্ধ বাংলাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
সংস্কার কমিশনের সদস্যরা বলছেন, দেশের প্রতিটি খাত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ও বহুপক্ষীয় দুষ্টচক্রের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগীরা এখনো বিভিন্ন দফতরে রয়ে গেছে, এমনকি অনেক সহযোগী সক্রিয়। তাদের চিহ্নিত করে সরকারি কার্যালয়গুলো অপশক্তি মুক্ত করা সময়সাপেক্ষ হলেও অসম্ভব নয় বলছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা। প্রত্যেক নাগরিক ও বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত সরকার ও সরকারের কর্মসূচির প্রতি সহনশীল হওয়া। রক্তস্নাত বিপ্লবের সফলতা নির্ভর করছে অন্তর্র্র্বর্তী সরকারের সাফল্যের ওপর। সরকারকেও সার্বক্ষণিক নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলতে হবে সংগ্রামী ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে।

অংশীজনের মধ্যে অনেকে দ্রুত নির্বাচন চান। আমরা মনে করি, পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা আলোচনা করলে ভালো হয়। এটা ঠিক যে, বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের পাশাপাশি এ সরকারকে শক্তিশালী কাঠামোয় দাঁড় করানো খুব দুরূহ একটি কাজ। দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা জালেমতন্ত্রের দোসর ও ক্ষমতালিপ্সুরা এখনো সুযোগের অপেক্ষায় আছে প্রতিনিয়ত। কাজেই মজবুত, দক্ষ, চৌকস, ফ্যাসিবাদের গুপ্তচরমুক্ত ও দেশপ্রেমিক সরকার ও প্রশাসন সময়ের দাবি। জাগ্রত ছাত্র-জনতা এই সরকার ও দেশের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

লেখক : মেরিন সার্ভেয়ার ও কনসালট্যান্ট
Email : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement