কামারুজ্জামানের বিচারে ‘আলবদর-সাক্ষী’
- এহসান এ সিদ্দিক
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৫
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিচারের একজন সাক্ষী মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর ছিলেন বলে দাবি করেন। এটিই একমাত্র মামলা যেখানে প্রসিকিউশনের হাজির করা কোনো সাক্ষী স্বেচ্ছায় নিজেকে আলবদরের সক্রিয় সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রসিকিউশন তাকে অভ্যন্তরীণ সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করে বলে যে, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত আধা সামরিক বাহিনী আলবদরের একজন নেতা ছিলেন। প্রসিকিউশনের বক্তব্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরুতে কামারুজ্জামানের বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। তাই তিনি যে আলবদরের নেতা ছিলেন তা প্রমাণ করতে তাদের শক্তিশালী প্রমাণের প্রয়োজন ছিল। এ কারণে তারা মনোয়ার হোসেন খান ওরফে মোহন মুন্সীকে প্রস্তুত করে যিনি প্রসিকিউশনের ২ নং সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। এ সাক্ষী বলেন যে, কামারুজ্জামান একজন খ্যাতনামা বড় নেতা ছিলেন। কিন্তু মোহন মুন্সীর প্রমাণ ছিল বৈপরীত্যে ভরা এবং এটি ছিল অতি নাটকীয় এবং জানা ঘটনার বিপরীত।
মোহন মুন্সীর সাক্ষ্যপ্রমাণে বোঝা যায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা কতটা মিথ্যা ছিল।
মোহন মুন্সীর আলবদর সদস্য হওয়ার বিবরণে এমন বেশ কিছু উপাদান রয়েছে, যা একবারেই অযৌক্তিক। তিনি তার জবানবন্দীতে দাবি করেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ থেকে গ্রামগুলোকে রক্ষা করার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বান শুনে তিনি প্রাথমিকভাবে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তার প্রশিক্ষণ ৩ মাস ধরে চলে এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে তা সম্পন্ন হয়। তবে, যুদ্ধ শুরু হলে মোহন মুন্সী হঠাৎ পক্ষ পরিবর্তন করেন এবং আলবদর সদস্য হন। তিনি দাবি করেন যে, আলবদর ক্যাম্পের সুজা নামক এক ব্যক্তি তার সাথে যোগাযোগ করেন। সুজা তাকে এ বলে হুমকি দেয় যে, সে যদি আলবদরে যোগ না দেয় এবং এর সদস্যদের প্রশিক্ষণ না দেয় তাহলে অনির্দিষ্ট ‘সমস্যার’ মুখে পড়তে হবে। তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেন, সুজা তাকে বলে, ‘তুই তো ট্রেনিং নিছস। এ ক্যা¤েপ আইসা পোলাপানদের ট্রেনিং দে।’
মোহন মুন্সী আলবদরে যোগ দিতে বাধ্য করার একজন নিষ্ক্রিয় শিকার হিসেবে বর্ণনা করেন নিজেকে কিন্তু এ থেকে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন এমন কোনো প্রমাণ দেননি। মোহন মুন্সী দাবি করেন, তিনি অসুস্থতার ছলনা করে এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ার ভান করে সামরিক প্রশিক্ষণ এড়িয়ে যান, যা আসলে শুধু গ্লুকোজ ছিল। তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রশিক্ষণের সময় তিনি প্রচণ্ড ব্যথার অভিনয় করেন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন সদস্যকে বলেন যে, তিনি গ্যাস্ট্রিক আলসারে ভুগছেন, যার জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রয়োজন। তিনি জানান হাসপাতালের একজন চিকিৎসক তার গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ইনফেকশন নির্ণয় করেন শুধুই পেশাগত কর্মদক্ষতার ওপর ভিত্তি করে। তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘ডাক্তার কইলো গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়া গেছে। নাড়িতে ঘাঁ হয়া গেছে।’
মোহন মুন্সী বিস্তৃত নাটক করে হাসপাতালের একজন ডাক্তারকে প্রতারিত করতে পেরেছিলেন এ দাবি অতিশয় নাটকীয় এবং অসম্ভব একটি বিষয়। তাছাড়া আলবদর বাহিনী মূলত শিক্ষিত কলেজছাত্রদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। আর মোহন মুন্সী একটি দর্জির দোকানে কাজ করতেন এবং ট্রাইব্যুনালে স্বীকার করেন, তিনি নিরক্ষর, পড়তে পারেন না। তাই তার আলবদরের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা সামান্যই। তিনি আলবদর সদস্য ছিলেন এবং কামারুজ্জামানকে চিনতেন এ বিষয়টির ওপর জোর দেয়ার জন্যই আসলে মোহন মুন্সী ট্রাইব্যুনালের সামনে জোর দিয়ে বলেছিলেন : ‘আমি এলাকায় একজন চিহ্নিত আলবদর ছিলাম।’ পরে তিনি আবার স্পষ্ট করেছেন- ‘আমি আলবদর ছিলাম, রাজাকার ছিলাম না।’ তিনি তার আলবদরের প্রমাণপত্রের ওপর জোর দিয়েছিলেন যাতে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তার সাক্ষ্যের মূল্য বাড়ে। এ ছাড়াও বক্তব্যের বিভিন্ন অংশে তিনি কামারুজ্জামানকে তার ‘বস’ বা তার ‘স্যার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু কামারুজ্জামানের সাথে তার যেকোনো রকম সংযোগ থাকার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। জবানবন্দীতে তিনি কামারুজ্জামানকে একজন ছাত্র নেতা হিসেবে জানতেন এবং তার কর্মকাণ্ডের সাথে পরিচিত হওয়ার বর্ণনা দেন। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ বা জেরায় তিনি দাবি করেন যে, তিনি কামারুজ্জামানকে শুধু আলবদর শিবির থেকেই চিনতেন, যুদ্ধের আগে নয়। এ বক্তব্য তার আগের বক্তব্যের বিপরীত। আর যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, ১৭ বছর বয়সী কামারুজ্জামান কিভাবে আলবদরের নেতা হয়েছিলেন, তখন তিনি এর উত্তর দিতে পারেননি এবং বলেন যে, ‘তাকে কোথায় কিভাবে বদর নেতা বানিয়েছে তা আমি জানি না। তিনি আমার স্যার ছিলেন।’
একজন সাক্ষী হিসেবে মোহন মুন্সীর নির্ভরযোগ্যতাও অনেক বেশি সন্দেহজনক হয়ে ওঠে যদি জনৈক সুশীলকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা নিয়ে তার গল্পটি কেউ বিবেচনায় আনেন। মুন্সীর বক্তব্য অনুসারে, সুশীলকে হিন্দু বস্তি থেকে ধরে এনে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয় এবং তারপর তাকে ‘মহিরুদ্দিন খান’ নাম দেয়া হয়। সুশীলকে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরপরই নামাজ পড়ার জন্য বলা হয় বলে উল্লেখ করেন মুন্সী। কিন্তু জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত হওয়া সত্ত্বেও, সুশীলের প্রতিরোধ বা পালানোর কোনো চেষ্টার লক্ষণ দেখা যায় না। যার ফলে গল্পটিকে অতি সরলীকৃত এবং অসম্ভাব্য বলে মনে হয়। এ ছাড়া ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সুশীলের প্রতি আচরণের বিষয়টিও হাস্যকর। মোহন মুন্সী তার জবানবন্দীতে উল্লেখ করেন, তার ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে সুশীলকে একটি পুকুরে সাঁতার কাটার অদ্ভুত এক শাস্তি দেয়া হয়। তবে সাঁতার কাটতে না পারায় কামারুজ্জামান তাকে গুলি করে হত্যা করে। কামারুজ্জামান যাওয়ার পর কেন সুশীলকে মুসলমানে রূপান্তরিত করা হলো, তাকে একটি মুসলিম নাম দেয়া হলো এবং পরে তাকে নামাজ পড়তে বাধ্য করার পর কেন তাকে নির্যাতন এবং পরে হত্যা করা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। সুশীলকে হত্যার কারণও স্পষ্ট নয়। অধিকন্তু অন্য কোনো সাক্ষী বা প্রদর্শিত নথিতে সুশীলকে হত্যার উল্লেখ নেই। মোহন মুন্সী সহানুভূতি ও ক্ষোভ জাগানোর জন্য ঘটনাগুলোকে অতিরিক্ত নাটকীয় ও বানোয়াটভাবে বর্ণনা করেছিলেন।
মোহন মুন্সীর সাক্ষ্য-প্রমাণে অনেক অসঙ্গতিও স্পষ্ট। তিনি কামারুজ্জামানকে শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে শান্তি কমিটিগুলো সর্বদা প্রবীণ এবং সমাজের বয়স্ক সদস্যদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল। শান্তি কমিটির সদস্য কখনো ছাত্র ছিল না, কিন্তু মোহন মুন্সী তার জবানবন্দীতে দাবি করেন যে, কামারুজ্জামান তার জেলায় শান্তি কমিটি গঠন করেছেন। তবে জেরায় তিনি কখন শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল তা নিয়ে আবার অজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এর কাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন বলে জানান।
আলবদর হিসেবে কামারুজ্জামানের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য মোহন মুন্সী আরো বলেন যে, শুধুমাত্র কামারুজ্জামানই শেরপুরে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করতে সক্ষম হন। তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেছিলেন- ‘ক্যাম্প করার ক্ষমতা ছিল একমাত্র আমার স্যার কামারুজ্জামানের, আর কারো ছিল না, আর্মিরও এ ক্ষমতা ছিল না।’ এটি একটি অযৌক্তিক দাবি। কামারুজ্জামান কতটা শক্তিশালী তা দেখানোর জন্য মোহন মুন্সী প্রায়ই হাস্যকর ও আপত্তিকর বক্তব্য দেন।
আহত পাকিস্তানি সেনা মেজর রিয়াজকে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মোহন মুন্সীর গল্পও তার প্রমাণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিশেষ করে শেরপুরের মতো দুর্গম বা সঙ্ঘাতপূর্ণ এলাকায় উল্লেখযোগ্য লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। তখন হেলিকপ্টারের সংস্থান সৈন্য চলাচল বা কৌশলগত অবস্থানগুলোতে সরবরাহ করার মতো ক্ষেত্রে সীমিত ছিল এবং উচ্চমূল্যের অপারেশনগুলোর জন্য এর সংস্থানে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল। অস্ত্র ও পায়ে বুলেটের আঘাতের জন্য একক আহত জুনিয়র অফিসারকে হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেয়া অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। মোহন মুন্সীর বর্ণনা থেকে জানা যায়, আহত মেজরকে আহত হওয়ার পরপরই একটি ফোন কলে সরিয়ে দেয়া হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে, লজিস্টিক সীমাবদ্ধতার কারণে দ্রুত হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেয়া অস্বাভাবিক ছিল। এ জন্য উচ্চতর কমান্ডের সাথে নির্ভরযোগ্য ও দ্রুত যোগাযোগ এবং ব্যবহারিক দূরত্বের মধ্যে একটি হেলিকপ্টারের প্রাপ্যতা প্রয়োজন। এসব বিবেচনায় আহত মেজরকে হেলিকপ্টারে করে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার গল্পটি ব্যবহারিক সম্ভাব্যতা, অপারেশনাল প্রেক্ষাপট এবং সহায়ক প্রমাণের অভাবে বানোয়াট বলে মনে হয়।
সবশেষে মোহন মুন্সীর সোহাগপুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা স্পষ্টতই বানোয়াট। এর আগের লেখায় সোহাগপুরের পুরুষদের পাকিস্তানি আর্মির হাতে নিহত হওয়া এবং নারীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। তবে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী অভিযোগ করেননি যে, নিহতদের মৃতদেহ ট্রাকে বোঝাই করা হয়েছিল এবং তার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বা তাদের সহযোগীরা সোহাগপুর গ্রাম থেকে নিয়ে গেছে। মোহন মুন্সী এ ঘটনাকে অতি নাটকীয় করে দাবি করে যে, লাশগুলো টাউনপার্কে আনা হয়েছিল মানুষকে দেখানোর জন্য। তিনি ট্রাইব্যুনালের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ‘পরদিন সকাল বেলা দেখি ট্রাকে করে অনেক লাশ নিয়ে আসা হয়েছে এবং সেগুলো পরে পৌরসভার পার্কে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মহিরুদ্দিন কাজী মাইক দিয়ে জানায়, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ফেলেছি; এর কিছু লাশ নিয়ে এসেছি।’ এ বর্ণনা নথিভুক্ত ইতিহাস ও সোহাগপুরের নির্যাতিতদের বক্তব্য ও প্রমাণের পরিপন্থী।
মোহন মুন্সী মিথ্যা সাক্ষ্য দেন তার ছেলে মো: নুরুন্নবী খান (নাসিম)-কে সরকারি চাকরি দেয়ার বিনিময়ে। শেরপুর জেলার রাজস্ব অফিসে গত ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মুন্সীর ছেলেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর চাকরি দেয়া হয়। পদটিতে আবেদন করার জন্য প্রার্থীদের অষ্টম শ্রেণী পাস করার শর্ত থাকলেও মুন্সী স্বীকার করেছেন যে, তার ছেলের এ যোগ্যতা নেই। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেয়ার ৬ মাস আগে তার ছেলেকে চাকরি দেয়া হয়। কৌতূহলের বিষয় হলো, মোহন মুন্সী ট্রাইব্যুনালে আরো বলেন, কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ায় তার ভাইবোনেরা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মোহন মুন্সীকে প্রধান সাক্ষী হিসেবে প্রশিক্ষণ ও হাজির করার প্রসিকিউশনের সিদ্ধান্ত তাদের মামলাকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে শেষ পর্যন্ত দুর্বল করে দেয়। মুন্সীর সাক্ষ্যে পরস্পর দ্বন্দ্ব, অসম্ভব দাবি এবং বানোয়াট বিবরণ থাকায় ধাঁ-ধার সৃষ্টি হয়, যা পুরো বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে। ঘটনার নাটকীয় বিবরণ, আলবদরের সাথে তার যোগসাজশের হাস্যকর ব্যাখ্যা এবং তার ছেলের জন্য একটি সরকারি চাকরি নিশ্চিত করার প্রশ্নবিদ্ধ মোটিভেশন প্রসিকিউশনের প্রমাণের দুর্বলতা তুলে ধরে। কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মোহন মুন্সীর সাক্ষ্য অভিযোগ সমর্থন না করে মামলার অসঙ্গতি ও বানোয়াট হওয়ার বিষয়টিই প্রকাশ করে দিয়েছে।
লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নিবন্ধিত কৌঁসুলি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা