বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র
- জিয়া আহমদ, এনডিসি
- ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:১৬
গত ৩০ বছরে, দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যার দিক থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আশির দশকে এ দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ছয়টি, যার মধ্যে চারটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও দু’টি কারিগরি। নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু হয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা। উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছিল না। ফলে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়াশোনার জন্য চলে যাচ্ছিল। এই বিদেশ যাত্রাটা তাদের অভিভাবকদের জন্য একটি বড় খরচের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তেমনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা তহবিলের উপরও চাপ তৈরি করছিল। দেশের উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসার একটি সম্ভাবনা দেখতে পেলেন এবং সরকারও বেসরকারি খাতকে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকারী হিসেবে চাইল। সে কারণেই দেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের পর ব্যাঙের ছাতার মতো একটার পর আরেকটা, এভাবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ সময়ে দেশে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন এলাকার এমপিরাও তাদের নিজ নিজ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে থাকেন এবং সরকারকে চাপ দিয়ে সরকারি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য তদবির শুরু করেন। এ ছাড়া, একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে এলাকায় অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় সরকারি অর্থ আত্মসাতের সুযোগও। ফলে দেশে সরকারি খাতেও একটার পর একটা করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে থাকে।
বর্তমানে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫টি আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখা ১১৩টি। এ ছাড়া দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিচালনাধীন আরো তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী বর্তমানে পড়াশোনা করছে। এ পর্যন্ত সবই সুন্দর ও আশাব্যঞ্জক! কিন্তু ‘ক্যাচটা’ কোথায়?
গত ৩০ বছরে বাংলাদেশে এমন কোনো শিক্ষাবিপ্লব সংঘটিত হয়নি যে, আমরা দেশে অতিরিক্ত ১৬৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক সরবরাহ করতে পারব। কিংবা দেশের এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসেননি যে, তারা এই সংখ্যক শিক্ষকের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে এসেছে বিশেষ দু-একটি বাণিজ্যিক কোর্সের উপর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ভরশীলতা। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেহেতু মূলত ব্যবসাকেন্দ্রিক, সেহেতু তারা এমন সব বিষয়ে ডিগ্রি অফার করতে শুরু করে যার বাজারে চাহিদা আছে, যেমন- কম্পিউটার সায়েন্স, বিবিএ ইত্যাদি। এর ফলে এ বিষয়গুলোর শিক্ষকের চাহিদাও আকাশচুম্বী হয়ে উঠে, কিন্তু সরবরাহ তো সীমাবদ্ধ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। কম যোগ্যতাসম্পন্ন, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদৌ মূল বিষয়ের সাথে সম্পর্কহীন শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিষয় পড়ানো হয়েছে বা হচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে স্বল্প মেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রী। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর কম্বিনেশন আর হয় না।
বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির হার খুবই ভালো। কিন্তু সমস্যা হলো- এই শিশুদের বেশির ভাগই ঝরে যায় পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার আগেই। এই বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষাদানের মান এত নিচু যে, ষষ্ঠ শ্রেণী পাস করা শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশই বাংলা দেখেও পড়তে পারে না। আমাদের শিক্ষা বাজেট জিডিপির মাত্র ১.৬৯ শতাংশ (ইউনেস্কোর সুপারিশ ন্যূনতম ৬.০ শতাংশ), তারপরও এই স্বল্প অর্থেরও যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকদের লেখাপড়ার মান নিচু, যার সাথে যোগ হয়েছে তাদের পাঠদানের প্রতি অনীহা।
দীর্ঘদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের জন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছিল এসএসসি দ্বিতীয় বিভাগ (পুরুষ প্রার্থীদের জন্য দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি বা শুধু বিএ ডিগ্রি), যা সঙ্কটের একটি বড় কারণ। আরো বড় কারণ হলো- এই শিক্ষকদের একটি বড় অংশই কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে ‘জাতীয়করণকৃত’ হয়ে শিক্ষক হওয়ায় তাদের পড়াশোনার মান অত্যন্ত নিচু। এর ফলে বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীর সময়ের অপচয় হচ্ছে। এই শিক্ষকদের পেছনে ব্যয় সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া অন্য কিছু নয়। পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে এই অযোগ্য শিক্ষকরা বেতন-ভাতা বাড়ানোর নামে সর্বক্ষণ রাজনীতি ও আন্দোলনের জন্য মুখিয়ে থাকার কারণে। যে দেশে একটি পিয়ন বা রেলওয়ের লাইনম্যান পদে ন্যূনতম স্নাতক বা স্নাতকোত্তর প্রার্থীরা প্রতিযোগিতা করেন, সেখানে এসএসসি বা এইচএসসি পাস শিক্ষকরা বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে বেতন-ভাতার জন্য শিক্ষাদান বন্ধ রেখে যখন তখন ঢাকা শহরে এসে আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরকে অচল করে শহরবাসীকে উত্ত্যক্ত করছেন। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থাটাও অক্ষত নেই। সেখানেও অসংখ্য স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (এবং জাতীয়করণ করা হয়েছে) যেখানে মানসম্মত শিক্ষকের অভাবে ‘আন্ডারকুকড’ শিক্ষা নিয়ে ছেলেমেয়েরা বের হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাদানে দক্ষতার সাথে বেতনকে সমানুপাতিক করা যেতে পারে। তবে সবার আগে প্রয়োজন একটি নৈর্ব্যক্তিক ও কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থার প্রবর্তন।
সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় যেটি, সেটি হলো- গত ১৫ বছরে আমাদের দেশের কারিকুলাম বা পাঠ্যক্রমকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে, আমাদের দেশে এখন পিয়ন বা কেরানি ছাড়া অন্যান্য পদে নিয়োগযোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি হওয়ার কথা নয়। এমন সব বিতর্কিত বিষয় পড়ানো হয় যেখানে ছাত্ররা দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে না। তাদের শিখানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মানেই শেখ মুজিব। নব প্রবর্তিত পাঠ্যক্রম অনুযায়ী ছাত্ররা ‘ব্যাঙ’-এর মতো লাফালাফি, ডিমভাজা, আলু ভর্তা বানানো ছাড়া খুব বেশি কিছু শিখছে, এমন মনে হয় না। ইংরেজি ভাষায় ‘কমিউনিকেশনের’ দক্ষতা এখন অতীতকালের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আর প্রতিটি শ্রেণীতে প্রয়োজনীয় বিষয় না পড়িয়ে শেখ মুজিবের ভাষণ ও জীবনীকেন্দ্রিক অর্ধসত্য ও কল্পকাহিনী পড়িয়ে অর্ধশিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট তৈরি করার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ব্যবস্থাপনাকে ভারতমুখী করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আমাদের তরুণদের ভবিষ্যৎ লুণ্ঠিত হয়ে গেছে। যোগ্যতাসম্পন্ন ম্যানেজার ও অ্যাকাউন্টেন্ট না থাকার কারণে গার্মেন্ট শিল্পসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনার কাজগুলো করছে ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা। শিক্ষার এই ধস সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।
ঢাকা শহরে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ঘনত্ব এখন পৃথিবীর কোনো শহরের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয় ঘনত্বের কাছাকাছি। দেশের মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ শতাংশ এই শহরে রয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই হার ২১ শতাংশ। ঢাকার বাইরে এমনকি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলেও একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে, যেখানে পর্যাপ্ত প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলই নেই। হাওর অঞ্চলের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে নৌকায় স্কুল চালু করা হয়েছে, যা কনসেপ্ট বা ধারণা হিসেবে পুরস্কৃতও হয়েছে। কিন্তু একটি বা দু’টি নৌকা স্কুল ওই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা দেয়ার জন্য যে নিতান্তই অপ্রতুল, তা বলাই বাহুল্য। এ প্রেক্ষাপটে সুনামগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী আসবে কোথা থেকে? যারা আসবে তারা অর্ধশিক্ষিত ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পাওয়া ছাত্র। তা ছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা অপ্রতুল থাকায় এখানে উঁচুমানের শিক্ষকরাও কাজ করতে আগ্রহী হবেন না। কিছু দিন আগে প্রকাশিত এক সংবাদে দেখলাম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সপ্তাহে এক দিন-দু’দিনের বেশি ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন না।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এমন সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে যা কোনোভাবেই যুক্তিনির্ভর নয়। রংপুর বিভাগে কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাজী দানেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থাকার পরও ঠাকুরগাঁওয়ে কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, তা বোঝা মুশকিল। সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয়, এ দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো- এই দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলোই ব্যবসার উদ্দেশ্যেই স্থাপিত হয়েছে; তবে এ ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ, ভবন নির্মাণ ইত্যাদি খাতে অবৈধ অর্থ উপার্জনটাই মূল লক্ষ্য ছিল। যদি দীপুমনির মতো অসৎ, লোভী ও তস্কর একজন শিক্ষামন্ত্রী দেশে থাকে তাহলে ভিসি, প্রো-ভিসি, শিক্ষক প্রভৃতি পদে নিয়োগের সময় পৌনঃপুনিকভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগ তো রয়েই যায়। একই কথা প্রযোজ্য চাঁদপুর ও সাতক্ষীরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাই হয়েছিল দীপুমনির পরিবারের সদস্যদের অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য, যা নিয়ে সে সময় সংবাদ প্রকাশিতই হয়; অবৈধ সংসদেও আলোচনা হয়েছিল।
সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসরিয়াল ফেলো ডক্টর এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ মূলত তিনটি : ১. শিক্ষার মান; ২. শিক্ষার মান নিশ্চিত করার মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগযোগ্য গ্র্যাজুয়েট প্রস্তুত করা; ৩. গবেষণা। তার মতে, দেশে শিক্ষাব্যবস্থাপনা একেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে এই তিনটি ক্ষেত্রেই আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি। তিনি মনে করেন, বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেকটি বেকার তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশে এখন এমন সব বিষয়ে ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে যার কোনো চাকরির বাজার নেই। এই গ্র্যাজুয়েটরা কোথায় তাদের অধীত বিষয়ের বাস্তব প্রয়োগ করবে? এমনিতেই আমরা মধ্যম মেধার জাতি; তারপরও সেই মেধার কী নিদারুণ অপচয়।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরই আমাদের শিক্ষা উপদেষ্টা দেশে আগে প্রচলিত পরীক্ষিত ও সফল পাঠ-পরিক্রমায় ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেটিই যথেষ্ট নয়। অন্যান্য আরো ক্ষেত্রের মতো শিক্ষা ক্ষেত্রেও সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশনকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে তা শুধরানোর পথনির্দেশনা দিতে হবে। এই দেশে সরকারি ও বেসরকারি খাতে যে বিপুলসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে, তার বড় একটি অংশকে ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে পরিবর্তন করতে হবে। দেশে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের ৭০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে বেকার সমস্যাকে আরো প্রকট করে তুলছে। মনে রাখতে হবে, সবার জন্য উচ্চশিক্ষা না। উচ্চশিক্ষা হবে মেধাবী ১০-২০ শতাংশের জন্য, যারা শিক্ষকতা, গবেষণা ও নীতিনির্ধারণী কাজ করবেন। অন্যেরা ১০ বা ১২ বছরের বাধ্যতামূলক স্কুলিং শেষে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজে যোগ দেবেন। আমেরিকার মতো দেশে ছাত্রদের ৩৯ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ায় এই সংখ্যাটা ৪২ শতাংশের মতো। অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ভোকেশনাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে। এতে উচ্চশিক্ষার নামে অপ্রয়োজনীয় ও অপছন্দের বিষয় পড়তে গিয়ে অর্থ ও মেধার অপচয় যেমন বন্ধ হবে, তেমনি কম মেধার গ্র্যাজুয়েটদেরও চাকরি না পাওয়া বা নিম্নমানের চাকরি করার কারণে হীনম্মন্যতায় ভুগতে হবে না। দেশের তরুণদের আধুনিক ও কার্যকর কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে আমরা দেশের উন্নতির জন্য যেমন প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি পাবো, তেমনি বিদেশে কাজ করতে গেলেও সেখানে তাদের জন্য সম্মানজনক চাকরি ও বেতন নিশ্চিত হবে।
আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের ‘শিক্ষা কমিশন’ এ বিষয়গুলো বিবেচনা করবে আশা করি।
লেখক : সাবেক সরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা