র্যাব কি পথ হারিয়েছে
- কমোডর জসীম উদ্দীন ভূঁইয়া
- ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০:২৫
দেশের বিভিন্ন জেলায় চাঁদাবাজি, মাস্তানি, খুন, ধর্ষণ, জমি দখল, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ নানা অপরাধমূলক অপকর্ম চরম পর্যায়ে পৌঁছায় তখন ২০০৪ সালে একটি বিশেষায়িত বাহিনী হিসেবে গঠন করা হয় এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব। দেশের অভ্যন্তরীণ অপরাধ দমনের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রধান দায়িত্ব হলো বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর। ঘুষ, দুর্নীতিতে তারা শোচনীয়ভাবে আটকে পড়ায় বিশেষ বাহিনীর চিন্তা করতে হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস, উগ্রবাদ দমন, বিশেষ অস্ত্র অভিযান, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, জনগণকে সুরক্ষার উদ্দেশ্য সফল করতে এটি ছিল বিকল্প পন্থা।
পুলিশের ব্যর্থতা ও অকার্যকারিতায় মূলত সৃষ্টি হয় র্যাব; যাতে করে পুলিশের কার্যক্রম গতিশীল হয়। শুরুতে র্যাবের কার্যক্রম প্রশংসিত হয় এমনকি ক্রসফায়ারের নামে যেসব দাগি সন্ত্রাসী এই বাহিনীর হাতে নিহত হয় তা জনমনে স্বস্তি এনে দেয়। কিন্তু এ বিশেষায়িত বাহিনীর জনপ্রিয়তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। অবশ্য ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজনীতিবিদরা পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে নষ্ট করেছেন, পরবর্তীতে র্যাবকেও তারা একইভাবে ব্যবহার করেছেন।
পুলিশ দুর্নীতিগ্রস্ত কেন হবে না,পুলিশ নিয়োগ দেয়া হতো কারো সুপারিশে বা ১ থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষে এবং পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আসাদুজ্জামান কামাল ৩০-৩৫ লাখ ঘুষে পুলিশের এসআই, সার্জেন্টের চাকরি এবং বদলির জন্য সিন্ডিকেট মাধ্যমে ঘুষ নেয়ার সুযোগ পেতেন (কালের কণ্ঠ ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪)। এমনকি ক্রসফায়ারেও তারা বাণিজ্য করতেন। গত ৪ অক্টোবর ২০২৪ এমন এক খবর প্রকাশিত হয়েছে ভোরের কাগজে, যেখানে উঠে এসেছে কক্সবাজারের টেকনাফে আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের (বরখাস্ত) কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমদ। একইভাবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালও মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন প্রদীপকে বাঁচানোর কথা বলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যাদের তারা ওতপ্রোতভাবে ভয়ঙ্কর অপরাধের সাথে জড়িত। যেখানে অপরাধীদের পুলিশকে ভয় পাওয়ার কথা; সেখানে উল্টো নিরপরাধ সাধারণ মানুষ পুলিশকে ভয় পায়। দেশের আইনশৃঙ্খলার রক্ষক যারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, এসপি, ওসি তারা যখন ভক্ষক হিসেবে নিজেদের নিয়োজিত করেন; মাথায় পচন ধরিয়ে তারা যদি মনে করেন- চোখ, কান বা মুখ ভালো থাকবে তা তো সম্ভব নয়। এর দায়ভার ক্ষমতাসীনদের।
রাজনীতিবিদরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মূল সমস্যার সূত্রপাত করে নিজেরা যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হন; তখন সরকারকে নতুন নতুন উদ্যোগ নিতে হয়। র্যাব গঠনের আগে আমরা দেখেছি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী দিয়ে সরকার অপারেশন ক্লিনহার্ট পরিচালনা করে; যা বিতর্কের সৃষ্টি করলে অবশেষে সরকার তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তারপর পুলিশ বাহিনী দিয়ে র্যাট গঠন করা হয়; যাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কিন্তু যাদের পুলিশ বাহিনী থেকে র্যাটে পাঠানো হতো তারা শারীরিকভাবে যোগ্য ছিলেন না। ছোট্ট র্যাট বাহিনী আইনশৃঙ্খলায় তেমন কোনো উন্নতি করতে পারেনি। নামটিও হাস্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই তৎকালীন সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সেনাবাহিনীকে র্যাটের অন্তর্ভুক্ত করে একটি বাহিনীর কথা ভাবেন, যা পরে র্যাব নামে ছয়টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত হয়। র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় সেনাবাহিনী থেকে। র্যাব গঠন প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পর পর এনএসআই-তে, আমি গোপন তথ্য অনুযায়ী জানতে পারি সশস্ত্রবাহিনী দ্বারা গঠিত র্যাবকে পুলিশ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি এবং তারা সমস্যা তৈরি করবে যাতে র্যাব ব্যর্থ হয়। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ মানতে তারা অনাগ্রহী।
পুলিশ যাতে পরবর্তীতে অসহযোগিতা করতে না পারে তাই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এনএসআই ও এর পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনী থেকে ডিজি নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়, সার্বিক দিক বিবেচনায় যা শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। প্রথম থেকে, পুলিশ অতিরিক্ত ডিজি পদে পুলিশের জন্য মনোনীত দু’টি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারদের পাঠায়নি বরং এসপি পদে পাঠিয়েছিল, যা সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করে। শুরুতে যেহেতু নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী কমান্ড পোস্ট থেকে বঞ্চিত হয় তাই আমি তাদের নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী থেকে নেয়ার উদ্যোগ নেই। পুলিশের পরিবর্তে নৌ এবং বিমানবাহিনী থেকে শূন্যপদ পূরণ করা হয়। বর্তমানে ১৫টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। পুলিশ থেকে ডিজি করলেও র্যাবে কার্যত তার কোনো ভ‚মিকা ছিল না। প্রায় সব কিছু সেনাবাহিনী অর্থাৎ র্যাবের অতিরিক্ত ডিজি দ্বারা পরিচালিত হতো।
র্যাব কাজ শুরুর পর, ধীরে ধীরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। সে সময় আমি নিজে প্রত্যক্ষভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। এনএসআইতে অল্প সময় প্রেষণে কাজ করতে গিয়ে অনুধাবন করেছি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে মূল সমস্যা ঠিক কোথায় ছিল। সে সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির অন্যতম মূল সমস্যা ছিল টাকা দিয়ে ওসিদের বদলি । এর পরপরই যখন র্যাব কার্যক্রম শুরু করে। সে সময়ে র্যাবের সফলতার কারণগুলো যা অনুধাবন করেছি:
১. যারা র্যাবে এসেছিলেন তাদের নিয়োগে, পদোন্নতিতে, বদলিজনিত কারণে কোনো ঘুষ দিতে হয়নি।
২. জবাবদিহি, সততা এবং শৃঙ্খলাবোধ সশস্ত্রবাহিনীর একটি আভিজাত্য। র্যাবে যারা এসেছিলেন তারা সবাই সশস্ত্রবাহিনীর কোনো অফিসারের অধীনে দীর্ঘসময় ছিলেন। ফলে তাদের সৎ এবং কঠোর পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়েছে।
৩. তারা চটপটে এবং সক্রিয় ছিলেন।
৪. র্যাবের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট ছিল যা পুলিশের তথ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। তাই অপরাধীদের কাছে তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি ছিল না। যার কারণে র্যাবের অভিযানের কথা অপরাধীরা আগে থেকে জানতে পারতো না।
৫. র্যাব কর্মকর্তাদের সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের অপরাধীদের কোনো ব্যক্তিগত যোগসূত্র ছিল না।
৬. তারা মন্ত্রীসহ কোনো রাজনীতিবিদের ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা শোনেননি।
৬. র্যাব দেশব্যাপী নিজেদের কার্যক্রমে ছোট বড় সবার কাছে সুনাম অর্জন করতে শুরু করেছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি জনগণকে স্বস্তি দিয়েছে। র্যাবের হাতে কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বা নিরপরাধ মানুষ গুম, হত্যার শিকার হননি বরং র্যাবের সন্ত্রাস দমনে সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপদ মনে করেন।
অন্যদিকে, পুলিশ সব কিছুর জন্য ঘুষ দেয় এবং শেষে তাকে তার বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পেতে হয় যার পরিমাণটা বিশাল। পুলিশকে স্থানীয় সরকারি রাজনীতিবিদদের কাছ থেকেও বেআইনি আদেশ শুনতে হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আমরা একা পুলিশকে দায়ী করতে পারি না। এর জন্য সমান দায় যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসেন।
কোনো কিছু অর্জন করা যত কঠিন, তা ধরে রাখা আরো বেশি কঠিন। র্যাবের ক্ষেত্রে কথাটি একইভাবে প্রযোজ্য। র্যাব কঠোর অধ্যবসায়, সততা, শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে জনমানুষের যে আস্থা, ভরসা অর্জন করেছিল পরবর্তীতে এর থেকে বেশি কঠিনতম কাজ অর্জন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। কাউকে যখন ক্ষমতা ও অর্থের লোভ পেয়ে বসে তখন সে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে, দুর্নীতির চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে। সার্বিক বিবেচনায় র্যাব গঠনের পরপর এনএসআইয়ের পক্ষ থেকে আমি এটি নিশ্চিত করি প্রেষণে কেউ যেন র্যাবে ১-২ বছরের বেশি থাকতে না পারে। দুঃখের বিষয় পরবর্তীতে কঠোরভাবে এটি অনুসরণ করা হয়নি। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি ৬-৭ বছর কেউ কেউ প্রেষণে র্যাবে যুক্ত থেকেছেন। ফলে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি যখন তাদের স্থায়ী কর্মস্থলে ফেরত গিয়েছেন তখন তারা আগের উদ্যম, কর্মক্ষমতা, সততা, শৃঙ্খলাবোধ হারিয়ে ফেলেন।
গঠনের প্রথম দিকে বেশ কয়েক বছর আমরা দেখেছি র্যাব শুধু বিশেষ ধরনের অপরাধ ও পেশাদার অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতো। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, র্যাবও পুলিশের মতো কাজ করেছে। যখন ২০১৫ সাল থেকে বেনজীরকে র্যাবের ডিজি হিসাবে পদায়ন করা হয়; তখন তিনি সরকারের সমর্থনে ধীরে ধীরে সমগ্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন। র্যাবের অতিরিক্ত ডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসানের (যিনি পরে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন) সহযোগিতায় চৌকস এই বাহিনীকে রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হিসেবে মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুমে ব্যবহার করে বলে জানা যায়। গত কয়েক বছরে বেনজীর আহমেদ র্যাব এবং পুলিশের প্রধান থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ মাত্রার দুর্নীতি করেছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
গত কয়েক বছরে যারা নিখোঁজ হয়েছেন তাদের অনেকের পরিবার অভিযোগ করেছে, তাদের স্বজনরা র্যাবের হাতে অপহৃত হয়েছেন। র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নারায়ণগঞ্জে সাত খুন, ক্রসফায়ারে কক্সবাজারের কাউন্সিলর একরামুল হকের মৃত্যু-গুম, হত্যা এসব ঘটনায় র্যাব ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। মোট কথা র্যাব শুধু আদালতের ব্যবস্থা এড়াতে এবং অপরাধ সংঘটনে বিশেষ ক্ষমতা ও সরঞ্জাম ব্যবহার করেনি বরং রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। সরকার যেভাবে র্যাবকে পরিচালিত করেছে, সেভাবে চলেছে। ফলে কিছু র্যাব সদস্যের কার্যকলাপ দেখে সাধারণ মানুষ মনে করেন র্যাব মানে বাংলাদেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে একক একটি গোষ্ঠীর ক্ষমতা ধরে রাখতে,স্বার্থ সিদ্ধিতে এটি তার চূড়ান্ত সীমা ইতোমধ্যে অতিক্রম করে ফেলেছে। তাই একজন সাবেক সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে আমি মনে করি, সামরিক বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা সর্বোপরি ভাবমূর্তি রক্ষার্থে র্যাবকে শুধু পুলিশ কমিশনের মাধ্যমে পুলিশদের দ্বারা গঠত করে এর কার্যক্রম প্রাথমিক পর্যায়ের মতো সীমিত রাখা হোক। সেনাবাহিনীকে পর্যায়ক্রমে তাদের নিজেদের কর্মস্থলে ফেরতের ব্যবস্থা করা হোক, কারণ সিভিল প্রশাসনে থাকলে দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাতে তারা তাদের সামরিক চরিত্র হারায়। তবে অকালীন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার/ সদস্যদের বা অবসর যাওয়ার আগে আগ্রহী সামরিক সদস্যদেরও র্যাবে প্রতিস্থাপন অথবা নিযুক্তি দেয়ার কথা জোরালোভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বাতাস এবং পানির পরে, ‘নিরাপত্তা’ সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, যেটা র্যাবের মতো এলিট ফোর্স জাতিকে দিতে পারে যদি সে তার পথ না হারায়।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত সহকারী নৌবাহিনী প্রধান ও প্রোভিসি, বিইউপি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা