জাতিসঙ্ঘে ড. ইউনূসের সরব উপস্থিতি
- মুহাম্মদ শাহ্ আলম
- ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৪৭
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ ক‚টনৈতিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নতুন যাত্রা শুরু করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার পতিত স্বৈরাচারের অধীনতামূলক তাঁবেদার পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসার কৌশল অবলম্বন করেছে। পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বজায় রেখে সব দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জাপানসহ অনেক দেশ বাংলাদেশের সংস্কার ও উন্নয়ন সহায়তায় আগ্রহ দেখিয়ে কাজ করছে। জাতিসঙ্ঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো), উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), ইউএন এইডস, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএসএআইডি, এডিবি, আইডিবি, জাইকার মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যদিকে সবার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানালেও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এক ধরনের গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে। নরেন্দ্র মোদি একদিকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন; অন্যদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে ড. ইউনূসের সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন। যা থেকে নতুন সরকারের প্রতি ভারতের প্রকৃত মনোভাব কী তা স্পষ্টত অনুমান করা যায়।
বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টের সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নীতি অনুসরণ করবে ভারত। এর কিছুদিন পর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সশস্ত্রবাহিনীর জয়েন্ট কমান্ডারদের সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাসের যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরেন। সামরিক বাহিনীকে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেন। যা প্রচ্ছন্ন হুমকি। গত ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে এক নির্বাচনী জনসভায় বলেন, ঝাড়খন্ডে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারলে প্রত্যেক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে খুঁজে বের করে উল্টো ঝুলিয়ে রাখা হবে। অমিত শাহর এই বক্তব্য স্পষ্টত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় মন্ত্রীর উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিবাদপত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ভারত সরকারের রাজনৈতিক নেতাদের এমন আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে আসা এ ধরনের মন্তব্য দু’টি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মনোভাব ক্ষুণ্ন করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতীয় নেতাদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ গত সাড়ে ১৫ বছরে কল্পনা করা যেত না। তাঁবেদার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টিতে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা একজনের সাথে ফোনালাপে বলেন, তিনি আশপাশে রয়েছেন, চট করে দেশে ঢুকে পড়বেন। বাংলাদেশকে চাপে রাখতে এবং দেশের অভ্যন্তরে অবস্থানরত তার দোসরদের উসকানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে এসব বলার সুযোগ করে দিচ্ছে ভারত। এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কিছু আলামত পরিলক্ষিত হয় সচিবালয়ে আনসারদের কর্মকাণ্ড ও গার্মেন্টস সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারায়।
ভারত সরকারের মনোবাসনা পূরণে ভারতীয় গদি মিডিয়া ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, মন্দিরে আগুন দেয়া ও হিন্দুদের ওপর হামলার ভুয়া ভিডিও দেখিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের খবর অতিরঞ্জন করে প্রতিবেদন এবং তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। বিরামবিহীন উদ্ভট, নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া। দেশটির টিভি টকশোতে বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উসকানিমূলক কথাবার্তা বলতে দেখা যায়। বিশেষ করে শেখ হাসিনা পালানোর পর ভারতের এমন আচরণ বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির করতে নানাভাবে উসকে দিয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। জাতিসঙ্ঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সাইড লাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই বৈঠকের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। কিন্তু ভারতের অনীহায় কাক্সিক্ষত বৈঠক হয়নি। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে বৈঠক না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যস্ততম ও সংক্ষিপ্ত সফরসূচিতে দুই নেতার বৈঠক হয়নি। তাছাড়া অভিন্ন সময়ে তারা নিউ ইয়র্কে অবস্থান করেননি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফর শেষ করে যখন দেশে ফিরেছেন; বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তখন সবে নিউ ইয়র্ক পৌঁছেছেন। ভারতের এ যুক্তি ধোপে টেকে না। কারণ দুই সরকারপ্রধানের বৈঠক নির্ধারিত থাকলে যে কোনো একজনের নিউ ইয়র্কে আসা-যাওয়ার সময়সূচিতে পরির্বতন আনা অসম্ভব ছিল না। বস্তুত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক যাতে না হয়; সে জন্য নয়াদিল্লি এক ধরনের কৌশল নেয়। নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এড়িয়ে কৌশলে ড. ইউনূসকে খাটো করার চেষ্টা করলেও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনে যোগদান মূল আকর্ষণে পরিণত হন।
অধিবেশনে ড. ইউনূসের উপস্থিতিতে বিশ্ব সভার দৃশ্যপট পাল্টে যায়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে ড. ইউনূসের প্রতি। প্রতিবেশী ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় ড. ইউনূসের বক্তব্য। অধিবেশনে ড. ইউনূস কী ভ‚মিকা পালন করেন তা দেখতে বিশ্বনেতারা মুখিয়ে ছিলেন। ফলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের অধিবেশনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক না করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগ্রহ নিয়ে ড. ইউনূসের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণত জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনে তার নির্ধারিত বক্তৃতার দিন সকালে নিউ ইয়র্কে পৌঁছান। যেদিন সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করেন ওই দিন বিকেলে জাতিসঙ্ঘের অধিবেশনে আগত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করেন। তার ভাষণের আগে-পরে, হাঁটা- চলার পথে অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত ছাড়া আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে সাধারণত অংশগ্রহণ করেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে জাতিসঙ্ঘের সদর দফতরে বাইডেন-ইউনূস বৈঠক ছিল ব্যতিক্রমী ঘটনা। শুধু বৈঠক করেননি প্রেসিডেন্ট বাইডেন, ড. ইউনূসের সাথে যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন তা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করার।
জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছাড়াও ড. ইউনূসের সাথে দেখা এবং আলোচনা হয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিলিনা জর্জিভার। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন ও তৎপরবর্তীকালে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবি-সংবলিত ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উপস্থিতিতে ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভের মঞ্চে বক্তব্য দেন ড. ইউনূস। বৈঠক করেন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডিসহ নয়জন মানবাধিকার কর্মকর্তার সাথে। ওই বৈঠকে যোগ দেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাথে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেন বিশ্ব সংস্থার মহাসচিব। বাংলাদেশের সংস্কারে সহায়তা করতে প্রস্তুত বিশ্ব সংস্থা এই বলে আশ্বস্ত করেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক করেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র, সরকারপ্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সাথে। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সঙ্ঘটিত গণহত্যার মামলাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। সংক্ষিপ্ত এই সফরে প্রতিটি মুহূর্ত ব্যস্ততায় কাটান তিনি।
চলতি বছর বাংলাদেশ-জাতিসঙ্ঘ সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন সভা হবে। কাজেই জাতিসঙ্ঘের এই অধিবেশনের গুরুত্ব অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আলাদা। পরে নির্ধারিত সময়ে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বাংলাদেশে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে প্রেরণা জোগাবে বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের তরুণরা কিভাবে একজন দাম্ভিক, একগুঁয়ে, অহঙ্কারী ও দুর্নীতিবাজ স্বৈরশাসককে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।
উপস্থাপন করেন জলবায়ুগত পরিবর্তনে বাংলাদেশ কিভাবে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়- জলোচ্ছ¡াস এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের কৃষকদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন তিনি। স্বপ্ন দেখিয়েছেন সোস্যাল বিজনেস, থ্রি-জিরো পৃথিবী গড়ার।
তরুণদের কর্মসংস্থান, বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সংস্কারের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের প্রয়োগের মাধ্যমে নিজের প্রতিনিধি নির্বাচনের নিশ্চয়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন।
ইসরাইল যুদ্ধে নির্বিচারে ফিলিস্তিন নারী শিশুকে হত্যা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে বিভিন্ন দেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, মর্যাদা ও স্বার্থ সংরক্ষণের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সব রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। বস্তুত আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে বিশ্বের সব দেশের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তি, টেকসই উন্নয়ন, মানবিক মর্যাদা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধনে একসাথে কাজ করতে আগ্রহী। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে দক্ষিণ এশিয়ার দারিদ্র্য দূরীকরণে একসাথে কাজ করতে চাই, বলেন ড. ইউনূস।
লেখক : আইনজীবী
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা