২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ইসলামিক ব্যাংকিং ও বীমা

শরিয়াহ কমিটির কাছে প্রত্যাশা

- প্রতীকী ছবি

বিশ্বব্যাপী ইসলামিক অর্থব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে। অনেকের ধারণা, প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অধিকতর শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত, অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবেলায় অধিকতর সক্ষম ও দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর। এমনটা মনে করার কারণ, যে শরিয়াহভিত্তিক নিয়মনীতি পরিপালনের বাধ্যবাধকতার ফলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যক্তি, সমাজ ও অর্থব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকারক বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হয়, প্রকৃত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত হতে হয়, গ্রাহকদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হয় ও আর্থিক কারবারে দায়িত্বশীল হতে হয়। যেকোনো ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এই পরিপালন নিশ্চিতের চূড়ান্ত দায় বহন করে পরিচালনা পর্ষদ ও তত্ত্বাবধানে থাকে শরিয়াহ কমিটি।

শরিয়াহ কমিটি প্রতিটি ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গভর্ন্যান্স কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই কমিটিগুলো মূলত সমাজে সম্মানিত উলামায়ে কেরামদের নিয়ে গঠিত। তাদের তত্ত্ববধানে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে শরিয়াহ বিধিবিধান সম্পূর্ণ পালিত হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার। আর যদি বিচ্যুতি থাকে তাহলে তা তাদের মাধ্যমে সমাধা হবে বা প্রকাশিত হবে। বাস্তবে দেখা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বিভিন্ন সময় অনিয়ম ও শরিয়াহ বিচ্যুতির অভিযোগ সংবাদ মাধ্যমে ও সামাজিক আলোচনায় আসে। কিন্তু শরিয়াহ কমিটির তরফ থেকে সেসব বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। বিশেষত বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ইসলামিক ব্যাংকগুলোতে লুটপাটের মহোৎসব চলার খবর একের পর এক প্রকাশ পাওয়ার পরও শরিয়াহ কমিটিগুলো সেসব বিষয়ে পূর্ণ নীরবতা পালন করেছে। যার ফলে জনমনে স্বাভাবিক প্রশ্ন সৃষ্টি হয় যে, শরিয়াহ কমিটিগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কি না। এমনকি অনেকে তাদের যোগ্যতা ও স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এই বাস্তবতায় অনেকে ইসলামিক ও প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য দেখেন না। অনেকে মনে করেন, ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অধিকতর খারাপ, যেহেতু তারা শরিয়াহ পরিপালনের নামে ‘প্রতারণা’ করছে। আর অনেকে আছেন যারা ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহ পরিপালন বিষয়ে একটি সন্দেহমূলক মনোভাব পোষণ করলেও এতে জড়িত হচ্ছেন অধিকতর ভালো বিকল্পের অভাবে, একটি মানসিক অস্বস্তি নিয়ে। তবে অবশ্য এমন অভিজ্ঞতাও আছে যেখানে কর্মী ও সাধারণ মানুষ পর্যায়ে এমন বিষয়কে শরিয়াহ সম্মত নয় হিসেবে দাবি করা হয়, যা বাস্তবে হয়তো শরিয়াহসম্মত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইসলামিক ব্যাংকিং বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের ৩০%-এর কাছাকাছি প্রতিনিধিত্ব করছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মূল্যায়ন অনুযায়ী ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশে ‘সিস্টেমিক ইম্পর্টেন্স’ অর্জন করেছে। অর্থাৎ, ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুস্থতা সরাসরি জড়িত। আর ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বোর্ডের (আইএফএসবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের বীমা খাতের ১৪% প্রতিনিধিত্ব করছে ইসলামিক বীমা। উভয়ই ক্রমবর্ধমান। এমন একটি বাস্তবতায় দেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের পূর্ণ আস্থা সৃষ্টির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অতি জরুরি। অন্যথায় নানাবিধ সমালোচনা ডালপালা ছড়ানোর সুযোগ পেতে থাকবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনীতির জন্য হবে ক্ষতিকর। আর শরিয়াহ পরিপালনে যদি দুর্বলতা থেকে থাকে তাহলে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাঙ্খিত গুণগত লক্ষ্য অর্জনেও ব্যর্থ হবে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন সংগঠন ও একাডেমিয়াতে নির্মোহ পর্যালোচনা প্রয়োজন যে বাংলাদেশের বাস্তবতায় শরিয়াহ কমিটিগুলো আসলে কী ধরনের দায়িত্ব পালন করছে, আন্তর্জাতিক মানের বিপরীতে তাদের কী ধরনের দায়িত্ব পালন করা উচিত, সেসব দায়িত্ব পালনে তাদের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও ক্ষমতা আছে কি না, প্রত্যাশিত দায়িত্ব পালনে তারা কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন, দায়িত্ব পালনের যতটুকু সুযোগ আছে সেগুলো তারা কাজে লাগাচ্ছে কি না এবং জনমনে আস্থা সৃষ্টিতে কোথায় কোথায় উন্নতি করা প্রয়োজন।

শরিয়াহ কমিটির দায়িত্ব নির্ধারণে প্রথমে চিহ্নিত করা প্রয়োজন গভর্ন্যান্স কাঠামোতে শরিয়াহ কমিটির অবস্থান কোথায়। ধারণাগত দিক থেকে শরিয়াহ কমিটি স্বতন্ত্র পরিচালক ও বহিঃনিরীক্ষকের ভ‚মিকার সমন্বয়ে একটি ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন দেশের চর্চা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, শরিয়াহ কমিটিকে সাধারণত পরিচালনা পর্ষদের সমকক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিছু দেশে পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশের ভিত্তিতে শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের নিয়োগ দেয় শেয়ারহোল্ডাররা (যেমন, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান) এবং অন্যান্য দেশে তাদের নিয়োগ দেয় পরিচালনা পর্ষদ (যেমন, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান)। কিছু দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত থাকে। যেমন, মালয়েশিয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক শরিয়াহ কমিটি সদস্য নিয়োগ অনুমোদনের আগে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তাবিত সদস্যের জ্ঞান-দক্ষতা যাচাই করে।

বাংলাদেশে শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের নিয়োগ দেয় পরিচালনা পর্ষদ। শেয়ারহোল্ডাররা এতে কোনো ভ‚মিকা রাখে না। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নিয়োগ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় যদিও যুক্ত হয়েছে, তাদের ইসলামিক ব্যাংকিং নির্দেশিকায় শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের ন্যূনতম যোগ্যতার যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা আধুনিক ও পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে পর্যাপ্ত নয়। এ ছাড়া শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের নিয়োগে তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে বাস্তবে অনুমোদন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রভাব ও অনুমোদনকারী কর্মকর্তার মর্জির ওপর নির্ভর করে। অন্যদিকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ক কোনো নীতিমালা নেই এবং তারা অনুমোদন প্রক্রিয়াতে কোনোভাবে জড়িত নয়।

বাংলাদেশে যদিও সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে শরিয়াহ কমিটিকে পরিচালনা পর্ষদের পাশে উপস্থাপন করে তাদের সমকক্ষতার একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু বাস্তবে এই সমকক্ষতা কতটুকু আলঙ্কারিক বা লোক দেখানো ও কতটুকু কার্যত তা একটি বড় প্রশ্ন। যেমন শরিয়াহ কমিটির যে কোনো সদস্যকে পরিচালনা পর্ষদ চাইলে কোনো ধরনের কারণ না দেখিয়ে বাদ দিয়ে দিতে পারে। শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের মতামত পরিপালনের আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা তাদের উপর নাই বা পরিপালন না করলে তাদের কোনো জবাবদিহির বিধান নাই। ফলে প্রশ্ন থাকে যে, শরিয়াহ কমিটি কি সত্যি তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করছে নাকি নিছক পরামর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া বার্ষিক প্রতিবেদনে যেখানে পর্ষদ সদস্যদের ছবি ও প্রোফাইল গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করা হয়, শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের কেবল নাম উল্লেখ থাকে, প্রোফাইল ছাড়া। অনেক সময় শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের ছবি থাকে না বা থাকলে তা সাধারণত পর্ষদ সদস্যদের মতো গুরুত্বের সাথে থাকে না। একই রকমভাবে যেখানে পরিচালনা পর্ষদ, নিরীক্ষা কমিটি, ঝুঁকি কমিটি, ইত্যাদির প্রতিবেদন সাধারণত থাকে তথ্যবহুল ও কয়েক পৃষ্ঠাজুড়ে, শরিয়াহ কমিটির প্রতিবেদন থাকে সাধারণত এক পৃষ্ঠার মধ্যে ও গতানুগতিক বক্তব্যনির্ভর। এই সব মিলে শরিয়াহ কমিটির বাস্তব মর্যাদা ও গুরুত্ব নিয়ে একটি প্রশ্ন সৃষ্টি হয়।

শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের ইসলামিক অর্থব্যবস্থা বিষয়ে প্রাসঙ্গিক যোগ্যতা আছে কি না তা প্রায় কোনো ক্ষেত্রে প্রকাশিত সূত্র থেকে জানা যায় না। তাদের প্রাসঙ্গিক যোগ্যতা উন্নয়নে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বছরব্যাপী কী ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেসব তথ্য কোনো প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে না। শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও অবদান মূল্যায়নের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় শোনা যায় যে কমিটির কার্যক্রমে কোনো অবদান না রেখেও কোনো কোনো সদস্য বছরের পর বছর কমিটির সদস্য হিসেবে থাকছেন।

একই রকমভাবে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইট ও বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে তাদের শরিয়াহ কমিটিগুলোর কার্যক্রম বিষয়ে তেমন কোনো নিশ্চয়তামূলক তথ্য পাওয়া যায় না। কদাচিৎ কিছু পাওয়া গেলেও তা গৎবাঁধা ধরনের। বার্ষিক প্রতিবেদনে শরিয়াহ কমিটির সাধারণত মাত্র এক পৃষ্ঠার যে প্রতিবেদনটি পাওয়া যায় তাতে বর্ণিত বিষয়গুলো বহুলাংশে গতানুগতিক, কখনো অস্পষ্ট ও সামগ্রিক বিবেচনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

এই নিবন্ধের সংক্ষিপ্ত পরিসরে কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। যেমন- প্রতিবেদনে হয়তো একবার বলা হচ্ছে যে শরিয়াহ কমিটি সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করেছে, কিন্তু আবার বলা হচ্ছে, তারা কেবল শরিয়াহ নিরীক্ষকের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মত দিচ্ছেন। শরিয়াহ কমিটি স্বাধীনভাবে নিজে পর্যালোচনা করা ও পর্যালোচনায় প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত নিরীক্ষকের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করার মধ্যে স্বাভাবিক পার্থক্য বিদ্যমান। এমনও আছে যে হয়তো বছরের পর বছর একই পরামর্শ শরিয়াহ কমিটি ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দিচ্ছেন, কিন্তু এক বছর থেকে অন্য বছরে এই পরামর্শের বাস্তবায়ন কেমন হচ্ছে সে ধরনের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রতিবেদনে অনুপস্থিত। এমন উদাহরণও আছে যেখানে শরিয়াহ কমিটি কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিয়ে বলেছে যে ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি শরিয়াহ পরিপালনে ‘যথাসাধ্য’ চেষ্টা করেছে। পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকগুলো ব্যতীত কিছু ক্ষেত্রে এমনো আছে যে শরিয়াহ কমিটির প্রতিবেদন বার্ষিক প্রতিবেদনে অনুপস্থিত।

ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব সেবা প্রদান করছে সেগুলোর শরিয়াহভিত্তিক কাঠামো ও ব্যাখ্যা প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে অনুপস্থিত। শরিয়াহ কমিটি বছরজুড়ে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারও কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় না। যদিও অল্প কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংক শরিয়াহ সিদ্ধান্তগুলো বই আকারে প্রকাশ করেছে, সেগুলোর প্রাপ্তি সহজ নয়। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে এমন গুরুতর অভিযোগ শোনা গেছে যে, শরিয়াহ কমিটির যথাযথ অনুমোদন ছাড়া ইসলামিক আর্থিক সেবা বাজারে ছাড়া হয়েছে। বছরজুড়ে শরিয়াহ কমিটির পর্যাপ্ত মিটিং না হওয়া, মিটিং কার্যকর না হওয়া, মিটিংয়ের মিনিটস যথাযথ সংরক্ষণ না করা, সিদ্ধান্তগুলো সংশ্লিষ্টদের অবহিত না করা ইত্যাদি বিভিন্ন অভিযোগও বিদ্যমান। অভিযোগগুলো সত্যি কি না তা নিরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।

ইসলামিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য শরিয়াহ পরিপালন নিশ্চিত করা যথেষ্ট নয়, নিশ্চয়তা প্রদানেরও পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে নিশ্চয়তা প্রদানের উদ্যোগে ব্যাপক ঘাটতি বিদ্যমান। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক গভর্ন্যান্স কাঠামোতে শরিয়াহ কমিটির অবস্থান ও ক্ষমতা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। শরিয়াহ কমিটির দায়-দায়িত্ব ও কার্যপ্রণালী আন্তর্জাতিক মান ও চর্চার আলোকে প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। শরিয়াহ কমিটি সদস্যদের সক্ষমতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিদ্যমান শরিয়াহ কমিটিগুলো সামষ্টিকভাবে ও সদস্যরা ব্যক্তিপর্যায়ে যথাযথ ভ‚মিকা রাখতে পারছেন কি না তা যাচাই করা প্রয়োজন ও কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা দরকার কি না তা বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। শরিয়াহ কমিটির প্রতিবেদনগুলোর মানে ও ডিসক্লোজার চর্চায় ব্যাপক উন্নতি আনা প্রয়োজন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা না করে ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব উদ্যোগে শরিয়াহ পরিপালন নিশ্চিতকরণে ও নিশ্চয়তা প্রদানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে পারে।

লেখক: মালয়েশিয়ার একটি ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো
ই-মেল: mezbah.u.ahmed@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement

সকল