২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

মিয়ানমারে বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু ২০০ ছাড়িয়েছে

গৃহযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির মধ্যে দেশটির বড় অংশজুড়ে বন্যার ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট আরো গভীর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে
-

টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে মিয়ানমারজুড়ে ব্যাপক বন্যায় মৃতের সংখ্যা দুই শতাধিক ছাড়িয়েছে। আরো প্রায় ৮০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। টাইফুনের প্রভাবে মিয়ানমারের বিভিন্ন গ্রামে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ২২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে উত্তর ভিয়েতনাম, লাওস, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ঝড় এখন পর্যন্ত ওই অঞ্চলের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ঝড়ে লাখ লাখ একর জমির ফসল ধ্বংস হওয়ায় জাতিসঙ্ঘ সতর্ক করে বলেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যের পাশাপাশি খাবার পানি, আশ্রয় ও বস্ত্র প্রয়োজন।
জাতিসঙ্ঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে হওয়া বৃষ্টিতে রাজধানী নেপিদোর পাশাপাশি মান্দালয়, মাগওয়ে ও বাগো অঞ্চলসহ পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্য, মন, কায়াহ ও কায়িন রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হওয়া সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে অশান্তি বিরাজ করছে। দেশটির বিশাল অংশজুড়ে সহিংসতা চলছে। গৃহযুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকায় দেশটির অর্থনীতির আকার সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।

এখন দেশটির বড় একটি অংশজুড়ে বন্যার ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট আরো গভীর হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো এবং টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় হতাহতের তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
জাতিসঙ্ঘ বলেছে, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এবারের বন্যা সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বন্যায় প্রায় ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে, সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যোগাযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার কারণে ত্রাণ তৎপরতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর একটি শান রাজ্যসহ দেশের অনেক অংশে ত্রাণ সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকার নেই বললেই চলে।
একজন উদ্ধারকারী বিবিসি বার্মিজকে জানিয়েছেন, ভূমিধসে অনেক বাড়িঘর চাপা পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা এ পর্যন্ত শিশু ও বৃদ্ধসহ শতাধিক মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যের এক বাসিন্দা বলেন, এই বন্যা আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ।

 


আরো সংবাদ



premium cement