ওয়াশিংটনে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন শুরু আজ
- এএফপি
- ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে কয়েক মাস আগে। আজ মঙ্গলবার জোটের ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে ওয়াশিংটনে। তিন দিনের এ সম্মেলনে অংশ নেবেন ৩২ সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা। এ সম্মেলনে ন্যাটোকে একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী জোট হিসেবে দেখানোই উদ্দেশ্য। তবে এমন সময় জোটের নেতারা ওয়াশিংটনে জড়ো হচ্ছেন, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হোঁচট খাওয়া এবং আটলান্টিকের উভয় পাশে মধ্যপন্থী ও উগ্র ডানপন্থীদের মধ্যে নির্বাচনী ঝড়ও তাদের সঙ্গী হয়েছে।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রথম বিতর্কে বিপর্যয়কর ফলের পর নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে লড়ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ন্যাটো জোটের প্রতি ট্রাম্পের অঙ্গীকার নিয়ে মিত্রদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আপাতত বাইডেন নির্বাচনী প্রচার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের স্বাগত জানাবেন। উদীয়মান চীনের প্রভাব ঠেকাতে এশিয়ায় ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান ভূমিকার গুরুত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স এবং স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কূটনীতিক ও বিশ্ব নেতারা। উত্তর আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগ মুহূর্তে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন সামরিক সংস্থাটির সদস্যরা। তারা মনে করেন, আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে হলে বাইডেনকে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত এবং শক্তিশালী।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য পলিটিকোর মতে, ন্যাটো মিত্ররা বাইডেনকে তার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখতে চান। তবে তারা আসন্ন নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্টকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বাইডেনের বিষয়ে ন্যাটোর একজন ইউরোপীয় কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের যথেষ্ট বয়স হয়েছে, যেটা বুঝতে আপনাকে জিনিয়াস হতে হবে না। আমরা নিশ্চিত নই, ভোটে জয়ী হলেও তিনি আরো চার বছর বেঁচে থাকবেন কি না।’
ন্যাটোর আরেক ইইউ কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা সবাই চাই যে বাইডেন আবারো ট্রাম্পকে হারিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসুক। তবে এটি সত্যিই আশ্বস্তকর বিষয় নয়।’ তা সত্ত্বেও ন্যাটো মিত্ররা উদ্বিগ্ন যে বাইডেন কতক্ষণ ইউরোপীয় প্রতিরক্ষার জন্য মার্কিন সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারবেন। যেহেতু ট্রাম্প অন্যান্য দেশের জন্য সমর্থন বাড়ানোর বিষয়ে সন্দিহান। প্রথম বিতর্কের পর ন্যাটোভুক্ত দেশের একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কে আরো আলাপ-আলোচনা করছি, কারণ দেখে মনে হচ্ছে ট্রাম্প আবার ফিরে আসছেন!’
এত সব উদ্বেগ সত্ত্বেও, যদিও অনেক মিত্র ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনকেই পছন্দ করেন, তবে বয়সের কারণে বাইডেনের দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনা সম্পর্কেও আবার অনিশ্চিত তারা। এ দিকে সম্মেলনে নজর থাকবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর। তিনি জোটের পক্ষ থেকে দৃঢ় সমর্থনের অপেক্ষায় আছেন। যদিও এবারো ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।
সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সামষ্টিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ন্যাটো সামরিক জোটের। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এরপর কিয়েভের পক্ষে দাঁড়ায় ন্যাটোর মিত্ররা। এর মাধ্যমে ন্যাটো মূলত জোটটির প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্যেই ফিরে গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা