১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চাসিভ ইয়ার শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর শঙ্কায় ইউক্রেন

জাপোরিঝিয়া ও লভিভে ব্যাপক রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ অবকাঠামো
-

পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর চাসিভ ইয়ার চারপাশে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। শহরটিকে রক্ষা করতে নিয়োজিত ইউক্রেনীয় সামরিক ইউনিট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের ২৪তম যান্ত্রিক ব্রিগেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদেরকে চাসিভ ইয়ার শহরে পাঠানো হয়েছে। কারণ রাশিয়া সেখানে তুমুল আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।

পৃথকভাবে, দোনেৎস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সেলিডোদের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান হামলায় দু’জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। আঞ্চলিক গভর্নর ওই অঞ্চল থেকে লোকজনদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আরো জানায়, চাসিভ ইয়ার শহর ও এর আশপাশের পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। রাশিয়া ক্রমাগত সামনের দিকে এগোচ্ছে ও ব্যাপক সম্মুখ আক্রমণ করছে।
চাসিভ ইয়ার শহরটি বাখমুতের পশ্চিমে অবস্থিত ও এর কাছাকাছি আভদিভকা শহর। আভদিভকা শহরটিতে গত এক দশক ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। শহরটি রাশিয়ার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০১৪ সালে শহরটির কিছু অংশ মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দখলে নিয়েছিল। কিন্তু পরে ইউক্রেনীয় সেনারা সেটার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারিতে মস্কো আবারো শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

এর আগে রুশ ভূখণ্ড ও ক্রাইমিয়ার আকাশ থেকে রাতভর ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করার কথা জানায় মস্কো। এতে রাশিয়ায় একজন নিহত হওয়ারও খবর পাওয়া যায়। এর পরপরই মূলত চাসিভ ইয়ার শহর রক্ষায় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর ২৪তম যান্ত্রিক ব্রিগেডকে নতুন করে মোতায়েন করা হয়।
সম্প্রতি রুশ বাহিনী চাসিভ ইয়ারকে তাদের হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। যুদ্ধ শুরুর আগে পাহাড়ি এই শহরটিতে প্রায় ১২ হাজার মানুষ বসবাস করত। ধারণা করা হচ্ছে, এই শহরের নিয়ন্ত্রণ হারালে দনবাসের ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য শহর আরো বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। শহরগুলো তখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যার (আইএসডব্লিউ) জানিয়েছে, রাশিয়া চাসিভ ইয়ার শহরটি দখল করে ফেললে, এই অঞ্চলের অন্যান্য শহর বিশেষ করে, কোস্তন্তিনিভকা ও দ্রুজকিভকা শহরে অভিযান চালানো আরো সহজ হয়ে যাবে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, এরই মধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে চাসিভ ইয়ার ও ক্লিশ্চিভিকা শহরে তিন দফায় ঢোকার চেষ্টা করেছে রুশ বাহিনী।

বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা
রাশিয়া পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে শুক্রবার রাতে ‘ব্যাপক’ হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, হামলায় ‘জাপোরিঝিয়া এবং লভিভ অঞ্চলে (অপারেটর) ইউক্রেনারগোর (পরিচালনা সংস্থা) অবকাঠামোর সরঞ্জামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ এতে দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন এবং তাদের জাপোরিঝিয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যেকোনো জায়গায় হামলার অনুমতি
এ দিকে যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে রাশিয়ার যেকোনো জায়গায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে মার্কিন অস্ত্রে ইউক্রেনের হামলা এখন শুধু আর খারকিভ এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে জানিয়েছে, মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি ও পলিটিকোর। নাম প্রকাশে একটি সূত্র দাবি করেছে, আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনকে সরবরাহ করা অস্ত্রের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের অনুসৃত নীতির কোনো পরিবর্তন নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement